ঢাকা ১০:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুলিশ সদস্যের স্ত্রীর কান্ড পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে ইউপি সদস্যসহ ছয়জনকে জিম্মি,থানায় জিডি।

 

মাহমুদুর রহমান মনজু :লক্ষ্মীপুর

লক্ষ্মীপুরে পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ ছয় পাওনাদারকে এক পুলিশ সদস্যের স্ত্রীর রোষানলে পড়তে হয়েছে। এসময় প্রায় আড়াই ঘন্টা তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখে পুলিশ সদস্যের ওই স্ত্রী। বৃহস্পতিবার (১১ মে) লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের বড়ালিয়া গ্রামে বকসি বাড়িতে এঘটনা ঘটে। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন দিলে ইউপি সদস্যসহ ছয়জনকে পুলিশ উদ্ধার করে। পরে ওই নারীর কাছে টাকা পাওয়ার অভিযোগ ও অবরুদ্ধের ঘটনার বিচার চেয়ে একই এলাকার জমাদার বাড়ির সোলাইমানের ছেলে মানিক চন্দ্রগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগীরা। এদিকে ওই পুলিশ সদস্যের স্বজনদের দাবি, বিভিন্ন ফাঁদে প্রতারণা করে অর্থ আদায় করে মানুষের সাথে পুলিশের স্ত্রী কহিনূর বেগম প্রতারণা করছেন, এর সাথে বাবা ও ছেলেও জড়িত বলে দাবি তাদের।

অভিযুক্ত কহিনূর বেগম পুলিশ সদস্য মহিব উল্ল্যাহ্র স্ত্রী ও পুলিশ সদস্য নাহিদ সুলতানের মা।

স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানায়, স্বামী ও ছেলে পুলিশ সদস্য হিসেবে কর্মরত থাকার সুবাধে ক্ষমতার অপব্যবহার দেখিয়ে এলাকায় আপন ছোট ভাই থেকে শুরু করে অনেককেই হয়রানি করেছে এই পুলিশ পরিবারটি। পুলিশে চাকুরি দেয়ার প্রলোভনে টাকা আদায়, শহরে ফ্ল্যাট কিনে দেয়ার নামে অর্থ আত্নসাত, বসতঘরের আসবাবপত্র নির্মাণ সামগ্রী তৈরি করে টাকা না দেয়া এমনকি মূল ফটকের গেইট নির্মাণের টাকাও পাননি কারিগররা, এমনটি অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা।

এবিষয়ে জানতে কহিনূর বেগমের বাড়িতে গেলে সাংবাদিক পরিচয় পেলে মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে সটকে পড়েন ওই নারী। পরে পুলিশ সদস্য মহিব উল্ল্যাহর সাথে যোগাযোগের নাম্বার চাইলে ভেতর থেকে নিজেকে পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী দাবি করে ওই নারী এক উঠতি যুবতী নারীকে দিয়ে ভিডিও শুরু করে। স্থানীয়রা বলছে, ওই যুবতীকে কেউই চিনেন না। পরে গণমাধ্যমকর্মীরা চলে যেতে চাইলে পুলিশ সদস্যের স্ত্রী ঘরের ভেতর থেকে বলেন পুলিশ বলেছে তাকে কারো সাথে কথা না বলার জন্য, তবে নিজের মোবাইলে এক পুলিশ সদস্যকে ফোন করে সাংবাদিকেদের কথা বলতে বলেন, অপর প্রান্তের ওই ব্যক্তিটি চন্দ্রগঞ্জ থানার পুলিশ দুলাল বলে নিজেকে পরিচয় দিয়ে বলেন, স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ কয়েকজনকে উদ্ধার করেছেন স্থানীয় পুলিশ। পরে তারা পাওনা টাকা ও অবরুদ্ধের ঘটনায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। এদিকে ওই নারী পুলিশ সুপারের কাছে মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন বলেও জানায় তিনি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য একেএম তারেক রহমান বলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই পুলিশ সদস্যের স্ত্রীর কাছে বিভিন্ন লোকজন টাকা পাওয়ার অভিযোগ দিয়ে আসছিলো। এনিয়ে এলাকায় বহু সালিশ ধরবার হয়েছে। কারো কারো টাকা কিছু ফেরত দিলেও বেশিরভাগ পাওনাদার ওই পুলিশ সদস্যের স্ত্রীর হাতে লাঞ্চিত হয়েছে। ঘটনার সময় কয়েকজন পাওনাদার ওই বাড়িতে পাওনা টাকার বিষয়ে জানতে যায়। এসময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনিও তাদের সাথে ওই পুলিশ সদস্যের বাড়িতে যান। এসময় পুলিশ সদস্যের স্ত্রীকে পরিচয় দিয়ে পাওনাদারদের সাথে ঘরে প্রবেশ করলে কিছু বুঝে উঠার আগেই ওই নারী অতর্কিত হামলা চালিয়ে বাহির থেকে ঘরে তালা দিয়ে হুমকি দেয়া শুরু করে। এসময় বাহিরে ওই নারীর দেবর অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য ও স্থানীয় লোকজনও ছিলেন। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান, প্রশাসন ও বাধ্য হয়ে জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন করি। প্রায় আড়াই ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর ওই নারীর কবল থেকে পুলিশ উদ্ধার করে বলে জানালেন এই জনপ্রতিনিধি।

এবিষয়ে পুলিশের দায়িত্বশীল কারো সাথে কথা বলা এখনো সম্ভব হয়নি। এনিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

লক্ষ্মীপুরের উত্তরচরবংশী ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কমিটির বিলুপ্ত  

