ঢাকা ০৯:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাঁধ নির্মানে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা আওয়ামীলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে

 লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মেঘনার ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণে মোটা অংকের চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে জোর পূর্বক সাদা স্ট্যাম্পে সাক্ষর নেয়ার অভিযোগে ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। 

গত বুধবার (৬মার্চ) জেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট (কমলনগর) আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ঠিকাদার জামিল ইকবাল কোম্পানির বালু সরবরাহকারী মো.আমজাদ ।

 মামলায় এজাহারভুক্তরা হলেন, নবী উল্লাহ ছেলে উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সায়েদ (৪০), চর মার্টিন ইউনিয়ন কৃষক লীগ নেতা আবুল খায়ের (৩০), চর মার্টিন ইউপি’র মো.মমিন উল্লাহ ছেলে আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মো.বেলায়েত (৩৫)। 

এজাহার সূত্রে বাদী জানান, তিনি মেঘনার ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণে ঠিকাদার জামিল ইকবাল কোম্পানির বালু সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করছে। দীর্ঘদিন যাবৎ বাঁধ নির্মানে বালু সরবরাহ করেন। হঠাৎ উপজেলার নাছিরগঞ্জ এলাকায় ২৯নম্বর ব্লকের বাঁধ নির্মানে বালু দিতে গেলে দলীয় প্রভাবে উপজেলা কৃষক লীগ নেতা আবু সায়েদ, আবুল খায়ের ও মো.বেলায়েত মোটা অংকের কমিশনে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে বালুর কাজ করতে দিবে না। ভয়-ভীতি দেখিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। পরে তাদের হুমকি ও ভয়-ভীতির কারণে ১লাখ টাকা দিতে হয়। কিছুদিন পরে বালু ফেলতে গেলে তারা আবারও একই কায়দায় বাঁধা দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয় এবং ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। স্থানীয় প্রশাসনকে জানালে তারা উত্তেজিত ও বেপরোয়া হয়ে উঠে। হঠাৎ কাজের সাইটে গেলে সন্ত্রাসী কায়দায় প্রকাশ্যে আমাকে তারা আটক করে মারধর করে। 

জখমের চিৎকারে স্থানীয়রা ৯৯৯ফোন দিলে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে আমাকে উদ্ধার করে।তিনি আরও জানান, অভিযুক্তরা উত্তেজিত হয়ে আমার ফোনে হত্যার হুমকি, বিভিন্ন ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছে। তাদের চাঁদা না দিলে কাজ বন্ধ এবং সাদা কাগজে সাক্ষরিত স্ট্যাম্প দিয়ে মামলার হুমকি দিচ্ছে। আমার ব্যবসায়ী নিরাপত্তা ও প্রাণ বাচাঁতে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করে অভিযুক্তদের বিচার দাবি করছি ।

মামলার বাদি আমজাদ হোসেন উপজেলার ৫ নং চর ফলকন ইউনিয়নের মাতাব্বর হাট এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে।

অভিযুক্ত আবু সায়েদ জানান, বালু ঠিকাদার আমজাদ তার কাছ থেকে ব্যবসা করবে বলে অংশীদার হিসেবে  প্রায় ৮ লাখ টাকা নেন। ব্যবসার ল্যাভাংশ দিতে গড়িমশি শুরু করে। পরে মুলধন এবং ল্যাভাংশের টাকার চাইলে আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। মো.বেলায়েত জানান, তিনি আমজাদের সাথে কোন স্ট্যাম্পে ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বের চুক্তিপত্রে সই করেননি। আমজাদের সাথে আবু সায়েদ চুক্তি করেছে। চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। 

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো.নিজাম উদ্দিন জানান, মেঘনার ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মানে সরকার প্রায় ৩১শ কোটি টাকা বরাদ্দ দেন। হাজার পরিবার মেঘনার ভাঙন রোধে ভিটে-মাটি হারিয়ে নি:স্ব। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে কোন নেতা-কর্মী চাঁদাবাজি বা কাজে বাধাঁ দিলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

চৌধুরী বাজার ফাঁড়ি থানা পুলিশ পরিদর্শক মো.মকবুল জানান, জরুরি ৯৯৯ ফোনের জেরে ঘটনাস্থল থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়েছে। কমলনগর থানা ইনচার্জ (ওসি) তহিদুল ইসলাম জানান, আদালতে মামলার বিষয়ে তদন্ত আসলে তা খতিয়ে দেখা হবে।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

লক্ষ্মীপুরের উত্তরচরবংশী ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কমিটির বিলুপ্ত  

