লক্ষ্মীপুরে আলোচিত নোমান-রাকিব হত্যা মামলার প্রধান আসামি আবুল কাশেম জিহাদীর সহযোগী শরীফসহ এ মামলার ১৭ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।
উদ্ধার করা হয় ৪টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং স্বেচ্ছায় হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে মামলার ৩ নম্বর আসামি ফয়সাল দেওয়ান ও ১৮ নম্বর আসামি আলমগীর হোসেন ওরফে টাকলু আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) রাত ৮টা পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে গণমাধ্যমকর্মীদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
এসপি বলেন, সম্প্রতি এ মামলার ৩ ও ১৮ নম্বর আসামি আদালতে স্বীকারোক্তি জবানবন্দী দিয়েছেন, এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে যারা জড়িত ছিলো সবার হাতে শরীফ নামে এক ব্যক্তি অস্ত্র গুলো দিয়েছে এবং ৪/৫ ভাগে অবস্থান নেওয়ার জন্য দিকনির্দেশনা দেয়। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী নোমান-রাকিবকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ আরও জানান , নোমান-রাকিব হত্যা মামলার প্রধান আসামি আবুল কাশেম জিহাদীকে গ্রেফতার করতে পুলিশ , র্যাব , কাউন্টার টেররিজম (CTTC) টিম যৌথ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে আমরা সকলে সমন্বিতভাবে কাজ করার কারণে ১৭ জন আসামিকে গ্রেফতার করতে পারলাম। ১৭ জনের মধ্যে ১০ জন এজাহার নামীয় আসামী ও ৭ জন সন্দেহভাজন।
সর্বশেষ আসামী মো. রাকিব হাসান ওরফে স্যুটার রাকিব (৩০) ও মো. লিটন ওরফে চাঁন মিয়াকে (৪৩) গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া জিজ্ঞাসাবাদে বুধবার দিবাগত রাত ২টা ২৫মিনিটে পোদ্দার বাজার টু নাগের হাট রাস্তার পাশে অবস্থিত ব্রিজের নিচে কচুরি-পানা’র নিচ থেকে ২টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
চান মিয়া ,শ্যূটার রাকিব এবং কিলার শরিফ এরা প্রধান আসামী আবুল কাশেম জেহাদীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত। চাটখিল – রামগঞ্জ – সোনাইমুড়ি ও বশিকপুরে তাদের রয়েছে সন্ত্রাসের বিশাল নেটওয়ার্ক ।এলাকাবাসী থেকে জানা যায় স্কুলের গন্ডি না পেরুতেই এরা কিশোর গ্যাং থেকে নিজ নিজ নামে বাহিনী গড়ে তুলে অপকর্ম করে যাচ্ছিলো।
প্রসঙ্গত, ২৫ এপ্রিল রাতে সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের পোদ্দার বাজার এলাকায় জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ আব্দুল্লাহ আল নোমান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিব ইমামকল গুলি করে হত্যা করা হয়। এসময় তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও মোবাইল নিয়ে যায় দূর্বৃত্তরা। গুলির শব্দ শুনে ঘটনাস্থল গিয়ে স্থানীয় লোকজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা নোমানকে মৃত ঘোষনা করেন। ছাত্রলীগ নেতা রাকিবকে সংকটাপন্ন অবস্থায় ঢাকায় নেয়ার পথে মারা যান তিনিও। ২৬ এপ্রিল রাত ১ টার দিকে নিহত নোমানের বড় ভাই ও বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বাদী হয়ে ৩৩ জনের বিরুদ্ধে চন্দ্রগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কাশেম জিহাদীকে প্রধান করে ১৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলার পর থেকে র্যাব ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৭ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।