মাহমুদুর রহমান মনজু, লক্ষ্মীপুর:
মেঘনার অভয়াশ্রম এলাকায় (১ মার্চ রোববার থেকে আগামী ৩০ এপ্রিল) পর্যন্ত দু’মাস লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় সব ধরনের মাছধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একই সময় মাছ ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও পরিবহনের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মৎস্য সংরক্ষণ আইন ১৯৫০-এর ১৩ ধারা অনুযায়ী মৎস্য অধিদপ্তর এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
এই উপলক্ষে ২৭ ফেব্রুয়ারী (রোববার) সকালে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের আয়োজনে জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট পিয়াংকা দত্তের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মো: আনোয়ার হোছাইন আকন্দ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নুরএ আলম, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: আমিনুল ইসলাম, কমলনগর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবদুল কুদ্দুস, জাতীয় মৎস্যজীবী জেলা শাখার সভাপতি রফিক ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ। সভায় মৎস্য সংরক্ষণ আইন রক্ষা করতে সকলের সহযোগীতা কামনা করা হয়।
সভায় জানানো হয় জাটকা রক্ষা ও ইলিশ মাছের বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০০৬ সাল থেকে চাঁদপুরের ষাটনল হতে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত মেঘনা নদীর নিম্ন অববাহিকার ১০০ কিলোমিটার নৌ-সীমাকে ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মেঘনা নদীর অভয়াশ্রমে মাছ ধরা বন্ধ রাখার জন্য জেলে পল্লীসহ মাছঘাট এলাকা এবং উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে নানা ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। লিফলেট, পোস্টার ও মাইকিং করার মাধ্যমে এলাকায় প্রচার-প্রচারণাও চালানো হচ্ছে। এছাড়া মাছ ধরা প্রতিরোধের জন্য মোবাইল কোর্টও পরিচালনার সিদ্ধানন্ত নেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: আমিনুল ইসলাম জানান, নিষিদ্ধ সময় জেলেদের মাছধরা থেকে বিরত রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ওই সময় বিকল্প কর্মসংস্থার ও পুনর্বাসনের আওতায় জেলায় এ বছর প্রায় ২৫ হাজার জেলেকে ৪০ কেজী করে খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে। নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকতে জেলেসহ সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানিয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো: আনোয়ার হোছাইন আকন্দ জানান, ২ মাস মেঘনা মাছ ধরা বন্ধ রাখার ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে । আইন ভঙ্গ করে নদীতে জাটকা ইলিশ ধরার চেষ্টা করলে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি মৎস্য বিভাগ, কোষ্টগার্ড, নৌপুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সকলে এ ব্যাপারে সর্তক থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ ছাড়া জেলেদের মাঝে চাউল বিতরণ করার সময় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটদের উপস্থিতিতে বিতরণ করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ প্রদান করেন।