মাহমুদুর রহমান মনজু, স্টাফ রিপোর্টার।
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে জেলেদের সহায়তার চালে ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান চলছে।এই অভিযান
ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম।এই সময় মা-ইলিশ আহরণ হতে বিরত থাকার জন্য জেলেদের মাঝে ভিজিএফ (চাল) বিতরণ করা হয়। প্রত্যেক জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও ১৮থেকে ২১ কেজি করে চাল দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জনপ্রতি ৫ থেকে ৭কেজি চাল কম দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
চর ফলকন ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ নুরুল ইসলাম জানান, তিনি জেলে কার্ডের চাল পেয়েছেন ১৯ কেজি । ৫ নং চর ফলকন ইউনিয়নের জেলে, মোঃ কামাল হোসেন,মোঃ ইউসুফ, নুর আলম,ফয়জুল ইসলাম, ওমর ফারুক তারা সবাই চাল পেয়ে পরিমাপ করে জানান তারা সবাই ২০ কেজি করে চাল পেয়েছেন। তাদের মধ্যে মোঃনুর আলম বলেন,অনেক দূর থেকে এসে ৫ কেজি চাল কম পাওয়ায় অনেক কষ্ট পেয়েছি, কেন চেয়ারম্যান বালতিতে মেপে আমাদের কে চাল কম দেয়? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জেলে জানান, ইউএনও এবং উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সামনে দুইজনকে এক বস্তা ৫০ চাল কেজি ভাগ করে দিলেও কর্মকর্তারা চলে গেলে বালতিতে পরিমাপ করে চাল কম দেওয়া হয় ।
৬নং পাটওয়ারির ইউনিয়নের বাসিন্দা নবীর হোসেন ও জামাল হোসেন জানান তারা ১৮ কেজি করে চাল পেয়েছে, তারা আরও জানান ১৮থেকে ২০কেজি চাল বেশির ভাগ জেলে পেয়েছেন। ২ নং সাহেবের হাট ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোহাম্মদ শাহে আলম জানান, তার জেলে কার্ড আছে কিন্তু তিনি তিনি চাল পান নি। ২ নং সাহেবেরহাট ইউনিয়নের জেলে মোহাম্মদ সুলতান, বাসার, , রহিম, হাসিম, দিদার, আলা উদ্দিন, খালেক সর্দার তারা জানান,২০থেকে ২১ কেজি করে চাল পেয়েছেন।এএরূপ চিত্র দেখা যায়,উপজেলার ৫নং চর ফলকন ইউনিয়ন, ২নং সাহেবের হাট ইউনিয়ন,৬নং পাটোয়ারী হাট, ৪ নং চর মার্টিন ইউনিয়ন। ৫নং চর ফলকল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ মোশারফ বাঘা জানান, জেলেদের সহায়তার চাল কম দেওয়ার বিষয়ে আমি অবগত নই,আমি জানিনা এখানে অফিসাররা ছিলেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডাঃ কাউসার-ই হুদা হেভেন ও ৫ নং চর ফলকন ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার (তদারকি কর্মকর্তা) জানান, গতকাল জেলেদের সহায়তার চাল বিতরণ এর বিষয়ে আমাকে চেয়ারম্যান জানায়নি, কাল চাল বিতরনের সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। তাই চাল কম দেওয়ার বিষয়ে আমি জানিনা।
৬নং পাটওয়ারির হাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ রাজু কে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি তাই তার বক্তব্য নেয়া যায়নি।
২নং সাহেবের হাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চাল গেলেই চাল কমে যায়।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও ৬ নং পাটওয়াহাট হাট ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার (তদারকি কর্মকর্তা) মোঃ জহিরুল ইসলাম জানান,প্রতি বস্তা ৫০ কেজি চাল থাকে তিনি ২৫ কেজি করে দুইজন জেলেকে দিয়েছেন, আর পত্রিকায় নিউজ হওয়ার মতো অনিয়ম ঘটেনি।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা(ভারপ্রাপ্ত) ও ২ নং সাহেবেরহাট ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার (তদারকি কর্মকর্তা)আব্দুল কুদ্দুস জানান, প্রতি বস্তায় ৫০কেজি করে চাল রয়েছে, আমরা চেয়ারম্যানদের কে বলেছি দুইজন জেলেকে ২৫ কেজি করে ৫০ কেজি চাল দেওয়ার জন্য।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, জেলেদের চাল বিতরণ এর বিষয়ে আমার সর্বোচ্চ নজরদারি রয়েছে আমি সরাসরি মনিটরিং করি এরপরেও চাল কম দেয়ার বিষয়ে অভিযোগ পেলে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া নেওয়া হবে।