ঢাকা ১০:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রায়পুরে ৩ জেলের সন্ধান ১৫দিনেও না মেলায় আদালতে মামলা দায়ের, ডিবিকে তদন্তের নির্দেশ।

মাসুদ হোসাইন, স্টাফ রিপোর্টার :
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কবলে পড়ে মেঘনা নদীতে নিখোঁজ হওয়া লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের ৩ জেলের সন্ধান ১৫ দিনেও মেলেনি। এর মধ্যে নিখোঁজ লিটন বেপারীর বাবা আবুল কাশেম বেপারী ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লিটনকে গভীর নদীতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বাদীর আইনজীবী মিজানুর রহমান মুন্সি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলাটি আদালতের বিচারক ভিক্টোরিয়া চাকমা আমলে নিয়েছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। খুব শিগগিরই আদেশনামা ডিবির কাছে পৌঁছানো হবে।

এজাহার সূত্র জানায়, বাদী কাশেম অভিযুক্ত রাসেল বেপারীর কাছে ২০ হাজার টাকা পাওনা ছিল। ওই টাকা সময়মতো তিনি বাদীকে ফেরত দিতে পারেননি। পরবর্তীতে কৌশলে ২৪ অক্টোবর রাতে ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে তার ছেলেকে অভিযুক্তরা মেঘনায় মাছ শিকারে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে লিটনকে অভিযুক্তরা ধাক্কা দিয়ে গভীর মেঘনায় ফেলে দেয়। পরদিন অভিযুক্তরা বাড়িতে ফিরলে লিটনকে দেখা যায়নি। তার আত্মীয়স্বজনরা জিজ্ঞেস করলেও সদুত্তর দিতে পারেনি অভিযুক্তরা। এ নিয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রায়পুর আদালতে ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বাদী আবুল কাশেম বেপারী বলেন, রাসেল টাকা আত্মসাৎ করতেই কৌশলে আমার ছেলেকে নদীতে নিয়ে হত্যা করেছে। ১৫ দিন হয়ে গেল আমার লিটনকে কোথাও পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চেষ্টা করেও অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

তবে ঘটনার দিন একসঙ্গে নৌকায় থাকা জেলে রাসেল হাওলাদার জানিয়েছে, রাসেল বেপারীর নৌকায় তারা কাজ করেন। নদীতে মাছ শিকার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু উত্তাল নদীতে মাছ বেশি পাওয়ার আশায় দুই নৌকাতে তারা ১০ জন মাছ শিকারে যায়। নদীর কমলনগর এলাকায় তাদের নৌকা ছিল। ঝড়ের সময় ঢেউয়ের সঙ্গে তাদের একটি নৌকার তলা ফেটে যায়। এতে নৌকাটি অন্যটির সঙ্গে বাঁধা হয়। কিছুক্ষণ পরই তাদের নৌকাটি উল্টে ডুবে তারা নদীতে পড়ে যায়। একপর্যায়ে ভেসে তারা ৭ জন কমলনগরের মতিরহাট এলাকায় কূলে উঠে। কিন্তু লিটন, শিপন বেপারী ও সুজন সরদারকে কোথাও পাওয়া যায়নি।

রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, জেলেদের ফিরে পেতে তারা ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সঙ্গে নদীতে গেছেন। কমলনগর, রামগতি ও ভোলার অংশের সম্ভাব্য স্থানে তাদের খোঁজা হয়েছে। তাদের না পাওয়ায় পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন রয়েছেন।

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, জেলে নিখোঁজের ঘটনায় থানায় একটি জিডি হয়েছে। তাদের সন্ধান পেতে নদী ও তীরবর্তী এলাকায় খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, নিখোঁজ শিপন রায়পুর উপজেলার চরকাছিয়া গ্রামের আবদুর রব বেপারীর ছেলে ও সুজন একই এলাকার রব সরদারের ছেলে।

ট্যাগ :

