ঢাকা ০২:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লক্ষ্মীপুরে সয়াবিন চাষে আগ্রহ কমেছে কৃষকদের,দূর্যোগ বেড়ে পুঁজিও হারাচ্ছে।

জিয়া উল্লাহ মামুন ,নিজস্ব প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুরে সয়াবিন চাষ দিন দিন বিকশিত হচ্ছে। বর্তমানে জাতীয় উৎপাদনের প্রায় ৭০ ভাগ সয়াবিন এ জেলায় উৎপাদিত হচ্ছে। সর্বপ্রথম একসাথে ১৯৮২ সালে এ জেলার রামগতি উপজেলায় মাত্র ১ হেক্টর জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে সয়াবিনের চাষ করা হয়। এরপর ১৯৯২ সালে এমসিসি ও ডর্প নামক দুটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সয়াবিন চাষে কৃষকদেরকে ব্যাপক উদ্বুদ্ধ করে। তখন থেকেই ধীরে ধীরে অন্য রবি ফসলের সাথে সয়াবিনের আবাদ বৃদ্ধি পেতে থাকে। উৎপাদন খরচ কম, ভালো দাম ও ফলন পাওয়ায় বর্তমানে জেলার চাষীরা অন্য রবি শস্যের পরিবর্তে দিন দিন সয়াবিন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এভাবে প্রতিবছর ক্রমন্বয়ে বৃদ্ধি পেয়ে বিগত রবি মৌসুমে (২০১৫-১৬) এজেলায় ৫২,৭২০ হেক্টর জমিতে সয়াবিন আবাদ হয় এবং প্রায় ১ লক্ষ মেঃ টনের বেশি সয়াবিন উৎপন্ন হয় যার বাজার মূল্য তিনশত কোটি টাকার বেশি।

এক সময় লক্ষ্মীপুর জেলার চরাঞ্চলে প্রচুর খেসারী, মরিচ, বাদাম, তিল, তিশি, মিষ্টি আলু, কাউন, খিরা, তরমুজ, বাঙ্গি, অড়হর, মুগ ও অন্যান্য ডালসহ বিভিন্ন রবিশস্যের চাষ করা হলেও এখন সয়াবিনের কারণে এ সকল ফসলের আবাদ দিন দিন কমে যাচ্ছে। তার পরিবর্তে এখন মাঠ জুড়ে শুধু সয়াবিন ছাড়া অন্য ফসল তেমন চোখে পড়ে না। রবি মৌসুমে মধ্য ডিসেম্বর থেকে মধ্য ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত সময়ে সয়াবিন বপন করে ৯০ থেকে ১১০ দিন সময় পর সংগ্রহ করা হয়। অন্যান্য রবি ফসলের চেয়ে সয়াবিন চাষ অনেক বেশি লাভজনক। তাছাড়া এখানে রায়পুর উপজেলায় হায়দরগঞ্জ বাজারে সয়াবিনের একটি বড় পাইকারী বাজার আছে।

দেশের ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ সয়াবিন লক্ষ্মীপুরে উৎপাদন হয়। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি আবাদ, বাম্পার ফলন, টানা এক যুগেরও বেশি সময় ধরে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ায় লক্ষ্মীপুর সয়াবিনের রাজধানী হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছে।

অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বীজ সংকট, বীজের দাম বৃদ্ধি, কালবৈশাখী ঝড়-বৃষ্টিতে ব্যাপক ফসল নষ্ট ও কৃষকদের পুঁজির অভাবে হুমকির মুখে পড়েছে সয়াবিন উৎপাদন।

কৃষক ও কৃষি বিভাগ থেকে জানা যায়, গত বছর লক্ষ্মীপুর জেলায় ৫০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সয়াবিনের আবাদ হয়েছে।

গত বছরের দুর্যোগে স্থানীয় কৃষকদের প্রায় ২৫২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এরপর থেকে কৃষকদের পূঁজির ওপর প্রভাব পড়ে।

১৬ নভেম্বর থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত রবি মৌসুম। এ মৌসুমে লক্ষ্মীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা সয়াবিনের চাষ হওয়ার কথা।

