লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক সড়ক শত শত কোটি টাকার কাজ শেষ হলেও দু'পাশে গাছ লাগানোর উদ্যোগ নেই ৩ বছরেও সওজ - বন বিভাগের। উপকূলীয় জেলার আঞ্চলিক মহাসড়ক এটি। এ রাস্তায় চলাচল চাঁদপুর-ভোলা-বরিশাল-চৌমুহনী-ঢা
ব্যস্ততম হওয়ায়, এ রাস্তাটি ফোর লেন করার জন্য এলাকাবাসী ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের দাবি দীর্ঘদিনের। ৪ বছর আগে রাস্তার প্রায় ৪০ কিলোমিটার সংস্কার করা হয়। সংস্কারের আগে রাস্তার দু’পাশে থাকা কয়েক হাজার গাছ কেটে ফেলা হলেও, সংস্কারের এক বছরেও নতুন করে আর গাছ লাগানো হয়নি। এতে করে বাড়ছে সড়ক দূর্ঘটনা ও তীব্র তাপদাহে রাস্তার কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে ।
গত এক বছরে এ রাস্তায় দূর্ঘটনায় অর্ধ শতাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। রাখালিয়া, সর্দারবাড়ি, খাইল্লাগো পোল, ইটের পোল সহ অনেক চলাচলকৃত গাড়ি বিপরীতমুখী পরিবহনকে বাঁচাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে পুকুরে পড়ে যায়। এতে কয়েকশত কোটি টাকার মালামাল ও পরিবহন এবং চালক ও হেলপার ক্ষতিগ্রস্থ হন।
নিরাপদ সড়ক আন্দোলন নিয়ে কাজ করা প্রফেসার কার্তিক সেনগুপ্ত বলেন, সহসা রাস্তাটি ফোর লেনে উন্নিত করার সরকারের পরিকল্পনা না থাকলে, যেন দ্রুত রাস্তার দু’পাশে গাছের চারা লাগানো হয়।এতে করে উপকূলীয় এ জেলায় এদিকে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হবে, অন্যদিকে নিরাপত্তা বেষ্টনির ফলে দূর্ঘটনায় প্রাণহানি কমবে।
সওজ সূত্রে জানা যায়, সড়কটি আগে ১৮ ফুট চওড়া ছিল। এখন তা ২৪ ফুট করা হয়েছে। এছাড়াও দুই পাশে ছয় ফুট সম্প্রসারণের পাশাপাশি, পাঁচ ফুট করে আরও ১০ ফুট মাটি ফেলে ভরাট করা হয়েছে।
রায়পুরের বর্ডার বাজার থেকে লক্ষ্মীপুর সদরের গো হাটা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার নির্মাণের জন্য ৫৮ কোটি ৯৪ লাখ ১৩ হাজার ৫৭ টাকা বরাদ্দ হয়।লক্ষ্মীপুরের গো হাটা থেকে চন্দ্রগঞ্জ পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে ৭৪ কোটি ১৬ লাখ ৯৭ হাজার ৬৯ টাকা বরাদ্দ হয়। এর মধ্যে নতুন মাটি ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ রয়েছে আট কোটি ১৯ লাখ ২৭ হাজার ১১৮ টাকা। এর মধ্যে নতুন মাটি ব্যবহারের জন্য ১০ কোটি ৪০ লাখ ৬৫ হাজার ৯৩৯ টাকা বরাদ্দ রয়েছে।
পৃথক কাজ দুটি সম্পাদন করেন কুমিল্লার রানা বিল্ডার্স, হাসান বিল্ডার্স ও মেসার্স সালেহ আহমেদ। সংস্কারের আগে রাস্তাটির দু’পাশে সারি সারি বিশাল বৃক্ষে পরিণত ছিলো। রাস্তা প্রসস্ত করতে আকাশমনি শিশু রেইন ট্রিসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৩০হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়।
সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, সড়ক প্রসস্ত করন ও সংস্কার কাজের একবছর আগে সম্পন্ন হলেও নতুন করে আর গাছ লাগানো হয়নি। ফলে তার দু’পাশে কলা ও কচুসহ বিভিন্ন গাছে ছেয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, এ সড়কে ২১ টি রুটের মানুষ ও যানবাহনের চলাচল রয়েছে। দুপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনি না থাকায় যানবাহন সড়কের পাশের খালে বা পুকুরে পড়ে দুর্ঘটনা বাড়ছে।
রাখালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৃনাল কান্তি বলেন, তাঁদের এলাকার এক কিলোমিটার অংশে সড়কটি খুবই ঝুকিপুর্ণ। গত এক বছরে মারাত্নক দুর্ঘটনায় পন্যবাহী ট্রাক ও বাস খালে পড়ে শিশু-নারীসহ ১৫ ব্যাক্তি মারা যান ও জখম হয়েছেন ৩০ জন। সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) ভোরে চৌমহনীর উদ্দেশ্যে-বরিশাল থেকে ছেড়ে আসা পানবাহী ট্রাক রায়পুরের চালতাতুলী নামক স্থানে গুরুত্বপুর্ণ বাঁকে সিএনজিকে বাঁচাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে পুকুরে পড়ে যায়। এতে আড়াইলক্ষ টাকার পান ক্ষতিগ্রস্থসহ চালক ও হেলপার আহত হন।
লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুভ্রত দত্ত বলেন, সড়কের দুই পাশে গাছ লাগানো হয়েছে কয়েক কিঃমি ।তবে এটি ফোরলেন হয়ে যেতে পারে তাই গাছ লাগানো কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক ফিরোট আলম চৌধুরী বলেন ,বনানয় হচ্ছে বন বিভাগের কাজ। আমরা গাছ লাগাতে গেলেই সওজ তা বাঁধা দিচ্ছে। সওজ এর গাছ রোপণ ও পরিচর্চা সম্পর্কে কোন ধারণাই নেই।