‘দাতুক’ খেতাবধারী এক বাংলাদেশি গ্রেফতার

রায়পুরে ৩ জেলের সন্ধান ১৫দিনেও না মেলায় আদালতে মামলা দায়ের, ডিবিকে তদন্তের নির্দেশ।

আপডেট : ১১:২১:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর ২০২২

মাসুদ হোসাইন, স্টাফ রিপোর্টার :
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কবলে পড়ে মেঘনা নদীতে নিখোঁজ হওয়া লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের ৩ জেলের সন্ধান ১৫ দিনেও মেলেনি। এর মধ্যে নিখোঁজ লিটন বেপারীর বাবা আবুল কাশেম বেপারী ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লিটনকে গভীর নদীতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বাদীর আইনজীবী মিজানুর রহমান মুন্সি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলাটি আদালতের বিচারক ভিক্টোরিয়া চাকমা আমলে নিয়েছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। খুব শিগগিরই আদেশনামা ডিবির কাছে পৌঁছানো হবে।

এজাহার সূত্র জানায়, বাদী কাশেম অভিযুক্ত রাসেল বেপারীর কাছে ২০ হাজার টাকা পাওনা ছিল। ওই টাকা সময়মতো তিনি বাদীকে ফেরত দিতে পারেননি। পরবর্তীতে কৌশলে ২৪ অক্টোবর রাতে ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে তার ছেলেকে অভিযুক্তরা মেঘনায় মাছ শিকারে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে লিটনকে অভিযুক্তরা ধাক্কা দিয়ে গভীর মেঘনায় ফেলে দেয়। পরদিন অভিযুক্তরা বাড়িতে ফিরলে লিটনকে দেখা যায়নি। তার আত্মীয়স্বজনরা জিজ্ঞেস করলেও সদুত্তর দিতে পারেনি অভিযুক্তরা। এ নিয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রায়পুর আদালতে ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বাদী আবুল কাশেম বেপারী বলেন, রাসেল টাকা আত্মসাৎ করতেই কৌশলে আমার ছেলেকে নদীতে নিয়ে হত্যা করেছে। ১৫ দিন হয়ে গেল আমার লিটনকে কোথাও পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চেষ্টা করেও অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

তবে ঘটনার দিন একসঙ্গে নৌকায় থাকা জেলে রাসেল হাওলাদার জানিয়েছে, রাসেল বেপারীর নৌকায় তারা কাজ করেন। নদীতে মাছ শিকার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু উত্তাল নদীতে মাছ বেশি পাওয়ার আশায় দুই নৌকাতে তারা ১০ জন মাছ শিকারে যায়। নদীর কমলনগর এলাকায় তাদের নৌকা ছিল। ঝড়ের সময় ঢেউয়ের সঙ্গে তাদের একটি নৌকার তলা ফেটে যায়। এতে নৌকাটি অন্যটির সঙ্গে বাঁধা হয়। কিছুক্ষণ পরই তাদের নৌকাটি উল্টে ডুবে তারা নদীতে পড়ে যায়। একপর্যায়ে ভেসে তারা ৭ জন কমলনগরের মতিরহাট এলাকায় কূলে উঠে। কিন্তু লিটন, শিপন বেপারী ও সুজন সরদারকে কোথাও পাওয়া যায়নি।

রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, জেলেদের ফিরে পেতে তারা ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সঙ্গে নদীতে গেছেন। কমলনগর, রামগতি ও ভোলার অংশের সম্ভাব্য স্থানে তাদের খোঁজা হয়েছে। তাদের না পাওয়ায় পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন রয়েছেন।

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, জেলে নিখোঁজের ঘটনায় থানায় একটি জিডি হয়েছে। তাদের সন্ধান পেতে নদী ও তীরবর্তী এলাকায় খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, নিখোঁজ শিপন রায়পুর উপজেলার চরকাছিয়া গ্রামের আবদুর রব বেপারীর ছেলে ও সুজন একই এলাকার রব সরদারের ছেলে।