স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে দেখা করলেন নৃশংস হত্যার শিকার নোমান -রাকিবের পরিবারবর্গ।
নোমান – রাকিব হত্যাকান্ডে জড়িতদের কঠোর শাস্তির প্রতিশ্রুতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর -এমপি নয়ন জানিয়েছেন।
লক্ষ্মীপুর জেলার বশিকপুর ইউনিয়নে যুবলীগ সেক্রেটারি নোমান ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিব হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে দেখা করেছেন লক্ষ্মীপুর -২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃশাহজাহান এর নেতৃত্বে নোমান- রাকিবের স্বজনরা।
শনিবার ১৩ ই মে সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নিজস্ব কার্যালয়ে দেখা করেন সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপি ,ইউপি চেয়ারম্যান ও নিহত যুবলীগ নেতার বড় ভাই মাহ্ফুজ চেয়ারম্যান ও নিহত ছাত্রলীগ নেতা রাকিব হোসেনের পরিবার বর্গ।
বশিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও নোমান রাকিব হত্যাকাণ্ডের বাদী মাহফুজ চেয়ারম্যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসা থেকে বের হয়ে মুঠোফোনে জানান , নোমান – রাকিব হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি আবুল কাশেম জিহাদী কে গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া আছে তাকে গ্রেপ্তারের জন্য। এছাড়াও এই হত্যাকাণ্ড যেই জড়িত থাকুক তাকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের জন্য আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়ার কথা জানান ।
এ সময় লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন বশিকপুর ইউনিয়ন এর সন্ত্রাসের অতীত ইতিহাস , সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে অবহিত করেন এবং নোমান – রাকিব হত্যাকাণ্ডের মতো যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে আইন-শৃঙ্খলা উন্নতি ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে সহযোগিতা কামনা করেন।
জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, নোমান ও রাকিব বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের জেলার নেতৃত্ব দিয়েছেন ।লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক পদে নিযুক্ত করা হয়েছিল নোমানকে। এই হত্যাকাণ্ডে জেলা আওয়ামী লীগ ও আমি আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে অনুরোধ করেছি সন্ত্রাসীরা যে দলেরই হোক তাদের পরিচয় তারা অপরাধী । তারা নিজেদের স্বার্থে মানুষকে হত্যা করে দলকে বিব্রত পরিস্থিতিতে ফেলে দিতে চেয়েছিল যারা এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত তাদের ইতিহাস বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে তারা আওয়ামী লীগের অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছিল । লক্ষ্মীপুর জেলা বিভিন্ন ইউনিয়নে বিএনপি-জামায়াতের একসময় অস্ত্রের ঝঁনঝনানি ছিল ক্ষমতার পালাবদলে তারা আওয়ামী লীগের অনুপ্রবেশ করেছে আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ কর্মীদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে । স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে লক্ষ্মীপুরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতি ,অস্ত্র উদ্ধার ও এই মামলার সুষ্ঠু কার্য পরিচালনা হয় সেই ব্যাপারে সহযোগিতা কামনা করেছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নোমান – রাকিব হত্যাকাণ্ডে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
উল্লেখ্য,২৫ এপ্রিল রাতে সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের পোদ্দার বাজার এলাকায় জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ আব্দুল্লাহ আল নোমান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিব ইমামকল গুলি করে হত্যা করা হয়। এসময় তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও মোবাইল নিয়ে যায় দূর্বৃত্তরা। গুলির শব্দ শুনে ঘটনাস্থল গিয়ে স্থানীয় লোকজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা নোমানকে মৃত ঘোষনা করেন। ছাত্রলীগ নেতা রাকিবকে সংকটাপন্ন অবস্থায় ঢাকায় নেয়ার পথে মারা যান তিনিও। ২৬ এপ্রিল রাত ১ টার দিকে নিহত নোমানের বড় ভাই ও বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বাদী হয়ে ৩৩ জনের বিরুদ্ধে চন্দ্রগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কাশেম জিহাদীকে প্রধান করে ১৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলার পর থেকে র্যাব ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৭ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।লক্ষ্মীপুরে আলোচিত নোমান-রাকিব হত্যা মামলার প্রধান আসামি আবুল কাশেম জিহাদীর ছাড়া মামলার ১৭ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।উদ্ধার করা হয় ৪টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং স্বেচ্ছায় হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে মামলার ৩ নম্বর আসামি ফয়সাল দেওয়ান ও ১৮ নম্বর আসামি আলমগীর হোসেন ওরফে টাকলু আলমগীর।
ট্যাগ :