ঢাকা ০৬:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকা-চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর দুরত্ব ঘুচবে,ঝুলন্ত সেতু একনেকে অনুমোদন

একনেকে অনুমোদন পেয়েছে লক্ষ্মীপুর – চাঁদপুর ও মুন্সীগঞ্জ জেলাকে সংযোগ স্থাপনকারী ঝুলন্ত সেতু। মেঘনা ও ধনাগোদা নদীর উপর ব্রিজটি নির্মিত হবে। চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা ও মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার মধ্যে সরাসরি সড়ক সংযোগ সৃষ্টি করবে এই সেতু। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকালে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গজারিয়ার ভবেরচর -মতলব কালীপুর সেতু নির্মাণ হলে ঢাকা থেকে গৌরীপুর ও মতলব উত্তর উপজেলা সদরে চাঁদপুর জেলা সদরে বর্তমান দূরত্ব প্রায় ১২০ কিলোমিটার। কিন্তু ঢাকা থেকে ভবেরচর হয়ে গজারিয়া উপজেলার সীমানার উপর দিয়ে প্রস্তাবিত সেতু হয়। চাঁদপুর জেলা সদরের দূরত্ব সর্বোচ্চ ১৮৫০ মিটার। সেতু নির্মিত হলে ঢাকা-চাঁদপুর জেলা সদরের দূরত্ব প্রায় ৫২ কিলোমিটার সড়ক পথ কমে যাবে। এতে একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের ভ্রমণ ব্যয় কমবে একই সাথে ভ্রমণ সময়ও কমবে প্রায় এক ঘন্টা। সূত্রে জানা যায়, মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ও গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের অংশবিশেষ মেঘনা নদী অপরদিকে চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার সাদুল্লাপুর ও বাগানবাড়ি ইউনিয়নের অংশবিশেষ এলাকার মেঘনা নদীতে এই সেতু নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডির) অধীনে সেতুর উভয় পাশে নির্মিত হবে আঞ্চলিক মহাসড়ক। এলাকাবাসী ও উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন সভা সমাবেশে দাবি করে আসছে, মতলব উত্তর ও গজারিয়ার ভবেরচর সংযোগ মহাসড়কে সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থায় জন্য মেঘনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের জন্য। এদিকে সেতুর উভয় পাশে আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মিত হবে। মহাসড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণ অনুমোদনের অপেক্ষায়। মতলব-গজারিয়া সেতুর কাজ শুরু হবে জানার পর থেকে এলাকায় আনন্দের বন্যা বইছে। এলাকাবাসী জানান, মেঘনা নদীতে সেতু নির্মিত হলে চাঁদপুর, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও শরিয়তপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের লোকজন রাজধানী ঢাকায় সহজে যাতায়াত করতে পারবেন। এছাড়াও মতলব উত্তরে নির্মিত হতে যাওয়া অর্থনৈতিক জোনসহ চাঁদপুরের কৃষি, শিল্প ও পর্যটন খাতের বিকাশেও সেতুটির অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে।

মতলব উত্তর ও দক্ষিণ উপজেলার মধ্যে সংযোগ সৃষ্টিকারী ‘মতলব সেতু’ বাস্তবায়নের সময় থেকেই ঢাকার সাথে চাঁদপুরের সড়ক দূরত্ব আরো কমিয়ে আনা এবং সহজ করার লক্ষ্যে সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী (মায়া) বীর বিক্রম এই সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম এই সেতু নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণে উদ্যোগ ও ভূমিকা রাখেন।

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা অনুষ্ঠিত হয়। এটিই হতে পারে বর্তমান সরকারের মেয়াদে শেষ একনেক সভা। সভায় চাঁদপুরের মেঘনা-ধনাগোদা নদীর ওপর একটি ঝুলন্ত সেতু নির্মাণের প্রস্তাব উত্থাপনের পর তা অনুমোদন লাভ করে।

চাঁদপুরে ঝুলন্ত সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১৭৪ কোটি টাকা। এর আওতায় মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া ও চাঁদপুরের মতলবের মেঘনা-ধনাগোদা নদীর ওপর ঝুলন্ত সেতু নির্মিত হবে। প্রকল্প চলবে ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। সাধারণত প্রকল্পের মেয়াদ একনেকে পাস করার আগে থেকে শুরু হয়। তবে এই প্রকল্প পাস হয়ে থাকবে, পরে কাজ শুরু হবে। পুরোপুরি দেশীয় অর্থে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।

