ঢাকা ১০:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রায়পুরে সাংবাদিক দেলোয়ারের বিরুদ্ধে মামলা : বড় ভাইকে হত্যার অভিযোগ।

  লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ছোট ভাইয়ের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বড় ভাই সাইফুল আলম (৫৫) নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার বামনী ইউনিয়নের কবিরহাট এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে ঢাকায় নেওয়ার পথে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। নিহত সাইফুল উপজেলার বামনী ইউনিয়নের মৃধা বাড়ির বাসিন্দা।

ঘটনার সূত্রে জানা যায় ,বামনী ইউনিয়নের দেলোয়ার হোসেন মৃধ্যার সাথে বড় ভাই সাইফুল আলম মৃধ্যার মঠের পাশে জায়গা – সম্পর্ত্তি বিষয়ে দীর্ঘদিন সমস্যা চলছিলো। তারই ধারাবাহিকতায় (৩০ ই সেপ্টেম্বর ) বিকেল ৩টায় তর্কাতর্কি হয়। পরে থানায় এসে বড় ভাই সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে থানায় প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ এনে সাধারন ডায়েরী করেন ।থানা থেকে ফিরে বিকেল ৪টায় ফের বড় ভাই বাজারে যাওয়ার পথে তর্কে জড়িয়ে বাড়ির সামনেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে । পরে ঘটনা স্থল থেকে তাদের ছোট ভাই জাকির আলম আহত সাইফুল আলমকে উদ্ধার করে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকায় রেফার্ড করেন। চাঁদপুর যাওয়ার পরেই মাগরিবের নামাজের সময় সাইফুল আলম মৃধ্যা মৃত্যুবরণ করেন এ্যাম্বুলেন্সে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাইফুল আলম ও দেলোয়ার মৃধ্যার ছোট ভাই জাকির আলম মৃধ্যা ।

নিহিত সাইফুল আলম পরিবারের ৫ম সন্তান ও দেলোয়ার মৃধ্যা ৬ষ্ঠ সন্তান।নিহিত সাইফুল আলমের ৩ ছেলে সন্তান রয়েছে। নিহত ৬২ বছরের সাইফুল মৃধা ঢাকায় থাকতেন। পুরান ঢাকার শপিং ব্যাগ প্রস্তুতকারক ব্যবসায়ী ছিলেন তিনি।

নিহতের স্ত্রী নাছিমা বেগম বলেন, ‘আমরা গত বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে বাড়িতে আসি। আজকে (শনিবার) দেলোয়ারসহ চার/পাঁচজন লোক আমাদের গাছ থেকে ডাব পাড়ে। আমার স্বামী তাদের ডাব পাড়তে নিষেধ করলে তারা আমার স্বামীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করে। নাজমা আক্তার আরো জানান উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে গণমাধ্যম কর্মীদের , দেলোয়ার মৃধা ,রিপন, আবু মুসা মোহন ,শিমুল হোসেন, বাসার মাষ্টার সহ আরো অনেকেই আমার স্বামীকে নির্মম ভাবে আঘাত করে নিহত ভেবে মূমুর্ষ অবস্থায় রাস্তায় ফেলে উল্টো হাসপাতালে যেয়ে ভর্তি হয় । আমরা খুনীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী করছি । খুনী দেলোয়ার মৃধ্যার কাতারের ভিসা রয়েছে সে পালিয়ে যেতে পারে পারে।আরেক সন্ত্রাসী ২১ মামলার পাহাড়ি সন্ত্রাসী মোহন সহ সকলকে দ্রুত গ্রেফতার এর দাবী জানান।

এ ঘটনায় রাত ১২টায় নিহতের স্ত্রী নাসিমা বেগম বাদী হয়ে তারই দেবর দেলোয়ার হোসেন মৃধা (৫০) ও তার সহযোগী শিমুল হোসেন (২৫), আবু মুসা মোহন (৩৫) এবং দুই নারীসহ সাতজনকে আসামি করে রায়পুর থানায় মামলা করেছেন। ঘটনার পর থেকে আসামিরা ঘরবাড়ি ছেড়ে পলাতক রয়েছে বলে এসআই কমল দে জানান।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেন মৃধা মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার ভাই, ভাবি, ভাতিজা অন্যায়ভাবে জমি দখল করতে আসে। এ সময় বাধা দিতে গেলে তারা অতর্কিত হামলা করে আহত করে। এমন আশঙ্কায় এর আগেই আমি থানায় অভিযোগ করেছি। ভাতিজা আমাকে মারতে গেলে ভাইয়ের শরীরে আঘাত লাগলে তিনি স্ট্রোক করে পরে মারা যান।

রায়পুর থানার পুলিশ পরিদর্শক ( তদন্ত) শামসুল আরেফিন মৃত্যুর ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন , ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তদের আটকে পুলিশের অভিযান চলছে । লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে । নিহতের ঘটনায় পরিবার থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

লক্ষ্মীপুরের উত্তরচরবংশী ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কমিটির বিলুপ্ত  

