মোঃওয়াহিদুর রহমান মুরাদ :
লক্ষ্মীপুরে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী (শিশু) বলৎকারের অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষক হোসাইন মাহমুদকে (২৭) কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। সোমবার (১৭ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোসলেহ উদ্দিন মামলা ও কারাগারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে রাত ১টার দিকে শহর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইনচার্জ) মো.জহিরুল আলম পৌরসভার (১২নং ওয়ার্ড) লাহারকান্দি এলাকায় একটি বাড়ি থেকে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে।
অভিযুক্ত শিক্ষক হোসাইন মাহমুদ লক্ষ্মীপুর পৌরসভার পশ্চিম লাহারকান্দি ‘তাহ্ফিজুল কুরআন ওয়াসসুন্নাহ্ মাদরাসার’ আরবি শিক্ষক ও সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরমনসা গ্রামের হাফিজ মাষ্টার বাড়ির সালাউদ্দিনের ছেলে। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থী (ছাত্র) ওই মাদরাসার হাফেজী ৮ পাহারা পড়ছেন।
পুলিশ ও ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থী পড়ালেখা শেষ করে তার সহপাঠীদের সঙ্গে ঘুমাতে যায়। রাত ১১টার দিকে শিক্ষক হোসাইন মাহমুদ তার কক্ষে ডেকে নেয় ছাত্রকে। একপর্যায়ে জোরপূর্বক ছাত্রকে (বলৎকার) সর্বনাশ করে শিক্ষক। পরে শিক্ষার্থী মাদরাসা থেকে কৌশলে তার বাড়িতে চলে যায়। মাদরাসা থেকে ১ কিলোমিটার উত্তরে তার বাড়ি। ওই শিক্ষক মাদরাসার অপর দুই শিক্ষার্থীকে সঙ্গে নিয়ে (ক্ষতিগ্রস্থ) ছাত্রের বাড়িতে যান। এর-আগেই শিক্ষার্থী তার মা-বাবার কাছে সবকিছু খুলে বলে। এরমধ্যেই অভিভাবকরা থানায় পুলিশকে বিষয়টি জানিয়ে রাখে। শিক্ষককে বাড়িতে আটকিয়ে রেখে পুলিশে সোর্পদ করে। পরে (আজ) সোমবার দুপুরে শিক্ষার্থীর বাবা বাদি হয়ে সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
জানতে চাইলে ‘তাহ্ফিজুল কুরআন ওয়াসসুন্নাহ্ মাদরাসার’ প্রধান শিক্ষক ও পরিচালক মো. ফয়েজ বলেন বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ যদি শিক্ষার্থীর সাথে খারাপ কাজ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আমি সহয়তা করবো।
ওসি মোসলেহ উদ্দিন জানান, এ বিষয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন একটি মামলা হয়েছে। দুপুরে অভিযুক্ত শিক্ষককে আদালতে পাঠালে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দেয়।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার (১২নং ওয়ার্ড) পশ্চিম লাহারকান্দি গ্রামের খাঁ-গো বাড়ি সংলগ্ন অবস্থিত ‘তাহ্ফিজুল কুরআন ওয়াসসুন্নাহ্ মাদরাসার’ গতবছর ২০২১ সালেও একইভাবে এক শিক্ষার্থী (বলৎকার) সর্বনাশের শিকার হয়। সেইসময় সঠিক বিচার না হওয়ায়। আজ আরেক শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার হয়। এতে স্থানীয় গ্রামবাসী এ মাদরাসার পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে তদন্ত করে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন