তাবারক হোসেন আজাদ :
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যা সরকারি হাসপাতালের আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন দরিদ্র অসহায় রোগীরা।
বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারীরা প্রয়োজনীয় সেবা (চেকআপ) না পেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন। প্রায় সাত বছর ধরে এই অবস্থা চলছে।
জরুরি প্রয়োজনে রোগীরা হাসপাতালের বাইরে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ক্লিনিক থেকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনের সামান্য ত্রুটির কারণে সেটি বন্ধ রেখে বাইরে থেকে চেকআপ করার নির্দেশ দিচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
শনিবার পৌরসভা দেনায়েতপুর এলাকার সামিমা এবং বামনী ইউপির কাঞ্চনপুর গ্রামের রাবেয়া ও সালমা অভিযোগ করে বলেন, আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে গেলে মেশিন খারাপের কথা বলে বাইরে থেকে চেকআপ করার নির্দেশ দেন চিকিৎসকরা। আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনটি খারাপ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন শত শত রোগী। এতে গরিব রোগীরা বেশি সমস্যায় পড়ছেন।
উপজেলার হায়দরগঞ্জ গ্রামের রোগী সখি বেগম বলেন, আমরা গরিব মানুষ, রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কম খরচে সেবা পাওয়ার আশায় আসি। বাইরের ক্লিনিকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে ৯০০-১২০০ টাকা নেয়। আর ডাক্তারের সুপারিশ থাকলে তবু ৯০০ টাকা নেয়। তবে সরকারি হাসপাতালে কম অর্থে করা যায়। কিন্তু সঠিক সেবা পাওয়া তো দূরের কথা, এখন বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনে গত সাত বছর ধরে কক্ষবন্দি রয়েছে। তাই স্থানীয় গরিব অসহায় রোগীরা সরকারি চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ কারণে বাইরের ক্লিনিকে চড়া মূল্যে (৯০০-১২০০ টাকা) আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে হচ্ছে অসহায় দরিদ্র রোগীদের।
এ বিষয়ে হাসপাতালের স্টোরকিপার মো. রাশেদ বলেন, হাসপাতালে নতুন ভবনের দোতলায় ২১১ কক্ষে গত সাত বছর ধরে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন কক্ষবন্দি রয়েছে। মেশিনটি ১৫ দিন আগে খোলা হয়েছিল। প্রিন্টারে সমস্যা দেখা দেওয়ায় তা আবার বন্ধ করা হয়। রোগীর লোকজন আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন অকেজো জেনে এখানে আর করতে চায় না, বেশিরভাগই বাইরে থেকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে আসেন।
হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বাহারুল আলম বলেন, মেশিনে এমনিতে কোনো সমস্যা নেই, তবে প্রিন্ট না থাকায় সমস্যা ছিল। কয়েক দিন আগে আমার নিজস্ব খরচে প্রিন্টার এনেছি। তাও সমস্যা হওয়ায় প্রকৌশলীকে খবর দেওয়া হয়েছে। রোগীদের এই অসুবিধায় চেকআপে বাইরে পাঠিয়ে দিই। বিষয়টি আমরা একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে সুরাহা পাইনি।