পুলিশ সদস্যের স্ত্রীর কান্ড পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে ইউপি সদস্যসহ ছয়জনকে জিম্মি,থানায় জিডি।

আপডেট : ১০:৪৭:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ মে ২০২৩

 

মাহমুদুর রহমান মনজু :লক্ষ্মীপুর

লক্ষ্মীপুরে পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ ছয় পাওনাদারকে এক পুলিশ সদস্যের স্ত্রীর রোষানলে পড়তে হয়েছে। এসময় প্রায় আড়াই ঘন্টা তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখে পুলিশ সদস্যের ওই স্ত্রী। বৃহস্পতিবার (১১ মে) লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের বড়ালিয়া গ্রামে বকসি বাড়িতে এঘটনা ঘটে। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন দিলে ইউপি সদস্যসহ ছয়জনকে পুলিশ উদ্ধার করে। পরে ওই নারীর কাছে টাকা পাওয়ার অভিযোগ ও অবরুদ্ধের ঘটনার বিচার চেয়ে একই এলাকার জমাদার বাড়ির সোলাইমানের ছেলে মানিক চন্দ্রগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগীরা। এদিকে ওই পুলিশ সদস্যের স্বজনদের দাবি, বিভিন্ন ফাঁদে প্রতারণা করে অর্থ আদায় করে মানুষের সাথে পুলিশের স্ত্রী কহিনূর বেগম প্রতারণা করছেন, এর সাথে বাবা ও ছেলেও জড়িত বলে দাবি তাদের।

অভিযুক্ত কহিনূর বেগম পুলিশ সদস্য মহিব উল্ল্যাহ্র স্ত্রী ও পুলিশ সদস্য নাহিদ সুলতানের মা।

স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানায়, স্বামী ও ছেলে পুলিশ সদস্য হিসেবে কর্মরত থাকার সুবাধে ক্ষমতার অপব্যবহার দেখিয়ে এলাকায় আপন ছোট ভাই থেকে শুরু করে অনেককেই হয়রানি করেছে এই পুলিশ পরিবারটি। পুলিশে চাকুরি দেয়ার প্রলোভনে টাকা আদায়, শহরে ফ্ল্যাট কিনে দেয়ার নামে অর্থ আত্নসাত, বসতঘরের আসবাবপত্র নির্মাণ সামগ্রী তৈরি করে টাকা না দেয়া এমনকি মূল ফটকের গেইট নির্মাণের টাকাও পাননি কারিগররা, এমনটি অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা।

এবিষয়ে জানতে কহিনূর বেগমের বাড়িতে গেলে সাংবাদিক পরিচয় পেলে মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে সটকে পড়েন ওই নারী। পরে পুলিশ সদস্য মহিব উল্ল্যাহর সাথে যোগাযোগের নাম্বার চাইলে ভেতর থেকে নিজেকে পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী দাবি করে ওই নারী এক উঠতি যুবতী নারীকে দিয়ে ভিডিও শুরু করে। স্থানীয়রা বলছে, ওই যুবতীকে কেউই চিনেন না। পরে গণমাধ্যমকর্মীরা চলে যেতে চাইলে পুলিশ সদস্যের স্ত্রী ঘরের ভেতর থেকে বলেন পুলিশ বলেছে তাকে কারো সাথে কথা না বলার জন্য, তবে নিজের মোবাইলে এক পুলিশ সদস্যকে ফোন করে সাংবাদিকেদের কথা বলতে বলেন, অপর প্রান্তের ওই ব্যক্তিটি চন্দ্রগঞ্জ থানার পুলিশ দুলাল বলে নিজেকে পরিচয় দিয়ে বলেন, স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ কয়েকজনকে উদ্ধার করেছেন স্থানীয় পুলিশ। পরে তারা পাওনা টাকা ও অবরুদ্ধের ঘটনায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। এদিকে ওই নারী পুলিশ সুপারের কাছে মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন বলেও জানায় তিনি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য একেএম তারেক রহমান বলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই পুলিশ সদস্যের স্ত্রীর কাছে বিভিন্ন লোকজন টাকা পাওয়ার অভিযোগ দিয়ে আসছিলো। এনিয়ে এলাকায় বহু সালিশ ধরবার হয়েছে। কারো কারো টাকা কিছু ফেরত দিলেও বেশিরভাগ পাওনাদার ওই পুলিশ সদস্যের স্ত্রীর হাতে লাঞ্চিত হয়েছে। ঘটনার সময় কয়েকজন পাওনাদার ওই বাড়িতে পাওনা টাকার বিষয়ে জানতে যায়। এসময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনিও তাদের সাথে ওই পুলিশ সদস্যের বাড়িতে যান। এসময় পুলিশ সদস্যের স্ত্রীকে পরিচয় দিয়ে পাওনাদারদের সাথে ঘরে প্রবেশ করলে কিছু বুঝে উঠার আগেই ওই নারী অতর্কিত হামলা চালিয়ে বাহির থেকে ঘরে তালা দিয়ে হুমকি দেয়া শুরু করে। এসময় বাহিরে ওই নারীর দেবর অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য ও স্থানীয় লোকজনও ছিলেন। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান, প্রশাসন ও বাধ্য হয়ে জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন করি। প্রায় আড়াই ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর ওই নারীর কবল থেকে পুলিশ উদ্ধার করে বলে জানালেন এই জনপ্রতিনিধি।

এবিষয়ে পুলিশের দায়িত্বশীল কারো সাথে কথা বলা এখনো সম্ভব হয়নি। এনিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।