ঢাকা ১১:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লক্ষ্মীপুর মেঘনার ভাঙ্গনে দিশেহারা উপকূলীয় এলাকার মানুষ, দ্রুত সময়ের মধ্যে টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবী।

মাহমুদুর রহমান মনজু, স্টাফ রিপোর্টার :
কমলনগরে মেঘনার ভাঙ্গনে ভিটেমাটি সহ সবকিছু হারিয়েছেন অনেকে। তাদের মধ্যে কালকিনি ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ দেলোয়ার হোসেন(৮৫) নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়েছেন এই পর্যন্ত ১২বার। তার ১ হজার দুইশত ৮o শতাংশ জমি ছিল। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা। তার সাত মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে ছেলেরা সবাই জেলে। পড়াশোনা করাতে পারেন নি টাকা পয়সার অভাবে। দেলোয়ার হোসেন থাকেন এখন অন্য জায়গায়। সেখানেও আর দুই এক মাস থাকতে পারবেন তাও ভাঙ্গনের শিকার হতে পারেন।

কালকিনি ১ নং ওয়ার্ডের আরেক বাসিন্দা আব্দুল মালেক মোল্লা (৭৫)। তিনি মেঘনার ভয়াবহ ভাঙ্গনের শিকার হয়েছেন ৬ বার। তার ২ হাজার দুই শত ৪০ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন তা কেঁড়ে নিয়েছো ভয়াবহ মেঘনার ভাংগনে। ফসলি জমি ঘর বাড়ি সবই হারিয়েছেন মেঘনার ভাঙ্গনে। যে জমি হারিয়েছে তার আনুমানিক বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা।তার চার ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।আর্থিক টানা পড়নের কারনে কাউকে পড়াশোনা করতে পারেন নি। থাকেন পরের জায়গা। তিনি আক্ষেপ করে বলেন সবকিছু হারিয়েছি ভয়াবহ মেঘনায়। যদি মৃত্যুর আগে অন্তত নদী বাঁধ দেখে যেতে পারতাম তো নিজেকে ধন্য মনে করতাম। ২নং সাহেবেরহাট ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সিদ্দিক মাতাব্বর জানান তার ৮ হজার শতাংশ জমি ছিল। মেঘনার ভাঙ্গনে ঘরবাড়ি ফসলি জমি ভাঙ্গনের শিকার হয়েছেন, তিনি এখন তিনি এখন একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করেন, ছেলেমেয়েদেরকে অনেক কষ্টে তিনি পড়াশোনা করিয়েছেন। মেঘনার ভাঙ্গনে তিনি যে জমি হারিয়েছেন তার বর্তমান আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ১৪ কোটি টাকা। সিদ্দিক মাতাব্বর সাহেবেরহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তিনি জানান, সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তিনি, চান যেন দ্রুত প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দকৃত ৩১০০ কোটি টাকার বাঁধ নির্মাণ করা হয়।

কালকিনি ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইয়ার আহমেদ পাটোয়ারী মেঘনার ভাঙ্গনে সববই হারিয়েছেন । তিনি থাকেন এখন অন্যার আশ্রায়নে। তিনি ৪ হাজার ৮ শত শতাংশ জমির মালিক ছিলেন।বর্তমানে তিনি সহ তার ছেলেরা থাকেন অন্যার জায়গায়।মেঘনার ভাঙ্গনের ফলে যে জমি হারিয়েছেন তার বর্তমান বাজার মুল্যে প্রায় ১০ কোটি টাকা। তারও দাবি বাঁধ যেন নির্মাণ টা দেখে যেতে পারে। সাহেবেরহাট ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের আরেক বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন মাতাব্বর(৭০)। তার ২ হজার ৫শত শতাংশ জমি ছিল।যার আনুমানিক বর্তমান বাজার মূল্য ৭ কোটি টাকা এখন তিনি থাকেন অন্য জায়গায়। তার সকল জায়গা জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সব হারিয়েছেন। আমি এত সম্পত্তির মালিক থাকার পরেও মেঘনা নদীতে বিলীন হওয়ার পরে এখন থাকে শশুরের জায়গায়। যেখানে ভাঙ্গার সম্ভাবনা রয়েছে মেঘনায়, এখন অনেক সময় না খেয়ে থাকেন, সাহায্য চান অনেক সময়। ভাংগনের শিকার সকলের একটাই দাবি যেন নদী বাঁধ টা যেন টেকসই ভাবে নির্মাণ করা হয়।

১ নং চর কালকিনি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ সাইফুল্লাহ জানান, কমলনগরের সবচাইতে ভয়াবহ সমস্যা মেঘনা নদী ভাঙ্গন। যদি এই ভাঙ্গন রোধ এবং সমস্যার সমাধান করা না যায় তাহলে মানচিত্র থেকে কমলনগরে উপজেলা বিলীন হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী মেঘনায় ভাঙ্গনরোধে যে প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছেন তা অতি দ্রুত বাস্তবায়ন করে একটি টেকসই বাঁধ নির্মাণ করার অনুরোধ জানান।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

লক্ষ্মীপুরের উত্তরচরবংশী ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কমিটির বিলুপ্ত  