সয়াবিন চাষ করলে ফসল ঘরে তোলার আগে বর্ষায় বৃষ্টির মুখে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। এসব পরিস্থিতিতে কৃষকদের সয়াবিন চাষে আগ্রহ নেই। কৃষকরা জানান, গত বছরের ফসল নষ্ট হওয়ার কারণে অর্থসংকট রয়েছে। যে কারণে সয়াবিন চাষে কৃষদের আগ্রহ কম।

দেশের ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ সয়াবিন লক্ষ্মীপুরে উৎপাদন হয়। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি আবাদ, বাম্পার ফলন, টানা এক যুগেরও বেশি সময় ধরে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ায় লক্ষ্মীপুর সয়াবিনের রাজধানী হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছে।

লক্ষ্মীপুরে এক বছরের ব্যবধানে সয়াবিন উৎপাদন বেড়েছে ১১ হাজার টন। আবাদ বেড়েছে ৩ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। সয়াবিনচাষীরা বলছেন, কয়েক বছরের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উৎপাদন। এতে সয়াবিন চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলেন অনেক চাষী। তবে ২০২২-২৩ অর্থবছরে অনুকূল আবহাওয়ায় সয়াবিনের ভালো ফলন হয়েছে। ফলে দীর্ঘদিনের লোকসান পুষিয়ে নেয়ার প্রত্যাশা করছেন তারা।

চলতি বছর কৃষি বিভাগের পরামর্শে উচ্চফলনশীল বিইউ ও বিনা জাতের সয়াবিন চাষ করে বাম্পার ফলন হয়েছে। এরই মধ্যে আবার আবাদের জন্য জমি তৈরি করছে কৃষকরা।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. জাকির হোসেন জানান, বছরে একই মৌসুমে দুবার সয়াবিন উৎপাদন করেন চাষীরা। রবি মৌসুমের শুরুতে বীজ উৎপাদনের জন্য সয়াবিন চাষ হয়। মধ্যভাগে উৎপাদিত সয়াবিন বীজসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য তৈরিতে ব্যবহার হয়। কৃষকরা একসময় সোহাগ জাতের সয়াবিন বীজের ওপর নির্ভরশীল থাকলেও বর্তমানে নতুন জাতের বিইউ-১, বিইউ-২, বারি-৫ ও ৬, বিনা-৫ ও ৬ জাতের সয়াবিন চাষ করায় উৎপাদন বেড়েছে দু-তিন গুণ। এতে বৈরী আবহাওয়া তেমন প্রভাব ফেলবে না।

রায়পুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তহমিনা খাতুন বলেন ,খাদ্য হিসেবে সয়াবিনের ব্যাপক ব্যবহারের কারণ হচ্ছে এতে শতকরা ৪০ ভাগের অধিক আমিষ এবং ২০-২২ ভাগ তেল রয়েছে। এছাড়া সয়াবিন শর্করা, চর্বি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, পটাসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ এবং ভিটামিন এ, বি ও সি’র উন্নত উৎস হিসেবে কাজ করে। সয়াবিন শুধু কোলেস্টেরলমুক্তই নয়, বরং রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমানোর মাধ্যমে হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। মানুষের সু-স্বাস্থ্য ও রোগ প্রতিরোধে সয়াবিনজাত প্রোটিনের কার্যকর ভূমিকা রয়েছে। এ কারণে স্তন ক্যান্সার, অন্ত্রের ক্যান্সার ও প্রন্থির ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে সয়াবিন। সয়াবিন পেশি গঠন এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া সয়াবিন হজম বৃদ্ধি, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পাইলস রোগ নিরাময় করে। মেয়েদের মাসিককালীন প্রদাহ, আকস্মিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং অস্বাভাবিকতা নিয়ন্ত্রণ করে।এছাড়াও রায়পুরে ১২শ কোটির সয়াবিন ক্রয় – বিক্রয় হয়। তিনি আরো জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সব কৃষককে নিয়ে কাজ করে। জলাবদ্ধতাসহিষ্ণু সয়াবিন উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে এরই মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ড. খালেদ কমলনগর উপজেলায় কিছু নতুন জাতের সয়াবিন ট্রায়েল ফলক বসিয়েছেন। ট্রায়েল ফলকটি পানিসহিষ্ণুতায় সফল হলে জাতটি আবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হবে।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

লক্ষ্মীপুরের উত্তরচরবংশী ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কমিটির বিলুপ্ত  

