ঢাকা ০৭:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে স্বামীকে শ্বাসরোধে হত্যায় স্ত্রীর ১০ বছরের সাজা।

মাহমুদুর রহমান মনজু ,লক্ষ্মীপুর:
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামী সহিদ হোসেনকে (৪৫) শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে স্ত্রী আমেনা বেগমের (৩৮) ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদলত। একই সঙ্গে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আমেনা বেগম রায়পুরের বামনী ইউনিয়নের বামনী গ্রামের মৃত মমিনুল হকের মেয়ে। তার স্বামী ভিকটিম সহিদ হোসেন একই এলাকার আবদুল করিম হাজী বাড়ির মৃত চান মিয়ার ছেলে।

জানা গেছে, সহিদ জীবিত থাকা অবস্থায় তার ৩ ছেলে ও ১ মেয়ে ছিল। তার মৃত্যুর সময় স্ত্রী আমেনা তিন মাসের গর্ভবতি ছিলেন। পরে আমেনা একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। রায় ঘোষণার পর ১৬ মাস বয়সী শিশু ফাতেমা আক্তার মারিয়াকে নিয়েই আদালতের লকারে যেতে হয়েছে দন্ডপ্রাপ্ত আমেনাকে। রায় ঘোষণার সময় তিনি শিশু কন্যাকে কোলে নিয়ে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে জামিনে বাহিরে ছিলেন তিনি।

এজাহার সূত্র জানায়, জীবিকার তাগিদে সহিদ জীবনের দীর্ঘ সময় প্রবাসে ছিলেন। অসুস্থতার কারণে ২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর প্রবাস জীবন ছেড়ে তিনি দেশে চলে আসেন। এর পর থেকে আমেনার সঙ্গে তার পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া বিবাদ হয়। ২০২১ সালের ২২ মার্চ রাতের খাবার শেষে তারা ঘুমাতে যায়। পরদিন সকালে আমেনার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ঘরে ঢুকে সহিদকে মৃত দেখতে পায়। পরে স্বাভাবিক মৃত্যু ভেবে মরদেহ দাফনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। গোসল করানোর সময় শরীরে কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। খবর পেয়ে পরদিন পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

২০২২ সালের ২৬ এপ্রিল প্রাপ্ত ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে সহিদকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। পারিবারিক কলহের জের ধরে মুখ চেপে ধরে আমেনা সহিদকে হত্যা করে।
এ ঘটনায় ২৯ এপ্রিল নিহতের ভাই আবদুল আলী খোকন (৫১) বাদী হয়ে রায়পুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে তার ভাবী আমেনা বেগমকে আসামী করা হয়। পরে ২৩ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রামগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইয়াছির আরাফাত আমেনা বেগমকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন।

দীর্ঘ শুনানী ও সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত আমেনার বিরুদ্ধে রায় দেন।

জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

চুরির অপবাদে প্রকাশ্যেই খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন,জড়িতদের ধরতে অভিজান চলছে – ওসি সদর

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে স্বামীকে শ্বাসরোধে হত্যায় স্ত্রীর ১০ বছরের সাজা।

আপডেট : ০৩:৫৫:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৩

মাহমুদুর রহমান মনজু ,লক্ষ্মীপুর:
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামী সহিদ হোসেনকে (৪৫) শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে স্ত্রী আমেনা বেগমের (৩৮) ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদলত। একই সঙ্গে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আমেনা বেগম রায়পুরের বামনী ইউনিয়নের বামনী গ্রামের মৃত মমিনুল হকের মেয়ে। তার স্বামী ভিকটিম সহিদ হোসেন একই এলাকার আবদুল করিম হাজী বাড়ির মৃত চান মিয়ার ছেলে।

জানা গেছে, সহিদ জীবিত থাকা অবস্থায় তার ৩ ছেলে ও ১ মেয়ে ছিল। তার মৃত্যুর সময় স্ত্রী আমেনা তিন মাসের গর্ভবতি ছিলেন। পরে আমেনা একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। রায় ঘোষণার পর ১৬ মাস বয়সী শিশু ফাতেমা আক্তার মারিয়াকে নিয়েই আদালতের লকারে যেতে হয়েছে দন্ডপ্রাপ্ত আমেনাকে। রায় ঘোষণার সময় তিনি শিশু কন্যাকে কোলে নিয়ে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে জামিনে বাহিরে ছিলেন তিনি।

এজাহার সূত্র জানায়, জীবিকার তাগিদে সহিদ জীবনের দীর্ঘ সময় প্রবাসে ছিলেন। অসুস্থতার কারণে ২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর প্রবাস জীবন ছেড়ে তিনি দেশে চলে আসেন। এর পর থেকে আমেনার সঙ্গে তার পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া বিবাদ হয়। ২০২১ সালের ২২ মার্চ রাতের খাবার শেষে তারা ঘুমাতে যায়। পরদিন সকালে আমেনার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ঘরে ঢুকে সহিদকে মৃত দেখতে পায়। পরে স্বাভাবিক মৃত্যু ভেবে মরদেহ দাফনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। গোসল করানোর সময় শরীরে কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। খবর পেয়ে পরদিন পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

২০২২ সালের ২৬ এপ্রিল প্রাপ্ত ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে সহিদকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। পারিবারিক কলহের জের ধরে মুখ চেপে ধরে আমেনা সহিদকে হত্যা করে।
এ ঘটনায় ২৯ এপ্রিল নিহতের ভাই আবদুল আলী খোকন (৫১) বাদী হয়ে রায়পুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে তার ভাবী আমেনা বেগমকে আসামী করা হয়। পরে ২৩ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রামগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইয়াছির আরাফাত আমেনা বেগমকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন।

দীর্ঘ শুনানী ও সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত আমেনার বিরুদ্ধে রায় দেন।

জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।