ডেস্ক রিপোর্ট :
নারীদের অগ্রগতি, শিক্ষায় অর্জন, দারিদ্র্য হ্রাসের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক পত্রিকা ওয়াশিংটন পোস্ট। দৃঢ়চেতা নেতৃত্বের পাশাপাশি একজন নারী হিসেবেও শেখ হাসিনার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছে পত্রিকাটি। সোমবার (৩ অক্টোবর) ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট পেটুলা ডিভোরাকের লেখা এক নিবন্ধে এই প্রশংসা করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ভার্জিনিয়ার হোটেল রিৎজ-কার্লটনে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে নিবন্ধটি লেখা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর সফলতার কথা উল্লেখ করে ডিভোরাক লিখেছেন, শেখ হাসিনা বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘসময় ক্ষমতায় থাকা নারী সরকার প্রধান। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী এমন একটি দেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন যে দেশের জনসংখ্যা রাশিয়ার চেয়ে বেশি। শেখ হাসিনা অন্তত ২০টি হত্যাচেষ্টার থেকে রক্ষা পেয়েছেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। এসময় উদ্ধৃত করা হয়েছে ২০০৪ সালের রক্তাক্ত গ্রেনেড হামলাও বিষয়টি।
পেটুলা ডিভোরাক তার লেখা শুরু করেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে আসা দর্শনার্থীদের কথা বর্ণনা করে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে ছয় বছর বয়সী কন্যা জয়াকে নিয়ে হোটেলের বলরুমে অপেক্ষা করছিলেন আব্দুল্লাহ নিয়ামি নামের এক ব্যক্তি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একনজর দেখাতে তিনি তার সন্তানকে নিয়ে এসেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশেও অদূর ভবিষ্যতে শেখ হাসিনার মতো এমন দূরদর্শী নারী সরকারপ্রধান দেখা যাবে কিনা-সে কথা উল্লেখ করেছেন লেখক।
নিবন্ধে তুলে ধরা হয়েছে, চার বার (এখন পর্যন্ত ১৮ বছর) বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা শেখ হাসিনা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চিন্তা ও চেতনাকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরে যাচ্ছেন। একটি জটিল, বিপর্যস্ত দেশের নেতা হিসেবে শেখ হাসিনার অবদানের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। নিবন্ধে শেখ হাসিনা নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির উচ্চ ধারণার বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের মূল্যায়ন তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার সময় বিশ্বের একটি দরিদ্রতম দেশ হলেও ২০২৫ সালে বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশ হতে যাচ্ছে।
উল্লেখ করা হয়েছে, মিয়ানমারে সহিংসতার মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া দশ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে পেটুলা ডেভোরাক লিখেছেন, শিবিরে রোহিঙ্গাদের জীবন খুব ভালো নয়, তারা নিজ দেশে ফিরতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী পরিস্থিতির সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা হয় না। যুক্তরাষ্ট্র হলো বিশাল দেশ, অনেক জমি রয়েছে, কাজের সুযোগ বিস্তর।
শেখ হাসিনা বলেছেন, জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম, জনসংখ্যা ১৭ কোটির বেশি, কিন্তু আয়তনে যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনের মতো।
দেশে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার সরকারের জিরো টলারেন্স নীতিরও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করা হয়েছে ওই নিবন্ধে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, একজন নারী হিসেবে তিনি গভীরভাবে বুঝতে পারেন বাংলাদেশে দারিদ্র্য ও শিক্ষার সংগ্রামে নারীরা যে প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হন এবং কীভাবে এগুলো একটি জাতির অগ্রগতিকে মন্থর করে দিতে পারে। গত দশকে সরকার দেশে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় দারিদ্র হ্রাস, শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি এবং আবাসনের উন্নতি করেছে।
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেছেন, সাধারণ ইট ও টিনের ঘর হলেও বাংলাদেশ আবাসনকে মানবাধিকার হিসেবে গ্রহণ করেছে। এই বাড়িগুলো স্বামী ও স্ত্রীর নামে দলিল করে দেওয়া হচ্ছে। যদি তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয় তাহলে নারী মালিক হবেন, পুরুষ নয়।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাস্থ্যসেবা ও আবাসনের মাধ্যমে বাংলাদেশের নারীদের জন্য বিনিয়োগ দেশকে এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে।