লক্ষ্মীপুরে সুপারি ব্যাবসায়ীদের হয়রানি বন্ধে এমপির শরণাপন্ন।
-
ডেস্ক রিপোর্ট :
-
আপডেট :
০৮:০০:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
-
২
জন পড়েছেন
লক্ষ্মীপুরে সুপারি ব্যবসায়ীদের হয়রানি বন্ধে জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ জেলায় উৎপাদিত সুপারিতে প্রতিবছর প্রায় এক হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়।
ব্যবসায়ীদের দাবি, একটি অসাধু চক্র ব্যবসায়ীদের ক্ষতি করতে ওঁৎ পেতে থাকে। তাদের হয়রানিতে ব্যবসায়িদের আর্থিক ও মানসিকভাবে চাপে পড়তে হয়। অবৈধভাবে ভিজা সুপারির উপরের অংশে হাইড্রোজসহ হলুদ-কমলা রং লাগালেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। এরপরও প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে অসাধু চক্র অসহায় ব্যবসায়ীদের ক্ষতি করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানায়, ২০২০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পাবলিক হেলথ ল্যাবরেটটির পাবলিক এনালিস্ট ও খাদ্য বিশ্লেষক সাজেদা বেগম লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জনকে সুপারিতে দেওয়া রং পরীক্ষা নিয়ে একটি চিঠি ইস্যু করেন। সেখানে লেখা ছিল, তাদের ল্যাবে সুপারি পরীক্ষা করার সুযোগ না থাকায় কোন কিছু বিশ্লেষণ করা যায়নি’।
এরআগে একই বছর ২৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডাস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. সেলিম রেজা সুপারি নিয়ে একটি চিঠি ইস্যু করেন। সেখানে লেখা হয় ‘চট্টগ্রাম রসায়ন ল্যাবরেটরীতে আপাতত সুপারিতে হাইড্রোজ ও হলুদ-কমলা রং পরীক্ষণের সুবিধা নেই। এ অবস্থায় পরীক্ষণের জন্য সরবরাহকৃত সুপারির উপরের অংশে হাইড্রোজ ও হলুদ-কমলা রং পরীক্ষণপূর্বক মতামত প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না’। বিষয়গুলো নিয়ে ২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আইনশৃঙ্খলা সভায় আলোচনা হয়। একই সঙ্গে সুপারিতে রং করণের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য নমুনা ঢাকায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। তখন পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সুপারিতে রং মেশানো নিয়ে কোন বাধা নেই বলে একই বছর ১০ মার্চ চিঠি ইস্যু করেন তখনকার সিভিল সার্জন আবদুল গফফার। এরপর থেকে এখনো পর্যন্ত এনিয়ে কোন সিদ্ধান্ত দেয়ন সংশ্লিষ্ট কোন দপ্তর।
এদিকে সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক পিংকু, লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুর সঙ্গে পৃথকভাবে দেখা করে একই দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ সময় জেলা সুপারি ব্যবসায়ী ও বাগান মালিক এসোসিয়েশনের সভাপতি করিম খান ও সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ আহম্মদ দুই শতাধিক ব্যবসায়ীকে নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। হয়রানি বন্ধে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দিয়েছেন ওই তিন জনপ্রতিনিধি।
ব্যবসায়ীদের ভাষ্যমতে, সুপারি কাঁচা, শুকনো ও ভিজিয়ে বাজারজাত করা হয়। সুপারি পানিতে ভিজিয়ে রাখলে উপরের অংশে ময়লা হয়ে স্যাঁতসেঁতে অবস্থা সৃষ্টি হয়। এতে বাজারজাত করতে সুপারির উপরের অংশে হলুদ ও কমলা রং দিয়ে বাজারজাত করতে হয়। ভারত থেকে একইভাবে সুপারিতে রঙ দেওয়া সুপারি আমাদের দেশে আমদানি করা হয়। দেশের বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরাও একই প্রক্রিয়ায় সুপারি বাজারজাত করেন। কোথাও কোন সমস্যা হচ্ছে না। শুধুমাত্র লক্ষ্মীপুরেই একটি কুচক্রি মহল প্রশাসনকে ভুল বুঝিয়ে সুপারি ব্যবসায়ীদের পুঁজি ধ্বংস করার চেষ্টা করে।
লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন আহাম্মদ কবীর বলেন, জেলা প্রশাসক ও কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সূত্র জানিয়েছেন সুপারিতে দেওয়া রঙে তেমন কোন স্বাস্থ্য ঝুঁকি নেই। এতে নেতিবাচক কিছু পাওয়া যায়নি। এজন্য সুপারিতে রং দেওয়া নিষিদ্ধ নয়।
ট্যাগ :