লক্ষ্মীপুর মেঘনার ভাঙ্গনে দিশেহারা উপকূলীয় এলাকার মানুষ, দ্রুত সময়ের মধ্যে টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবী।

আপডেট : ১২:১৫:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ অক্টোবর ২০২২

মাহমুদুর রহমান মনজু, স্টাফ রিপোর্টার :
কমলনগরে মেঘনার ভাঙ্গনে ভিটেমাটি সহ সবকিছু হারিয়েছেন অনেকে। তাদের মধ্যে কালকিনি ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ দেলোয়ার হোসেন(৮৫) নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়েছেন এই পর্যন্ত ১২বার। তার ১ হজার দুইশত ৮o শতাংশ জমি ছিল। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা। তার সাত মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে ছেলেরা সবাই জেলে। পড়াশোনা করাতে পারেন নি টাকা পয়সার অভাবে। দেলোয়ার হোসেন থাকেন এখন অন্য জায়গায়। সেখানেও আর দুই এক মাস থাকতে পারবেন তাও ভাঙ্গনের শিকার হতে পারেন।

কালকিনি ১ নং ওয়ার্ডের আরেক বাসিন্দা আব্দুল মালেক মোল্লা (৭৫)। তিনি মেঘনার ভয়াবহ ভাঙ্গনের শিকার হয়েছেন ৬ বার। তার ২ হাজার দুই শত ৪০ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন তা কেঁড়ে নিয়েছো ভয়াবহ মেঘনার ভাংগনে। ফসলি জমি ঘর বাড়ি সবই হারিয়েছেন মেঘনার ভাঙ্গনে। যে জমি হারিয়েছে তার আনুমানিক বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা।তার চার ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।আর্থিক টানা পড়নের কারনে কাউকে পড়াশোনা করতে পারেন নি। থাকেন পরের জায়গা। তিনি আক্ষেপ করে বলেন সবকিছু হারিয়েছি ভয়াবহ মেঘনায়। যদি মৃত্যুর আগে অন্তত নদী বাঁধ দেখে যেতে পারতাম তো নিজেকে ধন্য মনে করতাম। ২নং সাহেবেরহাট ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সিদ্দিক মাতাব্বর জানান তার ৮ হজার শতাংশ জমি ছিল। মেঘনার ভাঙ্গনে ঘরবাড়ি ফসলি জমি ভাঙ্গনের শিকার হয়েছেন, তিনি এখন তিনি এখন একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করেন, ছেলেমেয়েদেরকে অনেক কষ্টে তিনি পড়াশোনা করিয়েছেন। মেঘনার ভাঙ্গনে তিনি যে জমি হারিয়েছেন তার বর্তমান আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ১৪ কোটি টাকা। সিদ্দিক মাতাব্বর সাহেবেরহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তিনি জানান, সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তিনি, চান যেন দ্রুত প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দকৃত ৩১০০ কোটি টাকার বাঁধ নির্মাণ করা হয়।

কালকিনি ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইয়ার আহমেদ পাটোয়ারী মেঘনার ভাঙ্গনে সববই হারিয়েছেন । তিনি থাকেন এখন অন্যার আশ্রায়নে। তিনি ৪ হাজার ৮ শত শতাংশ জমির মালিক ছিলেন।বর্তমানে তিনি সহ তার ছেলেরা থাকেন অন্যার জায়গায়।মেঘনার ভাঙ্গনের ফলে যে জমি হারিয়েছেন তার বর্তমান বাজার মুল্যে প্রায় ১০ কোটি টাকা। তারও দাবি বাঁধ যেন নির্মাণ টা দেখে যেতে পারে। সাহেবেরহাট ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের আরেক বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন মাতাব্বর(৭০)। তার ২ হজার ৫শত শতাংশ জমি ছিল।যার আনুমানিক বর্তমান বাজার মূল্য ৭ কোটি টাকা এখন তিনি থাকেন অন্য জায়গায়। তার সকল জায়গা জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সব হারিয়েছেন। আমি এত সম্পত্তির মালিক থাকার পরেও মেঘনা নদীতে বিলীন হওয়ার পরে এখন থাকে শশুরের জায়গায়। যেখানে ভাঙ্গার সম্ভাবনা রয়েছে মেঘনায়, এখন অনেক সময় না খেয়ে থাকেন, সাহায্য চান অনেক সময়। ভাংগনের শিকার সকলের একটাই দাবি যেন নদী বাঁধ টা যেন টেকসই ভাবে নির্মাণ করা হয়।

১ নং চর কালকিনি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ সাইফুল্লাহ জানান, কমলনগরের সবচাইতে ভয়াবহ সমস্যা মেঘনা নদী ভাঙ্গন। যদি এই ভাঙ্গন রোধ এবং সমস্যার সমাধান করা না যায় তাহলে মানচিত্র থেকে কমলনগরে উপজেলা বিলীন হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী মেঘনায় ভাঙ্গনরোধে যে প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছেন তা অতি দ্রুত বাস্তবায়ন করে একটি টেকসই বাঁধ নির্মাণ করার অনুরোধ জানান।