রামগতি থেকে মিশু নিক্কন সাহা :
মৎস্য সম্পদ ধ্বংসকারী বেহুন্দি জাল, কারেন্ট জাল, খুঁটি জাল, চরঘেরা জাল, মশারি জাল ও অন্যান্য ক্ষতিকর অবৈধ জাল অপসারণে লক্ষ্যে লক্ষ্মীপুরের রামগতির মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছেন উপজেলা মৎস্য দপ্তর ও নৌ-পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে রামগতি মাছ ঘাটে বিশেষ কম্বিং অপারেশনে জব্দ করা অবৈধ জালগুলোতে আগুন লাগিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। এরআগে ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত মেঘনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
উক্ত অভিযানে উপস্থিত ছিলেন ইলিশ সম্পদ ও উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা প্রকল্প পরিচালক মো. জিয়া হায়দার চৌধুরী, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম, ইলিশ সম্পদ ও উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক মো. মামুনুর রশিদ, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন, বড়খেরী নৌ পুলিশ ফাঁড়ীর ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) ফেরদৌস আহম্মদ।
অভিযানকালে ১২টি বেহুন্দি জাল, ৪টি খুঁটি জাল ও ১০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। এসময় জহির মাঝি (৪৮) নামের এক জেলেকে আটক করা হয়েছে। পরে, জব্দকৃত ওই জালগুলোকে মেঘনার পাড়ে এনে আগুন দিয়ে ধ্বংস করা হয়।
আটককৃত ওই জেলেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম শান্তুনু চৌধুরী এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত জহির মাঝি উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের দক্ষিণ টুমচর এলাকার মো. আলতাফ হোসেনের ছেলে।
বড়খেরী নৌ পুলিশ ফাঁড়ীর ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) ফেরদৌস আহম্মদ বলেন, দেশের মৎস্যসম্পদ ধ্বংসকারী অবৈধ জাল অপসারণে বিশেষ কম্বিং অপারেশন শুরু করেছে সরকার। এ অপারেশন সফল করতে আজকের এ অভিযান।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, মৎস্য সম্পদের জন্য ক্ষতিকর এসব জালের ব্যবহার বাড়লে জাটকাসহ সামুদ্রিক ও উপকূলীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছের ডিম, রেণু ও পোনা নষ্ট হবে এবং উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছের উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়ার পাশাপাশি জলজ জীববৈচিত্র্য নষ্ট হবে। সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধঘোষিত এসব জাল ব্যবহারকারীকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা জরিমানা অথবা ১ বছর থেকে সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, বিশেষ কম্বিং অপারেশন-২০২৩ উপলক্ষে আজকে আমাদের এ অভিযান। ক্ষতিকর অবৈধ জাল অপসারণের লক্ষ্যে মাসব্যাপি কয়েক ধাপে এ অভিযান চলবে।
উল্লেখ্য, দি প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ রুলস, ১৯৮৫ অনুযায়ী সরকার ২০১৩ সালে মৎস্য সম্পদ ধ্বংসকারী বেহুন্দি জাল, মশারি জাল, চরঘেরা জাল, বেড়/জগৎবেড় জাল, কারেন্ট জাল প্রভৃতি ক্ষতিকারক জালের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে এবং ইলিশ আহরণের জালের ফাঁস ৬ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার বা ২ দশমিক ৬ ইঞ্চি নির্ধারণ করেছে।