ঢাকা ০৭:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বামনীতে স্কুল থেকে ফেরার পথে শিক্ষার্থীকে মুখোশধারীদের মারধর ,খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

  • ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট : ০৮:০৬:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ০ জন পড়েছেন

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ফাহিমা আক্তার তিশা (১৩) নামে ছাত্রীকে পিটিয়ে আহত ও কয়েকটি ওষুধ খাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি বাড়িতে বললে তাকে ফের মারধর ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিশা সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিদ্যালয়ে যাওয়া আসার পথে কয়েকজন কিশোর প্রায়ই তাকে উত্যাক্ত করতো বলে জানিয়েছে তার ফুফাতো বোন ও দাদি।

তিশা রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়নের সাইচা গ্রামের লাল মিয়া পাটওয়ারী বাড়ির সৌদি আরব ফেরত ফরহাদ হোসেনের মেয়ে। সে স্থানীয় বামনী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।

তিশা ও তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিশা স্কাউটের সদস্য। প্রতি বৃহস্পতিবার স্কাউটের প্রোগ্রাম থাকে। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে একা বাড়ি ফেরার পথে তিনটি স্থানে মুখোশ পড়া অবস্থায় কয়েকটি ছেলে তিশাকে ঘেরাও করে। এরমধ্যে চৌধুরী বাজারের পাশে রাস্তার ওপরে মুখোশ পরিহিতরা তাকে ধরে কয়েকটি ওষুধ জোর করে খাইয়ে দেয়। একপর্যায়ে তাকে ক্যাবল তার দিয়ে পায়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়েছে তারা। ইট দিয়েও পায়ে আঘাত করেছে। পরে মুখোশধারী একজনকে কামড়ে সে ঘটনাস্থল থেকে দৌঁড়ে বাড়িতে চলে যায়। এরপর সে প্রায় অচেতন হয়ে পড়ে। বিদ্যালয় থেকে ফেরার ক্লান্তি ভেবে পরিবারের লোকজন তার অসুস্থতাকে গুরুত্ব দেইনি। পরে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে রাত ৩ টা ২০ মিনিটে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ফাহিমা আক্তার তিশা বলেন, ওষুধগুলো জোরপূর্বক তাকে খাইয়ে দেওয়া হয়েছে। কালো কাপড়ে ছেলেগুলোর মুখ ঢাকা ছিল। এজন্য সে কাউকে চিনতে পারেনি। তাকে ক্যাবল তার দিয়ে পিটিয়েছে। ইট দিয়েও আঘাত করেছে। বাড়িতে কাউকে বললে, হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে তাকে। অচেনা কিছু ছেলে তাকে প্রায়ই উত্যক্ত করতো।

তিশার ফুফাতো বোন তামান্না আক্তার বলেন, তিশাকে কিছু ছেলে উত্যক্ত করতো। বিষয়টি তিশা আমাদের জানায়। পরে মামাকে নিয়ে ওই ছেলেদের নিষেধ করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে তাদের মধ্যে কেউই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তিশার পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

তিশার দাদি খোদেজা বেগম বলেন, প্রথমে মনে করেছিলাম স্কুল থেকে ফিরে ক্লান্ত হয়ে গেছে। পরে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে তিশা বিস্তারিত ঘটনা জানায়।

বামনী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির বলেন, ঘটনাটি সকালে জানতে পেরেছি। তবে বিস্তারিত জানা নেই। বিদ্যালয়ে কিংবা আসা-যাওয়ার পথে তিশাকে উত্যক্তের বিষয়টিও কেউ কখনো জানায়নি আমাকে। প্রতি বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে স্কাউটের কার্যক্রম চলে। তিশাও স্কাউটিংয়ের সড়ে জড়িত রয়েছে।

সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক এ কে আজাদ বলেন, মারধর করা হয়ে বলে ওই ছাত্রীকে ভর্তি করা হয়েছে। আমরা তাকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দিচ্ছি। এরবেশি কিছু বলা যাচ্ছে না। যদি অন্যকোন অভিযোগ থাকে, তাহলে আগে থানায় অবিহিত করতে হবে।

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে । ৫জনকে আসামী করে অভিযোগ দেয়া হয়েছে ।এর মধ্যে ৩জনের নাম ও ২জন অজ্ঞাত ।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

