আগামী বুধবার (১৪ডিসেম্বর) প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে। তবে এই নিয়োগে শূণ্য পদ যাচাই-বাছাই শেষে বিজ্ঞপ্তির অনুমোদিত পদের সাথে ৫ হাজার পদ বাড়ানো হবে।
আজ সোমবার (১২ডিসেম্বর) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ মুক্ত প্রভাতকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।তিনি বলেন, দুই দফায় শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ফল প্রকাশের তারিখ পেছানো হয়েছে। মূলত পদ সংখা বৃদ্ধির জন্যই ফল প্রকাশের তারিখ পেছানো হয়েছিল। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের শূণ্য পদ যাচাই-বাছাই শেষে ৫ হাজার পদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগে পদ সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশজুড়ে শিক্ষকদের শূণ্য পদের সংখ্যা নির্ণয় করে শিক্ষক নিয়োগে পদ সংখ্যা বাড়ানো হতে পারে।
যদিও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা ৩২ হাজার ৫৭৭টি পদে নিয়োগের কথা বলেছে। তবে এর সঙ্গে আরো ১০ হাজার পদ যুক্ত করা হতে পারে।
মূলত পদ সংখ্যা বৃদ্ধির জন্যই প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত প্রকাশের তারিখ পিছিয়ে আগামী ১৪ ডিসেম্বর করা হয়েছে।প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ গতকাল বৃহস্পতিবার মুক্ত প্রভাতকে জানান, ‘কি পরিমাণে সহকারী শিক্ষক পদ শূণ্য রয়েছে, এনিয়ে আমরা গবেষনা করছি। গবেষনার ভিত্তিতেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত পদের চেয়ে শিক্ষক পদ বাড়ানো হবে।
তিনি আরো বলেন, গত দুই বছর সময় পার হয়েছে শুধু এই নিয়োগ পরিচালনায়। এমনো জানাগেছে-সহকারী শিক্ষক পদে আবেদন করা অনেকেই বিভিন্ন জায়গায় ভালো চাকরি করছেন।
তিনি আরো বলেন, মূলত এসব বিষয় নিয়েই আমরা পর্যালোচনা করছি। নির্ণয় করা হচ্ছে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শূণ্য পদের সংখ্যা। এর পরই শিক্ষক নিয়োগে পদ সংখ্যা বাড়ানো হবে।সবশেষ শূণ্য পদসমূহে নিয়োগ দেওয়া হবে কি না প্রশ্নের জবাবে সচিব মুক্ত প্রভাতকে বলেন, ‘শূণ্য পদ নিয়ে আমরা গবেষনা করছি। শূণ্য পদ এখনই ধরা হবে, না কি চলতি বছরের ২২ জুন ধরা ধরা হবে, না কি জানুয়ারী পর্যন্ত ধরা হবে, তা নিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এগুলো ছাড়াও সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় কি পরিমাণে শিক্ষক পদ শূণ্য রয়েছে-তা নিয়েও কাজ করা হচ্ছে। এসব বিষয় নিয়ে আগামী ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হবে। আর ১৪ ডিসেম্বর-ই প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের ফল প্রকাশ করা হবে।প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র বলছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সহকারী শিক্ষকের পদ বাড়িয়ে ৪৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগের ঘোষণা দেয়। পরে এই সংখ্যা কমিয়ে এক বিজ্ঞপ্তিতে ৩২ হাজার ৫৭৭টি পদে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তের কারণে আবেদনকারীরা আন্দোলনে নামেন।
এছাড়া আন্দোলনকারীরা দফায় দফায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ঘেরাও করে আন্দোলন চালিয়ে যায়।
তারই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে শূণ্য পদে শিক্ষক নিয়োগ দিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়। তারই ভিত্তিতে প্রাথমিকের সহাকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশ না করে তারিখ পেছানো হয়।খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, দেশে প্রায় ১২ হাজার সহকারী শিক্ষকের পদ শূণ্য রয়েছে। প্রতিদিনই এর সংখ্যা আরো বাড়ছে। একারণে আরো ১০ হাজার শূণ্য পদ যোগ করে ফলাফল প্রকাশ করা হতে পারে।
বর্তমানে দেশজুড়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৬২০টি। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষক আছেন মোট ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৯৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ শিক্ষক রয়েছেন ১ লাখ ২৬ হাজার ৫৩০ এবং নারী শিক্ষক ২ লাখ ২৯ হাজার ৯৩৬ জন।নিয়োগ বিধিতে যা আছে
প্রাথমিকের সহকারি শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯ এর ৮ ধারার ২ নম্বর উপধারার (ঘ) তে বলা হয়েছে- ‘ নির্ধারিত কোটার শিক্ষকদের মধ্যে ক্যাটাগড়ি প্রতি (নারী ৬০ শতাংশ, পোষ্য ২০, ও অবশিষ্ট পুরুষ) অবশ্যই ২০ শতাংশ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রীধারী প্রার্থীদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। তবে শর্ত থাকে যে , এভাবে ২০ শতাংম কোটা পূরণ না হলে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া যাবে।’
সূত্র বলছে, শিক্ষক নিয়োগে তিন ধাপে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হলেও আজ একসাথেই ফল প্রকাশ করা হবে। পরীক্ষার প্রথম ধাপে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ৪০ হাজার ৮৬২জন, দ্বিতীয় ধাপে ৫৩ হাজার ৫৯৫ এবং তৃতীয় ধাপে ৫৭ হাজার ৩৬৮ জন।এদিকে ২০২০ সালের ২০ অক্টোবরে সহকারি শিক্ষকের ২ হাজার ৫৭৭টি শূণ্য পদে নিয়োগের জন্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এতে মোট আবেদন করেন ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৬১ জন প্রার্থী।