বাঁধ নির্মানে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা আওয়ামীলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে

আপডেট : ০৭:০৩:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ মার্চ ২০২৪

 লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মেঘনার ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণে মোটা অংকের চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে জোর পূর্বক সাদা স্ট্যাম্পে সাক্ষর নেয়ার অভিযোগে ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। 

গত বুধবার (৬মার্চ) জেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট (কমলনগর) আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ঠিকাদার জামিল ইকবাল কোম্পানির বালু সরবরাহকারী মো.আমজাদ ।

 মামলায় এজাহারভুক্তরা হলেন, নবী উল্লাহ ছেলে উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সায়েদ (৪০), চর মার্টিন ইউনিয়ন কৃষক লীগ নেতা আবুল খায়ের (৩০), চর মার্টিন ইউপি’র মো.মমিন উল্লাহ ছেলে আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মো.বেলায়েত (৩৫)। 

এজাহার সূত্রে বাদী জানান, তিনি মেঘনার ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণে ঠিকাদার জামিল ইকবাল কোম্পানির বালু সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করছে। দীর্ঘদিন যাবৎ বাঁধ নির্মানে বালু সরবরাহ করেন। হঠাৎ উপজেলার নাছিরগঞ্জ এলাকায় ২৯নম্বর ব্লকের বাঁধ নির্মানে বালু দিতে গেলে দলীয় প্রভাবে উপজেলা কৃষক লীগ নেতা আবু সায়েদ, আবুল খায়ের ও মো.বেলায়েত মোটা অংকের কমিশনে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে বালুর কাজ করতে দিবে না। ভয়-ভীতি দেখিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। পরে তাদের হুমকি ও ভয়-ভীতির কারণে ১লাখ টাকা দিতে হয়। কিছুদিন পরে বালু ফেলতে গেলে তারা আবারও একই কায়দায় বাঁধা দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয় এবং ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। স্থানীয় প্রশাসনকে জানালে তারা উত্তেজিত ও বেপরোয়া হয়ে উঠে। হঠাৎ কাজের সাইটে গেলে সন্ত্রাসী কায়দায় প্রকাশ্যে আমাকে তারা আটক করে মারধর করে। 

জখমের চিৎকারে স্থানীয়রা ৯৯৯ফোন দিলে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে আমাকে উদ্ধার করে।তিনি আরও জানান, অভিযুক্তরা উত্তেজিত হয়ে আমার ফোনে হত্যার হুমকি, বিভিন্ন ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছে। তাদের চাঁদা না দিলে কাজ বন্ধ এবং সাদা কাগজে সাক্ষরিত স্ট্যাম্প দিয়ে মামলার হুমকি দিচ্ছে। আমার ব্যবসায়ী নিরাপত্তা ও প্রাণ বাচাঁতে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করে অভিযুক্তদের বিচার দাবি করছি ।

মামলার বাদি আমজাদ হোসেন উপজেলার ৫ নং চর ফলকন ইউনিয়নের মাতাব্বর হাট এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে।

অভিযুক্ত আবু সায়েদ জানান, বালু ঠিকাদার আমজাদ তার কাছ থেকে ব্যবসা করবে বলে অংশীদার হিসেবে  প্রায় ৮ লাখ টাকা নেন। ব্যবসার ল্যাভাংশ দিতে গড়িমশি শুরু করে। পরে মুলধন এবং ল্যাভাংশের টাকার চাইলে আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। মো.বেলায়েত জানান, তিনি আমজাদের সাথে কোন স্ট্যাম্পে ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বের চুক্তিপত্রে সই করেননি। আমজাদের সাথে আবু সায়েদ চুক্তি করেছে। চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। 

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো.নিজাম উদ্দিন জানান, মেঘনার ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মানে সরকার প্রায় ৩১শ কোটি টাকা বরাদ্দ দেন। হাজার পরিবার মেঘনার ভাঙন রোধে ভিটে-মাটি হারিয়ে নি:স্ব। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে কোন নেতা-কর্মী চাঁদাবাজি বা কাজে বাধাঁ দিলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

চৌধুরী বাজার ফাঁড়ি থানা পুলিশ পরিদর্শক মো.মকবুল জানান, জরুরি ৯৯৯ ফোনের জেরে ঘটনাস্থল থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়েছে। কমলনগর থানা ইনচার্জ (ওসি) তহিদুল ইসলাম জানান, আদালতে মামলার বিষয়ে তদন্ত আসলে তা খতিয়ে দেখা হবে।