রায়পুরে সাংবাদিক দেলোয়ারের বিরুদ্ধে মামলা : বড় ভাইকে হত্যার অভিযোগ।

আপডেট : ০৩:০৪:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ অক্টোবর ২০২৩

  লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ছোট ভাইয়ের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বড় ভাই সাইফুল আলম (৫৫) নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার বামনী ইউনিয়নের কবিরহাট এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে ঢাকায় নেওয়ার পথে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। নিহত সাইফুল উপজেলার বামনী ইউনিয়নের মৃধা বাড়ির বাসিন্দা।

ঘটনার সূত্রে জানা যায় ,বামনী ইউনিয়নের দেলোয়ার হোসেন মৃধ্যার সাথে বড় ভাই সাইফুল আলম মৃধ্যার মঠের পাশে জায়গা – সম্পর্ত্তি বিষয়ে দীর্ঘদিন সমস্যা চলছিলো। তারই ধারাবাহিকতায় (৩০ ই সেপ্টেম্বর ) বিকেল ৩টায় তর্কাতর্কি হয়। পরে থানায় এসে বড় ভাই সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে থানায় প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ এনে সাধারন ডায়েরী করেন ।থানা থেকে ফিরে বিকেল ৪টায় ফের বড় ভাই বাজারে যাওয়ার পথে তর্কে জড়িয়ে বাড়ির সামনেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে । পরে ঘটনা স্থল থেকে তাদের ছোট ভাই জাকির আলম আহত সাইফুল আলমকে উদ্ধার করে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকায় রেফার্ড করেন। চাঁদপুর যাওয়ার পরেই মাগরিবের নামাজের সময় সাইফুল আলম মৃধ্যা মৃত্যুবরণ করেন এ্যাম্বুলেন্সে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাইফুল আলম ও দেলোয়ার মৃধ্যার ছোট ভাই জাকির আলম মৃধ্যা ।

নিহিত সাইফুল আলম পরিবারের ৫ম সন্তান ও দেলোয়ার মৃধ্যা ৬ষ্ঠ সন্তান।নিহিত সাইফুল আলমের ৩ ছেলে সন্তান রয়েছে। নিহত ৬২ বছরের সাইফুল মৃধা ঢাকায় থাকতেন। পুরান ঢাকার শপিং ব্যাগ প্রস্তুতকারক ব্যবসায়ী ছিলেন তিনি।

নিহতের স্ত্রী নাছিমা বেগম বলেন, ‘আমরা গত বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে বাড়িতে আসি। আজকে (শনিবার) দেলোয়ারসহ চার/পাঁচজন লোক আমাদের গাছ থেকে ডাব পাড়ে। আমার স্বামী তাদের ডাব পাড়তে নিষেধ করলে তারা আমার স্বামীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করে। নাজমা আক্তার আরো জানান উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে গণমাধ্যম কর্মীদের , দেলোয়ার মৃধা ,রিপন, আবু মুসা মোহন ,শিমুল হোসেন, বাসার মাষ্টার সহ আরো অনেকেই আমার স্বামীকে নির্মম ভাবে আঘাত করে নিহত ভেবে মূমুর্ষ অবস্থায় রাস্তায় ফেলে উল্টো হাসপাতালে যেয়ে ভর্তি হয় । আমরা খুনীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী করছি । খুনী দেলোয়ার মৃধ্যার কাতারের ভিসা রয়েছে সে পালিয়ে যেতে পারে পারে।আরেক সন্ত্রাসী ২১ মামলার পাহাড়ি সন্ত্রাসী মোহন সহ সকলকে দ্রুত গ্রেফতার এর দাবী জানান।

এ ঘটনায় রাত ১২টায় নিহতের স্ত্রী নাসিমা বেগম বাদী হয়ে তারই দেবর দেলোয়ার হোসেন মৃধা (৫০) ও তার সহযোগী শিমুল হোসেন (২৫), আবু মুসা মোহন (৩৫) এবং দুই নারীসহ সাতজনকে আসামি করে রায়পুর থানায় মামলা করেছেন। ঘটনার পর থেকে আসামিরা ঘরবাড়ি ছেড়ে পলাতক রয়েছে বলে এসআই কমল দে জানান।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেন মৃধা মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার ভাই, ভাবি, ভাতিজা অন্যায়ভাবে জমি দখল করতে আসে। এ সময় বাধা দিতে গেলে তারা অতর্কিত হামলা করে আহত করে। এমন আশঙ্কায় এর আগেই আমি থানায় অভিযোগ করেছি। ভাতিজা আমাকে মারতে গেলে ভাইয়ের শরীরে আঘাত লাগলে তিনি স্ট্রোক করে পরে মারা যান।

রায়পুর থানার পুলিশ পরিদর্শক ( তদন্ত) শামসুল আরেফিন মৃত্যুর ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন , ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তদের আটকে পুলিশের অভিযান চলছে । লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে । নিহতের ঘটনায় পরিবার থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।