রাকিব-নোমান হত্যার পর বশিকপুরে সুরা বাহিনীর উত্তান,নেপথ্যে মাহফুজ – রুবেল।
-
ডেস্ক রিপোর্ট :
-
আপডেট :
০১:০৪:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০২৩
-
২
জন পড়েছেন
মাহমুদুর রহমান মনজু,স্টাফ রিপোর্টার :
লক্ষ্মীপুরের বশিকপুরে চলছে খুনের রাজনীতি। প্রতি পক্ষকে ঘায়েল করতে চলছে একের পর এক হত্যা। এসব হত্যায় জড়িতদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আটকের পূর্বেই একটি সক্রিয় গ্রুপ সন্দেহজনক ভাবে বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিপক্ষের লোকজন সন্দেহে তুলে এনে মারধর করে। গ্রুপের সদস্য স্বীকারোক্তি দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে তুলে দেয়া হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে।
সম্প্রতি বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। তবে এর জন্য আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকেই দুষছেন স্থানীয়রা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানের ছোট ভাই আবদুল্লাহ আল নোমান ও তার সফরসঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা রাকিব ইমাম নিজ এলাকায় রাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হন। এর আগে ও পরে ঘটনা জানতে অনুসন্ধান করে স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায় রাকিব ইমাম হত্যার প্রতিশোধ নিতে রাকিব ইমামের আপন বড় ভাই রুবেল নাগের হাট. নদীগ্রাম. কমলাপুর. গাজীপুর এবং কর পাড়া. বালাইশ পুর.পথ ধর্মপুর. রোকেনপুর. বিরাইম পুর.শেয়ারপুর.রসিদপুর.রামনগর.বড় আউলিয়া. উষারকান্দি. কাশিপুর দত্তপাড়া গড়ে তুলেছেন আরেকটি নতুন বাহিনী এইসব বাহিনীর নেতৃত্ব রাকিব ইমামের আপন বড় ভাই রুবেল প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে পরিচালনা করেন । এরা এলাকায় চাঁদাবাজি করছে হরদম চালিয়ে যাচ্ছেন মাদক ব্যবসা। এদের বাহিনীতে সদস্য সংখ্যা প্রায় ১২০ থেকে১৫০ জন। এরা ১০ জন ১৫ জন করে এক একজন এক একটি এলাকার নিয়ন্ত্রণ করেন। এদের মধ্যেই উল্লেখযোগ্য ১১থেকে ১২ জন প্রধান একেকজন একেকটি এলাকা কন্ট্রোল করেন।এরা মাহফুজ চেয়ারম্যানের সুরা কমিটির সক্রিয় সদস্য। এদের কন্ট্রোল করেন বশিকপুর ইউনিয়নে সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত রাকিব ইমামের বড় ভাই রুবেল।
মুরাদ নন্দীগ্রাম সিরাজ উল্ল্যার ছেলে ,ছোট নিশান রশিদপুরের শাহাবুদ্দিন ছেলে, মান্না রায়পুর এর রফিকউল্লাহর ছেলে,জাবেদ ওয়াজী উল্ল্যার ছেলে,বরকত সুলতান আহমেদের ছেলে. রাকিব হোসেন(ওরফে লম্বা রাকিব) মাসুদের ছেলে,মাহাফুজুর রহমান সুমন(ওরফে বেরাইজ্জা সুমন)আবুল কাশেমের ছেলে,পিচ্চি ইউসুফ
বদিউজ্জামান খোকনের ছেলে।
এরা ২০১২ সাল থেকে
মাছুম বিল্লা প্রকাশ লাদেন বাহিনীর সদস্য হয়ে এলাকায় মাদক নিয়ন্ত্রণ করতো।লাদেন মাছুম পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।আর তখন লাদেন বাহিনীর হাল ধরেন লক্ষীপুর জেলা যুবলীগের নবনির্বাচিত সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান।
উল্লেখ্য, গত ২৫ এপ্রিল রাতে সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের পোদ্দার বাজারে জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নোমান ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিবকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করে। এ সময় তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও মোবাইল নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয় লোকজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা নোমানকে মৃত ঘোষণা করেন। ছাত্রলীগ নেতা রাকিবকে সংকটাপন্ন অবস্থায় ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান।
নোমান হত্যা ঘটনা কে কেন্দ্র করে বশিকপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বাদী হয়ে আবুল কাশেম জিহাদী কে প্রধান আসামি করে চন্দ্রগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
কাশেম জিহাদী পুলিশের গ্রেফতারের ভয়ে এলাকা থেকে সরে যাওয়ার পরে এরা পুরো বশিকপুর ইউনিয়ন ও চাটখিল এরিয়া চন্দ্রগঞ্জ থানা এরিয়া কন্ট্রোল করেন। শালীস- নালীশ এমন কি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন ইয়াবা ব্যবসাসহ সব ধরনের মাদক ব্যবসা কন্ট্রোল করেন।
একটি অনুসন্ধানে গিয়ে রুবেলের বিরুদ্ধে আরো স্থানীয়দের কথা রাকিব ইমামের বড় ভাই রুবেল এত বেপরোয়া আগে ছিল না। ভাই হত্যার পর থেকেই সেই এখন বশিকপুর ইউনিয়নে দিবালোকে তার সহযোগী সন্ত্রাসীদেরকে নিয়ে মোটরসাইকেলে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয় এলাকার আনাচে কানাচে। স্থানীয়রা জানান রুবেল কে কন্ট্রোল করেন নবনির্বাচিত বশিকপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান।
সম্প্রতি ১৫ নভেম্বর বুধবার রাত আনুমানিক ২ টায় ৭ নং বশিকপুর ইউনিয়নে প্রত্যেকটি পয়েন্টে দুর্বৃত্তরা পাকা গুলি ও ককটেল ফাটানোর মহা উৎসব মেতে উঠেছে. জনশ্রুত রয়েছে তারা বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের অনুসারী।
এদিকে ১৫ নভেম্বর রাতের ঘটনা জানতে চাইলে চেয়ারম্যান মাহফুজ জানান ওটা প্রশাসন ভালো বলতে পারে। তবে আমি
পাবলিসিটি করতে মসজিদের মুয়াজ্জিনদের কে নির্দেশ দিয়েছি।চেয়ারম্যান মাহফুজ বলেন ককটেলের শব্দ শুনেছি।গোলাগুলি হয়নি। প্রশাসনের কাছে তথ্য ছিল ডাকাতির একটা প্রিপারেশন ছিল।
এদিকে চন্দ্রগঞ্জ থানার এসআই বেলায়েত হোসেন জানান ,কাশীপুর এবং বড় আউলিয়া একটা গোপন সংবাদ পেয়েছি ডাকাত প্রবেশ করছে এই কারণে আমরা মহড়া দিছি।
নৌকা প্রতিকে প্রতিদ্বন্ধীতা করে নিজ দলের কর্মীদের স্বেচ্ছাচারিতায় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহফুজুর রহমানের কাছে একাধিকবার জয়ী চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জেহাদী হেরে যান। পরে কোণঠাসা হয়ে কাশেম জেহাদি সক্রিয়ভাবে আওয়ামীলীগের রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাতে জেলা শহরে বসবাস শুরু করেন। এ সুযোগে বশিকপুরে গড়ে উঠে মাদক ব্যবসার নিরাপদ কেন্দ্র। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল ও নিশ্চিহৃ করতে চলে নানামুখী পরিকল্পনা। এরই অংশ হিসেবে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে, দাবি স্থানীয়দের।
ট্যাগ :