এই প্রকল্পের ইতিকথা নিয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ডঃশামসুল আলম নিজ ফেসবুক ওয়ালে একটি স্ট্যাটাস লিখেন তা হুবুহু তুলে ধরা হলো

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড:শামসুল আলম

৩১ অক্টোবর, ২০২৩।মতলব-গজারিয়া ব্রিজটি যে ভাবে হল, সংক্ষেপে:
প্রথম প্রস্তাবে খাট ব্রিজ ( দেড় কিলোমিটার এর উপরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ব্রিজ করতে পারেনা) নদীর উপর চারটি পিলার হত, নদী মরে যেত। বর্ষাকালে বড় কার্গো চলাচল বাধাগ্রস্ত হত। আমি মন্ত্রী হবার পর এটি যেনে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জনাব তাজুল ইসলাম ও প্রধান প্রকৌশলীকে এই সমস্যার কথা বলে স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রল্পটি বাতিল করতে অনুরোধ করি এবং তা বাতিল হয়। এই সময় প্রধান প্রকৌশলী আমার যুক্তির সংগে একমত হয়েছিল। সেতু মন্ত্রণালয়কে এখানে আন্চ্ঞলিক হাইওয়ে উপযোগী নদীর কোন ক্ষতি না করে চার লেন প্রকল্প প্রণয়নের অনুরোধ জানাই। সে সময় সেতু বিভাগের সচিব ছিল আমার এক ছাত্র। সে সময় আমি জানতে পারি ঐ মন্ত্রণালয়ে একজন মতলবের ডিপুটি সেক্রেটারি আছেন ভিখারুদ্দৌলা। বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা বিষয়ে (আমার ছাত্র) সেতু সচিব সকল অফিসারদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে দাওয়াত করে। সেখানেই সচিব প্রথম মতলবের একজন ডি এস ভিখারদ্দৌলাকে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেন। সেই তার সংগে আমার যোগাযোগ শুরু। আমি খাটো ছোট ব্রিজ বাদ দিয়ে আঞ্চলিক মহাসড়ক উপযোগী সেতু করার প্রস্তাব দিলে সে খুব খুশি হয়। বলে স্যার Typsa Spanish কন্সাল্টিং ফার্ম চাঁদপুর শরিয়তপুর ব্রিজ সম্ভাব্যতা জরীপ করতে এসেছে। আমি বললাম আগেতো গজারিয়া – মতলব সেতু হোক তারপরনা ওটা কাজে লাগবে। সে তখন বলে সচিব স্যারকে বলেন, আপনি বললে শুনবে। সচিবকে বললে সে মেনে নিল। ভুলু টিপ্সা টীম আমার কাছে নিয়ে এলে বুঝালাম কেন এই ব্রিজ আগে করতে হবে। তারা মেনে নিল, সেই থেকে শুরু। ভিখারুদ্দৌলা সেতু সচিবের মত নিয়ে আমার সংগে কাজ শুরু করে। যাবতীয় বুদ্ধি পরামর্শ দিতে থাকে। আমার ছাত্র চলে গেলে বর্তমান সচিবও মঞ্জুর হোসেন আমাদের কে আন্তরিক সহযোগিতা করেছেন। যার ফলশ্রুতিতে আজকের দুই কিলোমিটার চারলেন এই ব্রিজ অনুমোদন। মাননীয় সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে আমি ব্যক্তিগত ভাবে দেখা করে এইব্রিজের কাজ এগিয়ে নিতে অনুরোধ করলে আমাকে বসিয়ে সেতু সচিবকে ফোন দিয়ে এই ব্রিজএর কাজ দ্রুত এগিয়ে নিতে বলেন। আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ। বর্তমান ERD সচিব ও পরিকল্পনা সচিব সত্যজিৎ কর্মকার আজকের ECNEC পর্যন্ত যে সহযোগিতা করেছেন, তা ভুলা যাবেনা। সর্বশেষ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ব্রিজ ডিজাইন দেখে খুব খুশি হয়েছেন এবং সহাস্যে কোন ব্যয় না কমিয়ে অনুমোদন দিয়েছেন। এখানে আর কারো কোন সহায়তা ছিলনা এবং প্রয়োজনও হয়নি। এখানে কোন ডি ও র কথা একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক। জড়িত সকলের প্রতি মতলববাসির পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। বদলে যাবে মতলব, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর। ঢাকা চট্টগ্রাম হাইওয়ের এটি হবে অন্যতম বিকল্প রুট। ২০২৮ এর মধ্যে এই ব্রিজ শেষ হবে। আমার সুযোগ থাকা পর্যন্ত আমি বাস্তবায়ন মনিটরিং করে যাব ইনশাআল্লাহ।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

