ঢাকামঙ্গলবার , ৭ মে ২০২৪
  1. International
  2. অপরাধ
  3. আত্মহত্যা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আবহাওয়া
  6. আমাদের সম্পর্কে
  7. ইসলাম
  8. খেলাধুলা
  9. গণমাধ্যম
  10. চিকিৎসা
  11. জাতীয়
  12. ত্রাণ
  13. ত্রাণ বিতরণ
  14. দিনলিপি
  15. দেশজুড়ে
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রায়পুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আলতাফ-মামুনের গনসংযোগে চাঙ্গা কর্মীরা

WAHIDUR RAHMAN Murad
মে ৭, ২০২৪ ৫:৪৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

  লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন হাওলাদার মোটরসাইকেল প্রতীক ও রানিং উপজেলা চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ আনারস প্রতীকে লড়বেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার(২ মে) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট সুরাইয়া জাহান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়।

দ্বিতীয় ধাপের রায়পুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর পর মোটরসাইকেল বহর নিয়ে প্রচারে নামেন আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাস্টার আলতাফ হোসেন হাওলাদার। দলের অপর প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশীদও নেতাকর্মীদের নিয়ে শহরে গণসংযোগ করেছেন। এতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এ দুই প্রার্থীর পক্ষে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। উল্লেখ্য, ২১ মে রায়পুর পৌরসভাসহ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুজন, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) দুজন ও সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা সবাই আওয়ামী লীগ ঘরানার লোক। শনিবার বিকালে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে মাস্টার আলতাফ হোসেন মেঘনা উপকূলীয় এলাকা উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন থেকে তার অনুসারী ও গ্রামবাসীকে নিয়ে উপজেলা আ.লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও সাবেক মেয়র হাজি ইসমাইল খোকনের তাজমহল সিনেমা হলে নির্বাচনি কার্যালয় আসেন। সেখানে কিছুক্ষণ বক্তব্য রেখে আওয়ামী লীগ নেতা ইসমাইল খোকন, ইউপি চেয়ারম্যান আবু সালেহ মিন্টু ফরাজি, আবুল হোসেনসহ অন্তত দুই হাজার নেতাকর্মীকে নিয়ে রায়পুর শহরে মোটরসাইকেল শোভযাত্রা করেন তারা।

 অপর প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশীদ বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র রফিকুল হায়দার বাবুল পাঠান, আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মুন্সি, আ.লীগ সহসভাপতি মো. শাহজাহান, দিদার হোসেন দেলু, সাংগঠনিক সম্পাদক তানভির হায়দার চৌধুরী রিংকুসহ দলের দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে নিয়ে গণসংযোগ করেছেন।

মামুনুর রশিদের পক্ষে রয়েছেন সংসদ-সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী-যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য শিল্পপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক, পৌরসভার মেয়রসহ দলের অনেক নেতা সমর্থন দিয়েছেন এবং তার পক্ষে কাজ করছেন। বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশীদ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি থাকলেও অপর প্রার্থী আলতাফ হোসেন হাওলাদার বর্তমানে আ.লীগের কোনো পদে নেই।

মামুনুর রশিদ উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর-সদর আংশিক) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের আপন ভগ্নিপতি তিনি।

বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মারুফ বিন জাকারিয়া বিগত সময় ধরে চেয়ারম্যান পদে প্রচারণা চালালেও ‘সমঝোতা’ বৈঠকের সিদ্ধান্ত মতে তিনি ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন। যদিও এ পদে আরও ১জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাজেদা বেগম ও হাসিনা বেগমের লড়াই হবে চময়ৎকার।

আর চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া আলতাফ হোসেন হাওলাদার বলেন, এমপি দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে তার ভগ্নিপতি মামুনুর রশিদকে একক প্রার্থী করতে করেছেন। যদিও দলের নির্দেশনা অনুযায়ী মামুনুর রশিদ প্রার্থী হতেই পারেন না। আমি দলের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে প্রার্থী হয়েছি। আমার কাছে দল আগে।  

তিনি বলেন, দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখতে নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্যদের প্রার্থী না হওয়ার সিদ্ধান্ত দিলেও আমাদের এমপি মহোদয় নির্বাচনে সরাসরি হস্তক্ষেপ করছেন।  

তিনি জানান, নির্বাচন না করতে তাকে বিভিন্ন লোকজনকে দিয়ে অনুরোধ করানো হচ্ছে। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি নির্বাচন করবেন বলে জানান।২০১৪ সনের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয় লাভ করে লক্ষীপুরের উপকূলীয় অঞ্চল রায়পুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন মাস্টার আলতাফ হোসেন হাওলাদার। এর আগে তিনি ২নং চরবংশী ইউপির সফল চেয়ারম্যান ছিলেন।

বিগত ৫ বছরে এ উপজেলায় ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেছেন। তৈরি করেছেন বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজ, গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট, বহুতল ভবনে পরিণত করেছেন অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ রয়েছে তার আরো নানা রকম জনসেবামূলক নজির। এ ছাড়াও একজন সাহসী আ.লীগ নেতা হিসেবে ২নং চরবংশী ইউপি সভাপতির দায়িত্ব পালন করে করেছিলেন। উন্নয়নের প্রতিদান স্বরূপ ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতেই এবারো এ উপজেলার ভোটাররা আস্থা রেখেছেন তার প্রতি। বর্ষীয়ান এ নেতাকে দলমত নির্বিশেষে আবারো উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে পাওয়ার প্রত্যাশায় বিভোর হয়ে আছেন উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ।

চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আলতাফ হোসেন মাস্টার (বিএসসি) মটর সাইকেল মার্কার কার্যালয় উদ্ভোদন অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে বলেন, ” আমার কোন পদ-পদবী নেই, আমার আছে জনগণ! এই জনগণই আমার শক্তি।” এসময় তিনি আরও বলেন, ” আমি এর আগেও ২০১৪ সালে আ’লীগের সমর্থন নিয়ে রায়পুর উপজেলা চেয়ারম্যান হয়ে পাঁচ বছর জনসেবায় নিয়োজিত ছিলাম। জনগণ আমাকে ভালোবেসে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে ছিল। বিনিময়ে আমি আজও জনগণের সেবা করছি। আবারও যদি জনগণ আমাকে চায় তাহলে আমি নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করব। সে পাঁচ বছরে আমার বিরুদ্ধে কোন একটা অপরাধের রায়পুর বাসীর অভিযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে নৌকা মার্কায় সবচেয়ে বেশি ভোট আমি দিয়েছি। ” অপর দিকে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আনারস মার্কার প্রার্থী মামুনুর রশীদের উপর অভিযোগ তুলে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবারের উপজেলা নির্বাচনকে উম্মুক্ত ঘোষণা করেছেন। তিনি এমপি, মন্ত্রীদের স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবেনা বলে ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কথা অমান্য করে এমপির ভগ্নিপতি মামুনুর রশীদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। তার এমপি আছে, মোহাম্মদ আলী খোকন আছে, পদপদবী আছে। আর আমার আছে জনগণ এবং আল্লাহ। এই জনগণই আমার শক্তি। প্রতিপক্ষ আমাদেরকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে, ভয় দেখাচ্ছে। আমি কোন হুমকি, ধামকি ও রক্তচক্ষুকে ভয় করিনা। আমি আপনাদের চোখে যোগ্য প্রার্থী হলে আপনারা আমাকে মোটরসাইকেল মার্কায় ভোট দিয়ে আপনাদের পাশে থেকে সেবা করার সুযোগ দিবেন।”

জানতে চাইলে মামুনুর রশিদ বলেন, নির্বাচনে দলীয় কোনো প্রতীক নেই। দল থেকে প্রার্থী হইনি। আমি স্বতন্ত্র হিসেবে প্রার্থী হয়েছি। ১৯৯১ সালে আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। ১৯৯৭ সালে সভাপতি, ২০১৫ সালে সভাপতি নির্বাচিত হয়ে এখনো সভাপতির দায়িত্বে আছি। ২০১৯ সাল থেকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছি। এমপি মহোদয় ২০২১ সালে সংসদ সদস্য হয়েছেন। তার আগে থেকেই আমি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তাই আমার বেলায় এ ধরনের নির্দেশনা নাও হতে পারে। আর আমাদের কাছে কেন্দ্রীয়ভাবে লিখিত কোনো নির্দেশনাও আসেনি। হয়তো মন্ত্রী-এমপিদের ছেলে বা ভাই- এরা কোনো রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না, তাদের বেলায় এ নির্দেশনা হতে পারে।আমা

এদিকে উপজেলা চেয়রাম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী দিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের যে বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে তাতে বক্তব্য দেন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন।

এমপি নয়ন তার বক্তব্যের একপর্যায়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, দলের স্বার্থে ইউনিয়ন, উপজেলা ও পৌরসভা নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রার্থী দিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তে একমত থাকলে দু’ হাত তুলে দেখান। আপনাদের মতামতের ভিত্তিতে আগামী দিনগুলোতে ইউপি, উপজেলা ও পৌরসভা নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রার্থী দিয়ে দলের ঐক্য ধরে রাখবো। আপনারা যেভাবে চান সেভাবেই প্রার্থী হবে। আমরা কোনো প্রার্থী চাপিয়ে দেব না। আমাদের একাধিক যোগ্য প্রার্থী থাকলেও তাদের মধ্য থেকে আপনারা যে ঐক্যবদ্ধ প্রার্থী চান আলোচনার মাধ্যমে আমরা তা সিদ্ধান্ত নেব। চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী, উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে ঐক্যবদ্ধ প্রার্থীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ বিষয়টি নিয়ে এমপি নয়ন উপস্থিত নেতাকর্মীদের সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে সবাই হাত তুলে সম্মতি জ্ঞাপন করেন।  

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা পরিষদের পুরো নির্বাচন সমন্বয় করার জন্য চারজন নেতাকে দায়িত্ব দিয়েছি। বিএনপি ও জামায়াত ইসলাম নির্বাচন করলে আমাদের সিদ্ধান্ত একরকম হবে, তারা নির্বাচন না করলে হবে অন্যরকম। দল থেকে একক প্রার্থী দিলেও অন্যরা প্রার্থী হতে পারবেন। কিন্তু তারা দলের সমর্থিত প্রার্থী নন। যেহেতু কেন্দ্র থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছে উন্মুক্ত নির্বাচনের তাই কেউ প্রার্থী হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
error: Content is protected !!