লক্ষ্মীপুর জেলার স্টেডিয়ামের বেহাল দশা, দেখার যেন কেউ নেই
এভাবে আর কতদিন চললে জেলা স্টেডিয়ামের ঘাস গুলো ছোট হবে! বলছি লক্ষ্মীপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার কথা। দিনের পর দিন অবহেলিত একটা জায়গা। ২০০৫/২০০৬ সালের পর আর কোনো নির্বাচন হয়নি এই সংস্থায়। যদিও নিয়ম বলছে দায়িত্ব প্রাপ্ত দু একটি পদাধিকার ছাড়া বাকি সবাইকে নির্বাচিত হতে হবে । টানা কয়েকদিনের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সুফলে গত ৫ই আগষ্টের পর দেশ পুনর্গঠন হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২১ শে আগষ্ট দেশের সকল জেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটি একযোগে বিলুপ্ত ঘোষণা করে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। ঠিক এক সপ্তাহ পরে গত ২৭ আগষ্ট যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে এডহক কমিটি গঠনের একটি রুপরেখা দেয়া হয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে ভিন্ন।
জাতীয় দলের হাসান মাহমুদ কিংবা এইচপির নোমান চৌধুরী সাগর, আহমেদ শরীফ, অনুর্ধ্ব ১৯ জাতীয় দলের মাজহারুল হক রুপমের মত সাফল্য থাকা সত্ত্বেও এই জেলা ক্রীড়া সংস্থায় এখনো কোনো কমিটি বা এই সংক্রান্ত কার্যক্রমের কোনো অগ্রগতি নেই। কমিটি না থাকার কারণে এদিকে জেলা ক্রীড়া সংস্থায় কর্মরত কোচ স্টাফদের প্রায় তিন মাসের বেতন বন্ধ। কোনো আয়োজন বিহীন জেলা স্টেডিয়াম রয়েছে প্রাণচঞ্চলহীনতা। মাঠের পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ। বড় বড় ঘাস আর আউট ফিল্ডের জরাজীর্ণ অবস্থা।
লোকবল সংকটের পাশাপাশি মাঠের পরিচর্যায় কোনো মেশিনারিজ নেই বললেই চলে। জেলা কোচ মনির হোসেন, জোড়া তালি দিয়ে কোনো রকমে ক্রিকেট একাডেমি চালিয়ে নিচ্ছেন। তাতেও শোনা গেলো চুরির মত দুঃখজনক ঘটনার গল্প। জানা যায়, এক সপ্তাহ আগে রাতে কে বা কাহারা মাঠের ভেতরে ক্রিকেটারদের নেট অনুশীলনের জন্য তৈরি পিচ থেকে ১০ টি রড চুরি করে নিয়ে গেছে। এতে আগামী প্রজন্মের ক্ষুদে ক্রিকেটারদের অনুশীলন ব্যাহত হচ্ছে।
তবে আশার বানী হচ্ছে গত ১৮ সেপ্টেম্বর সাত সদস্য বিশিষ্ট ফুটবল এসোসিয়েশন এর নতুন একটি এডহক কমিটি গঠন হয়েছে। এতে আহবায়ক হয়েছেন বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপি, সদস্য সচিব পদে হুমায়ুন কবির জুয়েল, সদস্য হিসেবে আছেন শিবু নাথ দাস, মঞ্জুর মোর্শেদ, দিদাররুল আলম, এডভোকেট মহসিন কবির স্বপন, সোহেল আদনান।
ফুটবল একাডেমির কোচ মোমিন, নতুন এই কমিটিকে ঘিরে আশাবাদী হলেও দীর্ঘনিঃশ্বাস ছেড়েছেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটি নিয়ে। তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব আমরা পূর্নাঙ্গ অবিভাবকদের চাই। তা না হলে সব স্থবির হয়ে যাবে।
ক্রিকেট কোচ মনিরের, চোখে মুখেও হতাশার চাপ। জানা যায়, কিছুদিন আগে বদলি নিয়ে যাওয়া জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহানের কাছে সাবেক ক্রিকেটারদের ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে যুগ্ম আহবায়ক মোঃ মোঃ আমিনুল ইসলাম রাজুর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল দেখা করেন এবং লিখিত ভাবে কয়েকটি দাবী উপস্থাপন করেন। বিদায়ী সুরাইয়া জাহান পদক্ষেপ নেবেন বলে আশ্বস্ত করলেও তারও কোনো অগ্রগতি নেই। গুঞ্জন শুনা যাচ্ছে, নতুন ক্রীড়া অফিসার এলেন মাত্র দুই মাস, এবার তিনিও বদল হয়ে নতুন ক্রীড়া অফিসার আসার কথা রয়েছে। স্টাফ, বিভিন্ন ক্লাব ও সাবেক বর্তমান ক্রিকেটার ফুটবলার অ্যাথলেটর এবং অবিভাবকগণ সবাই মিলে জেলা ক্রীড়া সংস্থার বর্তমান এই দুর্দশা পরিস্থিতির অবসান চান। তারা চান অচিরেই জেলা স্টেডিয়ামের ঘাস গুলো এবার ছোট হোক এবং মাঠ উপযুক্ত হোক।
ট্যাগ :