কুপিয়ে স্বর্ণলংকার নিয়ে পালানোর পথে জনতার হাতে ২ ডাকাত আটক।
-
ডেস্ক রিপোর্ট :
-
আপডেট :
১২:৫৮:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুন ২০২৩
-
০
জন পড়েছেন
লক্ষ্মীপুর শহরের সামাদ মোড়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে একটি স্বর্ণের দোকান লুট করেছে দুর্বৃত্তরা। এসময় দোকানের মালিক অপু কর্মকারকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে।পালানোর সময় ডাকাতদলের গাড়ি চাপায় এক বৃদ্ধ পথচারী নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে আর কে শিল্পালয়ে এ লুটের ঘটনা ঘটে।
আহত অপু কর্মকারকে উদ্ধার করে প্রথমে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
দুর্বৃত্তরা কী পরিমাণ স্বর্ণ লুট করে নিয়ে গেছে, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অন্যদিকে লুট করে পালানোর সময় ঢাকা-রায়পুর মহাসড়কের ইটেরপুল এলাকায় ডাকাতদের পিকআপ ভ্যানের চাপায় সফি উল্যা (৬০) নামে এক পথচারী মারা গেছেন। তিনি রাস্তা নির্মাণের শ্রমিক ছিলেন। তার বাড়ি পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকায়। এসময় আহত হয়েছেন একই এলাকার ইসমাইল হোসেন (৫৫)। নিহত ব্যক্তির মৃতদেহ সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। আহত ইসমাইলকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয় জনতা দুজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন। তারা ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের সদর থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। তবে তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। তবে তাদের একজনের বাড়ি নরসিংদী, অন্যজনের বাড়ি বরগুনা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, রাত সাড়ে ৮টার দিকে হঠাৎ একটি পিকআপভ্যান যোগে মুখোশধারী ৭/৮ জন দুর্বৃত্ত একের পর এক কমপক্ষে ৩০/৪০টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় আর কে জুয়েলারী দোকানে ঢুকে পড়ে ৪/৫ জন মুখোশধারী (মাস্ক পরা)। তারা এলোপাতাড়ী দোকান মালিককে কুপিয়ে ও তার ছেলেকে মারধর করে স্বর্ণালংকার বস্তায় ভরে লুটে নিয়ে যায়। এসময় আশপাশের কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে দোকানীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। এর কিছুটা অদুরে মোহাম্মদ আলী সড়কে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাইফুল হাসান পলাশের বাসভবনের সামনে কয়েকটি ককটেল ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। কিছুক্ষন পরেই পৌর এলাকার ইটেরপুল নামক স্থানে একটি পিকআপভ্যান পথচারীকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এসময় পালিয়ে যাওয়ার সময় দু’জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে জনতা। এ ঘটনায় শহরজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলসহ পুরো শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার পর বিচার দাবী করে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যবসায়ীরা জানান, সন্ধ্যায় একটি পিকআপ ভ্যানে করে আট-১০ জন অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত এসে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ককটেলের ধোঁয়ায় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে গোটা এলাকা। পরে দুর্বৃত্তরা আর কে শিল্পালয়ে ঢুকে সোনার গহনা লুট করে এবং দোকানের মালিক অপুকে কুপিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই পিকআপ ভ্যানে করে পালিয়ে যায়।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর-সার্কেল) সোহেল রানা বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। দুজনক আটক করা হয়েছে। তাদের গাড়ি পালিয়ে যাবার সময় দুর্ঘটনায় পড়ে একজন পথচারী মারা গেছেন। ঘটনার পর ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকা থেকে বেশ কয়েকটি ককটেল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাজুস জেলা শাখার সভাপতি হরিহর পাল। তিনি বলেন, আহত অপু কর্মকারকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ডাকাতদল দোকানের সব স্বর্ণ নিয়ে গেছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে কর্মসূচি দেব।
ট্যাগ :