লক্ষ্মীপুরে সয়াবিন চাষে আগ্রহ কমেছে কৃষকদের,দূর্যোগ বেড়ে পুঁজিও হারাচ্ছে।

আপডেট : ০২:১৩:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

জিয়া উল্লাহ মামুন ,নিজস্ব প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুরে সয়াবিন চাষ দিন দিন বিকশিত হচ্ছে। বর্তমানে জাতীয় উৎপাদনের প্রায় ৭০ ভাগ সয়াবিন এ জেলায় উৎপাদিত হচ্ছে। সর্বপ্রথম একসাথে ১৯৮২ সালে এ জেলার রামগতি উপজেলায় মাত্র ১ হেক্টর জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে সয়াবিনের চাষ করা হয়। এরপর ১৯৯২ সালে এমসিসি ও ডর্প নামক দুটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সয়াবিন চাষে কৃষকদেরকে ব্যাপক উদ্বুদ্ধ করে। তখন থেকেই ধীরে ধীরে অন্য রবি ফসলের সাথে সয়াবিনের আবাদ বৃদ্ধি পেতে থাকে। উৎপাদন খরচ কম, ভালো দাম ও ফলন পাওয়ায় বর্তমানে জেলার চাষীরা অন্য রবি শস্যের পরিবর্তে দিন দিন সয়াবিন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এভাবে প্রতিবছর ক্রমন্বয়ে বৃদ্ধি পেয়ে বিগত রবি মৌসুমে (২০১৫-১৬) এজেলায় ৫২,৭২০ হেক্টর জমিতে সয়াবিন আবাদ হয় এবং প্রায় ১ লক্ষ মেঃ টনের বেশি সয়াবিন উৎপন্ন হয় যার বাজার মূল্য তিনশত কোটি টাকার বেশি।

এক সময় লক্ষ্মীপুর জেলার চরাঞ্চলে প্রচুর খেসারী, মরিচ, বাদাম, তিল, তিশি, মিষ্টি আলু, কাউন, খিরা, তরমুজ, বাঙ্গি, অড়হর, মুগ ও অন্যান্য ডালসহ বিভিন্ন রবিশস্যের চাষ করা হলেও এখন সয়াবিনের কারণে এ সকল ফসলের আবাদ দিন দিন কমে যাচ্ছে। তার পরিবর্তে এখন মাঠ জুড়ে শুধু সয়াবিন ছাড়া অন্য ফসল তেমন চোখে পড়ে না। রবি মৌসুমে মধ্য ডিসেম্বর থেকে মধ্য ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত সময়ে সয়াবিন বপন করে ৯০ থেকে ১১০ দিন সময় পর সংগ্রহ করা হয়। অন্যান্য রবি ফসলের চেয়ে সয়াবিন চাষ অনেক বেশি লাভজনক। তাছাড়া এখানে রায়পুর উপজেলায় হায়দরগঞ্জ বাজারে সয়াবিনের একটি বড় পাইকারী বাজার আছে।

দেশের ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ সয়াবিন লক্ষ্মীপুরে উৎপাদন হয়। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি আবাদ, বাম্পার ফলন, টানা এক যুগেরও বেশি সময় ধরে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ায় লক্ষ্মীপুর সয়াবিনের রাজধানী হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছে।

অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বীজ সংকট, বীজের দাম বৃদ্ধি, কালবৈশাখী ঝড়-বৃষ্টিতে ব্যাপক ফসল নষ্ট ও কৃষকদের পুঁজির অভাবে হুমকির মুখে পড়েছে সয়াবিন উৎপাদন।

কৃষক ও কৃষি বিভাগ থেকে জানা যায়, গত বছর লক্ষ্মীপুর জেলায় ৫০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সয়াবিনের আবাদ হয়েছে।

গত বছরের দুর্যোগে স্থানীয় কৃষকদের প্রায় ২৫২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এরপর থেকে কৃষকদের পূঁজির ওপর প্রভাব পড়ে।

১৬ নভেম্বর থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত রবি মৌসুম। এ মৌসুমে লক্ষ্মীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা সয়াবিনের চাষ হওয়ার কথা।