লক্ষ্মীপুরের উত্তরচরবংশী ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কমিটির বিলুপ্ত  

ঢাকা-চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর দুরত্ব ঘুচবে,ঝুলন্ত সেতু একনেকে অনুমোদন

আপডেট : ০১:২১:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ নভেম্বর ২০২৩

একনেকে অনুমোদন পেয়েছে লক্ষ্মীপুর – চাঁদপুর ও মুন্সীগঞ্জ জেলাকে সংযোগ স্থাপনকারী ঝুলন্ত সেতু। মেঘনা ও ধনাগোদা নদীর উপর ব্রিজটি নির্মিত হবে। চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা ও মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার মধ্যে সরাসরি সড়ক সংযোগ সৃষ্টি করবে এই সেতু। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকালে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গজারিয়ার ভবেরচর -মতলব কালীপুর সেতু নির্মাণ হলে ঢাকা থেকে গৌরীপুর ও মতলব উত্তর উপজেলা সদরে চাঁদপুর জেলা সদরে বর্তমান দূরত্ব প্রায় ১২০ কিলোমিটার। কিন্তু ঢাকা থেকে ভবেরচর হয়ে গজারিয়া উপজেলার সীমানার উপর দিয়ে প্রস্তাবিত সেতু হয়। চাঁদপুর জেলা সদরের দূরত্ব সর্বোচ্চ ১৮৫০ মিটার। সেতু নির্মিত হলে ঢাকা-চাঁদপুর জেলা সদরের দূরত্ব প্রায় ৫২ কিলোমিটার সড়ক পথ কমে যাবে। এতে একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের ভ্রমণ ব্যয় কমবে একই সাথে ভ্রমণ সময়ও কমবে প্রায় এক ঘন্টা। সূত্রে জানা যায়, মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ও গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের অংশবিশেষ মেঘনা নদী অপরদিকে চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার সাদুল্লাপুর ও বাগানবাড়ি ইউনিয়নের অংশবিশেষ এলাকার মেঘনা নদীতে এই সেতু নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডির) অধীনে সেতুর উভয় পাশে নির্মিত হবে আঞ্চলিক মহাসড়ক। এলাকাবাসী ও উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন সভা সমাবেশে দাবি করে আসছে, মতলব উত্তর ও গজারিয়ার ভবেরচর সংযোগ মহাসড়কে সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থায় জন্য মেঘনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের জন্য। এদিকে সেতুর উভয় পাশে আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মিত হবে। মহাসড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণ অনুমোদনের অপেক্ষায়। মতলব-গজারিয়া সেতুর কাজ শুরু হবে জানার পর থেকে এলাকায় আনন্দের বন্যা বইছে। এলাকাবাসী জানান, মেঘনা নদীতে সেতু নির্মিত হলে চাঁদপুর, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও শরিয়তপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের লোকজন রাজধানী ঢাকায় সহজে যাতায়াত করতে পারবেন। এছাড়াও মতলব উত্তরে নির্মিত হতে যাওয়া অর্থনৈতিক জোনসহ চাঁদপুরের কৃষি, শিল্প ও পর্যটন খাতের বিকাশেও সেতুটির অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে।

মতলব উত্তর ও দক্ষিণ উপজেলার মধ্যে সংযোগ সৃষ্টিকারী ‘মতলব সেতু’ বাস্তবায়নের সময় থেকেই ঢাকার সাথে চাঁদপুরের সড়ক দূরত্ব আরো কমিয়ে আনা এবং সহজ করার লক্ষ্যে সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী (মায়া) বীর বিক্রম এই সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম এই সেতু নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণে উদ্যোগ ও ভূমিকা রাখেন।

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা অনুষ্ঠিত হয়। এটিই হতে পারে বর্তমান সরকারের মেয়াদে শেষ একনেক সভা। সভায় চাঁদপুরের মেঘনা-ধনাগোদা নদীর ওপর একটি ঝুলন্ত সেতু নির্মাণের প্রস্তাব উত্থাপনের পর তা অনুমোদন লাভ করে।

