
ওয়াহিদুর রহমান মুরাদ: লক্ষ্মীপুরের প্রথম শ্রেণির পৌরসভা রায়পুরে এক মাস ধরে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। গরমে পানির স্তর নেমে যাওয়া এবং বিদ্যুতের লোডশেডিং ও লো ভোল্টেজের কারণে পানির পাম্প চালাতে না পারায় করুন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এতে পৌর শহরে বসবাসকারী কয়েক হাজার গ্রাহককে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অনেকে বাধ্য হয়ে বাসাবাড়িতে মিনারেল ওয়াটার কিনে এবং পাশের বাড়ির নলকূপের পানি এনে চাহিদা মেটাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রায়পুর পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে অর্ধলক্ষাধিক মানুষের বসবাস। এখানে পানির গ্রাহক প্রায় ২৫ হাজার। এর জন্য প্রতিদিন ২৫ লাখ লিটার পানির চাহিদা রয়েছে। পাম্প দিয়ে উচ্চ জলাধারে এ পানি উত্তোলন করতে হলে বিদ্যুতের ৪২০ ভোল্টেজ প্রয়োজন। কিন্তু এক মাস ধরে ৩৬০-৭০ ভোল্টেজ পাওয়া যাচ্ছে। এতে প্রতিদিন ৭-৮ লাখ লিটার পানি সরবরাহ করা সম্ভব হয়। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এবং বিদ্যুতের লো ভোল্টেজের কারণে চাহিদামতো পানি উত্তোলন করা যাচ্ছে না।
পৌরসভার উত্তর দেনায়েতপুর এলাকার পারুল বেগম বলেন, ‘সময়মতো পানির বিল পরিশোধ করলেও আমরা চাহিদামতো পানি পাচ্ছি না। এজন্য আমাদের রান্নাসহ স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।’
নুর আলম নামে একজন বাসিন্দা বলেন, ‘আমাদের বাসার খাওয়ার পানি নেই কয়েকদিন ধরে। পৌরবাসীর পানির কষ্ট লাঘবে কোনও কর্মকর্তার মাথাব্যথাও নেই। ইউএনও পৌর প্রশাসকের দায়িত্বে থাকলেও মনে হয় তিনি বিষয়টি জানেন না। পানি সংকটে আমাদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।’
রায়পুর পৌরসভার ওয়াটার সুপারের দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘গরমের কারণে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এবং বিদ্যুতের লো ভোল্টেজের কারণে চাহিদামতো পানি উত্তোলন করা যাচ্ছে না। বিষয়টি পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।’
রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রায়পুর পৌর প্রশাসক ইমরান খান বলেন, পৌরসভার পানির লাইনে অসাধু গৃহকর্তারা ইলেকট্রিক মটর সংযোগ দিয়ে পানি তুলে নিচ্ছে। তাই ভোগান্তি কিছুটা বেড়েছে। এছাড়াও কয়েকটি পাম্প সংস্কার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে চৈত্র মাসে পানির স্তর কমে যাওয়ার কারণে বৈশাখ – জ্যৈষ্ঠতেও পানির সমস্যা ভোগাবে বলে স্বীকার করেন তিনি।