প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪, ১২:০৯ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ নভেম্বর ২২, ২০২৩, ৭:১৮ পি.এম
হত্যা মামলায় আপোষ,জমি না পেয়ে বিচারের দাবীতে বাবা লাশ খুঁড়ে প্রতিবাদ।
গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২২ তারিখে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরকাছিয়া গ্রাম এলাকার মেঘনা নদীতে ড্রেজিং (অবৈধ বালু উত্তোলন) নিয়ে
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের (বহিস্কৃত) যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শাহজালাল রাহুল ও একই এলাকার ইউপি সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলামের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এসময় দুই পক্ষের ৪০/৫০ জন অনুসারী লাঠি, ও দা নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে রাসেল নামে এক কিশোর ছুরিকাঘাতে নিহত হন। ওই ঘটনায় রাহুলসহ ছয় জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করেছে পুলিশ।
(২২ নভেম্বর) সকাল ৯ টার দিকে নিহত রাসেলের বাবা ৮ মাস পর লাশ কবর থেকে তুলে বাজারে বসে থাকতে দেখেন
স্থানীয়রা ।পরে এলাকাবাসী পুলিশ ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানালে তারা ঘটনাস্থলে আসেন।
স্থানীয় এলাকা সূত্রে জানা যায়, ইউপি সদস্য নজরুল মেম্বার রাহুলের বোনের জামাই। আবার নজরুল মেম্বারের বড় ভাই নিহতের বাবা। সে সূত্রে তারা একে অপরের আত্মীয়। তারই পেক্ষিতে নজরুল মেম্বারের চাপে নিহত রাসেলের পরিবার নজরুল মেম্বারের মাধ্যমে হত্যাকারীদের সাথে আপোষ করতে বাধ্য হোন। তখন নিহত পরিবারকে কিছু জমি ও টাকা দেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু আসামিরা বের হয়ে নজরুল মেম্বারকে সব কিছু বুঝিয়ে দিলেও তিনি নিহতের পরিবারকে বুঝিয়ে না দিয়ে উল্টো হুমকি-ধামকিসহ এলাকা ছাড়া করার কথা বলেন। টাকা চাওয়ার কারণে গতকাল নজরুল মেম্বারের বড় ভাই বাবুল বেপারি নিহতের মা ফাতেমা বেগমকে মারধর করতে আসেন।
এ বিষয় নিহতের বাবা মনির হোসেন ভুট্টু বলেন, তারা আমার ছেলেকে আমার কাছ থেকে কেঁড়ে নিয়েছে, ২৮ শতাংশ জায়গা দেওয়ার কথা ছিলো। কোন টাকা পয়সা বা জমি তো দেয়নি, উল্টো আমাকে এগুলো দিয়েছে বলে এলাকায় আমার নামে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। তার জন্য কি করবো মনের কষ্টে ছেলের লাশ কবর থেকে তুললাম। এখন আবার কবর দিয়ে দিয়েছি।
নিহতের মা ফাতেমা বেগম বলেন, আমার ছেলে চলে গেছে। ছেলে তো আর ফিরে পাবো না। মামলা করার সময় আমাকেও একটু জানায় না। আমার থেকে শুধু একটা সাইন নিছে, নজরুল মেম্বারে কি লেখছে বলতে পারি না। তার কিছুদিন পর নজরুল মেম্বার বলতে আছে সবাই তো আমরা নিজেরা নিজেরা মামলা তুলে নিতাম। রাহুলের কাছ থেকে আমাদেরকে মামলা খরচ বাবদ কিছু জায়গা নিয়ে দিবে। শুনছি রাহুল নজরুল মেম্বারকে জায়গা বুঝিয়ে দিছে কিন্তু নজরুল মেম্বার আমাদেরকে এখনো বুঝিয়ে দেয় না। জায়গার কথা বললে নজরুল মেম্বারের বড় ভাই বাবুল বেপারি ও তার ছেলে আমাকে মারধর করতে আসে এবং আমাকে বলে আমি যদি জায়গার কথা বলি আমাকে মেরে নদীতে ফেলে দিবে এবং ঘরে ঝুঁলিয়ে রাখবে। কোন একদিন হয়তোবা শুনবেন আমার লাশ কোন জায়গায় পড়ে আছে।
অভিযুক্ত বাবুল বেপারি বলেন, মেম্বারের সাথে জমি নিয়ে তাদের কি কথা হয়েছে আমি কিছুই জানিনা এবং তারা দুইজনেই আমার আপন ছোট ভাই, আমি কেনো আরেক ভাইয়ের পক্ষ হয়ে আরেক ভাইকে মারতে যাবো? আমার বিরুদ্ধে যেই অভিযোগ গুলো দিছে তা সম্পুর্ণ মিথ্যা। এই বিষয়ে মেম্বারের সাথে কথা বললে ভালো করে জানতে পারবেন।
এ বিষয়ে জানতে ইউপি সদস্য নজরুল মেম্বারের বাড়িতে গিয়ে না পেয়ে কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেন নাই।
৮নং দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সালেহ মিন্টু ফরাজী বলেন, সকালে ঘটনা শুনে আমি সাথে সাথে সেই যায়গা গিয়ে দেখি নিহতের বাবা লাশ নিয়ে বসে আছে। তাকে জিগ্যেস করলে উনি বলেন, তার ছেলেকে দেখতে মন চাওয়ার কারণে সে কবর থেকে লাশ তুলছে, পরে আমি উপস্থিত থেকে লাশ আবার তার মাধ্যমে কবর দিয়ে দেই, টাকা পয়সা ও জমির বিষয় আমি কিছু জানি না।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসিন ফারুক মজুমদার বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে, ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের উপস্থিততে লাশ আবার কবর দেওয়া হয়েছে। কেনো লাশ তুলছে আমাদেরকে এ বিষয় কিছুই বলে নাই নিহতের বাবা।
সম্পাদক ও প্রকাশক - মোঃওয়াহিদুর রহমান মুরাদ । ম্যানেজিং এডিটর - মেহেদী হাসান রাকিব। নির্বাহী সম্পাদক - তাহসিন হাওলাদার। সহ-সম্পাদক -মো.আমিনুল ইসলাম রাজু। প্রধান কার্যালয় - মনতাজ ম্যানশন(২য় তলা) দালাল বাজার । যোগাযোগ 01711122829