চুরির অপবাদে প্রকাশ্যেই খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন,জড়িতদের ধরতে অভিজান চলছে – ওসি সদর

বামনীতে স্কুল থেকে ফেরার পথে শিক্ষার্থীকে মুখোশধারীদের মারধর ,খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

আপডেট : ০৮:০৬:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ফাহিমা আক্তার তিশা (১৩) নামে ছাত্রীকে পিটিয়ে আহত ও কয়েকটি ওষুধ খাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি বাড়িতে বললে তাকে ফের মারধর ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিশা সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিদ্যালয়ে যাওয়া আসার পথে কয়েকজন কিশোর প্রায়ই তাকে উত্যাক্ত করতো বলে জানিয়েছে তার ফুফাতো বোন ও দাদি।

তিশা রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়নের সাইচা গ্রামের লাল মিয়া পাটওয়ারী বাড়ির সৌদি আরব ফেরত ফরহাদ হোসেনের মেয়ে। সে স্থানীয় বামনী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।

তিশা ও তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিশা স্কাউটের সদস্য। প্রতি বৃহস্পতিবার স্কাউটের প্রোগ্রাম থাকে। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে একা বাড়ি ফেরার পথে তিনটি স্থানে মুখোশ পড়া অবস্থায় কয়েকটি ছেলে তিশাকে ঘেরাও করে। এরমধ্যে চৌধুরী বাজারের পাশে রাস্তার ওপরে মুখোশ পরিহিতরা তাকে ধরে কয়েকটি ওষুধ জোর করে খাইয়ে দেয়। একপর্যায়ে তাকে ক্যাবল তার দিয়ে পায়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়েছে তারা। ইট দিয়েও পায়ে আঘাত করেছে। পরে মুখোশধারী একজনকে কামড়ে সে ঘটনাস্থল থেকে দৌঁড়ে বাড়িতে চলে যায়। এরপর সে প্রায় অচেতন হয়ে পড়ে। বিদ্যালয় থেকে ফেরার ক্লান্তি ভেবে পরিবারের লোকজন তার অসুস্থতাকে গুরুত্ব দেইনি। পরে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে রাত ৩ টা ২০ মিনিটে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ফাহিমা আক্তার তিশা বলেন, ওষুধগুলো জোরপূর্বক তাকে খাইয়ে দেওয়া হয়েছে। কালো কাপড়ে ছেলেগুলোর মুখ ঢাকা ছিল। এজন্য সে কাউকে চিনতে পারেনি। তাকে ক্যাবল তার দিয়ে পিটিয়েছে। ইট দিয়েও আঘাত করেছে। বাড়িতে কাউকে বললে, হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে তাকে। অচেনা কিছু ছেলে তাকে প্রায়ই উত্যক্ত করতো।

তিশার ফুফাতো বোন তামান্না আক্তার বলেন, তিশাকে কিছু ছেলে উত্যক্ত করতো। বিষয়টি তিশা আমাদের জানায়। পরে মামাকে নিয়ে ওই ছেলেদের নিষেধ করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে তাদের মধ্যে কেউই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তিশার পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

তিশার দাদি খোদেজা বেগম বলেন, প্রথমে মনে করেছিলাম স্কুল থেকে ফিরে ক্লান্ত হয়ে গেছে। পরে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে তিশা বিস্তারিত ঘটনা জানায়।

বামনী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির বলেন, ঘটনাটি সকালে জানতে পেরেছি। তবে বিস্তারিত জানা নেই। বিদ্যালয়ে কিংবা আসা-যাওয়ার পথে তিশাকে উত্যক্তের বিষয়টিও কেউ কখনো জানায়নি আমাকে। প্রতি বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে স্কাউটের কার্যক্রম চলে। তিশাও স্কাউটিংয়ের সড়ে জড়িত রয়েছে।

সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক এ কে আজাদ বলেন, মারধর করা হয়ে বলে ওই ছাত্রীকে ভর্তি করা হয়েছে। আমরা তাকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দিচ্ছি। এরবেশি কিছু বলা যাচ্ছে না। যদি অন্যকোন অভিযোগ থাকে, তাহলে আগে থানায় অবিহিত করতে হবে।

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে । ৫জনকে আসামী করে অভিযোগ দেয়া হয়েছে ।এর মধ্যে ৩জনের নাম ও ২জন অজ্ঞাত ।