সয়াবিন চাষ করলে ফসল ঘরে তোলার আগে বর্ষায় বৃষ্টির মুখে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। এসব পরিস্থিতিতে কৃষকদের সয়াবিন চাষে আগ্রহ নেই। কৃষকরা জানান, গত বছরের ফসল নষ্ট হওয়ার কারণে অর্থসংকট রয়েছে। যে কারণে সয়াবিন চাষে কৃষদের আগ্রহ কম।

দেশের ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ সয়াবিন লক্ষ্মীপুরে উৎপাদন হয়। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি আবাদ, বাম্পার ফলন, টানা এক যুগেরও বেশি সময় ধরে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ায় লক্ষ্মীপুর সয়াবিনের রাজধানী হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছে।

লক্ষ্মীপুরে এক বছরের ব্যবধানে সয়াবিন উৎপাদন বেড়েছে ১১ হাজার টন। আবাদ বেড়েছে ৩ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। সয়াবিনচাষীরা বলছেন, কয়েক বছরের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উৎপাদন। এতে সয়াবিন চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলেন অনেক চাষী। তবে ২০২২-২৩ অর্থবছরে অনুকূল আবহাওয়ায় সয়াবিনের ভালো ফলন হয়েছে। ফলে দীর্ঘদিনের লোকসান পুষিয়ে নেয়ার প্রত্যাশা করছেন তারা।

চলতি বছর কৃষি বিভাগের পরামর্শে উচ্চফলনশীল বিইউ ও বিনা জাতের সয়াবিন চাষ করে বাম্পার ফলন হয়েছে। এরই মধ্যে আবার আবাদের জন্য জমি তৈরি করছে কৃষকরা।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. জাকির হোসেন জানান, বছরে একই মৌসুমে দুবার সয়াবিন উৎপাদন করেন চাষীরা। রবি মৌসুমের শুরুতে বীজ উৎপাদনের জন্য সয়াবিন চাষ হয়। মধ্যভাগে উৎপাদিত সয়াবিন বীজসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য তৈরিতে ব্যবহার হয়। কৃষকরা একসময় সোহাগ জাতের সয়াবিন বীজের ওপর নির্ভরশীল থাকলেও বর্তমানে নতুন জাতের বিইউ-১, বিইউ-২, বারি-৫ ও ৬, বিনা-৫ ও ৬ জাতের সয়াবিন চাষ করায় উৎপাদন বেড়েছে দু-তিন গুণ। এতে বৈরী আবহাওয়া তেমন প্রভাব ফেলবে না।

রায়পুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তহমিনা খাতুন বলেন ,খাদ্য হিসেবে সয়াবিনের ব্যাপক ব্যবহারের কারণ হচ্ছে এতে শতকরা ৪০ ভাগের অধিক আমিষ এবং ২০-২২ ভাগ তেল রয়েছে। এছাড়া সয়াবিন শর্করা, চর্বি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, পটাসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ এবং ভিটামিন এ, বি ও সি’র উন্নত উৎস হিসেবে কাজ করে। সয়াবিন শুধু কোলেস্টেরলমুক্তই নয়, বরং রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমানোর মাধ্যমে হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। মানুষের সু-স্বাস্থ্য ও রোগ প্রতিরোধে সয়াবিনজাত প্রোটিনের কার্যকর ভূমিকা রয়েছে। এ কারণে স্তন ক্যান্সার, অন্ত্রের ক্যান্সার ও প্রন্থির ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে সয়াবিন। সয়াবিন পেশি গঠন এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া সয়াবিন হজম বৃদ্ধি, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পাইলস রোগ নিরাময় করে। মেয়েদের মাসিককালীন প্রদাহ, আকস্মিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং অস্বাভাবিকতা নিয়ন্ত্রণ করে।এছাড়াও রায়পুরে ১২শ কোটির সয়াবিন ক্রয় – বিক্রয় হয়। তিনি আরো জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সব কৃষককে নিয়ে কাজ করে। জলাবদ্ধতাসহিষ্ণু সয়াবিন উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে এরই মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ড. খালেদ কমলনগর উপজেলায় কিছু নতুন জাতের সয়াবিন ট্রায়েল ফলক বসিয়েছেন। ট্রায়েল ফলকটি পানিসহিষ্ণুতায় সফল হলে জাতটি আবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হবে।