বুধবার (১৫ মে) সকালে এমন উৎকণ্ঠার কথা জানিয়েছেন ৩৩ দিন পর সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া জাহাজ এমবি আব্দুল্লাহর ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খান বন্দি দিনের কথা এইভাবেই বলছিলেন।
আইয়ুব লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রাখালিয়া গ্রামের বিনন ব্যাপারী বাড়ির মৃত আজহার মিয়ার ছোট ছেলে।
আইয়ুবকে ফিরে পেয়ে তার মা হোমায়রা বেগমসহ আত্মীয়-স্বজনদের মাঝ থেকে আতঙ্ক দূর হয়েছে। তাকে কাছে পেয়ে সবাই এখন উচ্ছ্বসিত। সকাল থেকেই আত্মীয়-স্বজনরা তাকে দেখতে বাড়িতে আসা-যাওয়া করছেন।
আইয়ুবের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একমাস রোজা রাখায় জলদস্যুরা আটক নাবিকদের জাহাজেই ঈদের নামাজ পড়তে দেয়। তবে অস্ত্রধারী জলদস্যুরা তাদেরকে নামাজরত অবস্থায় পাহারায় রেখেছে। ওই নামাজের ছবি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় দস্যুরা নাবিকদেরকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করে। জলদস্যুরা তাদেরকে কোনো ধরনের সহযোগিতা করেনি। খাসি কিংবা গরুর জবাইয়ের যে বিষয়টি গণমাধ্যমে এসেছে তা সত্য নয়। জাহাজে খাবারের জন্য যে হালাল মাংস ছিল তা নাবিকদেরই।
ঈদের দিন নামাজ পড়তে পারলেও আনন্দ ছিল না। কারণ বন্দিদশা থেকে কবে মুক্ত হব তা নিয়েই দিন গুনতে হয়েছে নাবিকদের। একজন দোভাষীর মাধ্যমে নাবিকরা জানতে পেরেছে জলদস্যুরা জাহাজ মালিকের সঙ্গে কথা বলেছে। জাহাজ মালিকরা ভালো লোক। মুক্তিপণ নিয়ে তাদের দস্যুদের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে। টাকা দিলেই নাবিকরা মুক্তি পাবে। ঈদুল ফিতরের ২-৩ দিন পর হেলিকপ্টারের মাধ্যমে মুক্তিপণ নিয়ে যাওয়া হয় জাহাজের কাছে। সেদিনই সবচেয়ে বেশি জলদস্যু ছিল। সবার হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্র ছিল। তারা সকল নাবিককে জাহাজের ১৫ নম্বর কন্টেইনারের ওপর দাঁড় করায়। তখন জাহাজের ক্যাপ্টেন ভেতরে ছিল। এতে তাকে না দেখতে পাওয়ায় মুক্তিপণ দেওয়া হচ্ছিল না। পরে তিনি এলে হেলিকপ্টার থেকে মুক্তিপণের ডলারের ব্যাগ জাহাজে ফেলা হয়। এরপর টাকা নিয়ে ভাগ হয়ে যায় জলদস্যুরা। তিনভাগে জাহাজ ছাড়ে দস্যুবাহিনী।
আইয়ুব জানান, গত ১২ মার্চ বাংলাদেশ সময় দুপুরে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুর কবলে পড়ে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। ঠিক তখন আইয়ুব ইঞ্জিন কক্ষে ছিলেন। দস্যুরা মৎস্য জাহাজে ছিল। সেখান থেকে স্পিডবোট থেকে আক্রমণ শুরু করে। সবার হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্র ছিল। তাদের দেখে জাহাজের সবাই আত্মগোপনে যায়। জাহাজে উঠেই দস্যুরা সবাইকে বের হয়ে আসতে বলে। একপর্যায়ে সবাই বের হয়ে আসে। তাদের আক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে ছবি-ভিডিও এবং কল করে বিষয়টি সবাইকে জানাতে সক্ষম হয় নাবিকরা। পরে দস্যুরা তাদের মোবাইলফোন নিয়ে যায়।
আইয়ুব খান আরও জানান, ১৫ দিন আগে