চাঁদপুরে ঝুলন্ত সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১৭৪ কোটি টাকা। এর আওতায় মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া ও চাঁদপুরের মতলবের মেঘনা-ধনাগোদা নদীর ওপর ঝুলন্ত সেতু নির্মিত হবে। প্রকল্প চলবে ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। সাধারণত প্রকল্পের মেয়াদ একনেকে পাস করার আগে থেকে শুরু হয়। তবে এই প্রকল্প পাস হয়ে থাকবে, পরে কাজ শুরু হবে। পুরোপুরি দেশীয় অর্থে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।

এই প্রকল্পের ইতিকথা নিয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ডঃশামসুল আলম নিজ ফেসবুক ওয়ালে একটি স্ট্যাটাস লিখেন তা হুবুহু তুলে ধরা হলো

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড:শামসুল আলম

৩১ অক্টোবর, ২০২৩।মতলব-গজারিয়া ব্রিজটি যে ভাবে হল, সংক্ষেপে:
প্রথম প্রস্তাবে খাট ব্রিজ ( দেড় কিলোমিটার এর উপরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ব্রিজ করতে পারেনা) নদীর উপর চারটি পিলার হত, নদী মরে যেত। বর্ষাকালে বড় কার্গো চলাচল বাধাগ্রস্ত হত। আমি মন্ত্রী হবার পর এটি যেনে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জনাব তাজুল ইসলাম ও প্রধান প্রকৌশলীকে এই সমস্যার কথা বলে স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রল্পটি বাতিল করতে অনুরোধ করি এবং তা বাতিল হয়। এই সময় প্রধান প্রকৌশলী আমার যুক্তির সংগে একমত হয়েছিল। সেতু মন্ত্রণালয়কে এখানে আন্চ্ঞলিক হাইওয়ে উপযোগী নদীর কোন ক্ষতি না করে চার লেন প্রকল্প প্রণয়নের অনুরোধ জানাই। সে সময় সেতু বিভাগের সচিব ছিল আমার এক ছাত্র। সে সময় আমি জানতে পারি ঐ মন্ত্রণালয়ে একজন মতলবের ডিপুটি সেক্রেটারি আছেন ভিখারুদ্দৌলা। বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা বিষয়ে (আমার ছাত্র) সেতু সচিব সকল অফিসারদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে দাওয়াত করে। সেখানেই সচিব প্রথম মতলবের একজন ডি এস ভিখারদ্দৌলাকে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেন। সেই তার সংগে আমার যোগাযোগ শুরু। আমি খাটো ছোট ব্রিজ বাদ দিয়ে আঞ্চলিক মহাসড়ক উপযোগী সেতু করার প্রস্তাব দিলে সে খুব খুশি হয়। বলে স্যার Typsa Spanish কন্সাল্টিং ফার্ম চাঁদপুর শরিয়তপুর ব্রিজ সম্ভাব্যতা জরীপ করতে এসেছে। আমি বললাম আগেতো গজারিয়া – মতলব সেতু হোক তারপরনা ওটা কাজে লাগবে। সে তখন বলে সচিব স্যারকে বলেন, আপনি বললে শুনবে। সচিবকে বললে সে মেনে নিল। ভুলু টিপ্সা টীম আমার কাছে নিয়ে এলে বুঝালাম কেন এই ব্রিজ আগে করতে হবে। তারা মেনে নিল, সেই থেকে শুরু। ভিখারুদ্দৌলা সেতু সচিবের মত নিয়ে আমার সংগে কাজ শুরু করে। যাবতীয় বুদ্ধি পরামর্শ দিতে থাকে। আমার ছাত্র চলে গেলে বর্তমান সচিবও মঞ্জুর হোসেন আমাদের কে আন্তরিক সহযোগিতা করেছেন। যার ফলশ্রুতিতে আজকের দুই কিলোমিটার চারলেন এই ব্রিজ অনুমোদন। মাননীয় সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে আমি ব্যক্তিগত ভাবে দেখা করে এইব্রিজের কাজ এগিয়ে নিতে অনুরোধ করলে আমাকে বসিয়ে সেতু সচিবকে ফোন দিয়ে এই ব্রিজএর কাজ দ্রুত এগিয়ে নিতে বলেন। আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ। বর্তমান ERD সচিব ও পরিকল্পনা সচিব সত্যজিৎ কর্মকার আজকের ECNEC পর্যন্ত যে সহযোগিতা করেছেন, তা ভুলা যাবেনা। সর্বশেষ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ব্রিজ ডিজাইন দেখে খুব খুশি হয়েছেন এবং সহাস্যে কোন ব্যয় না কমিয়ে অনুমোদন দিয়েছেন। এখানে আর কারো কোন সহায়তা ছিলনা এবং প্রয়োজনও হয়নি। এখানে কোন ডি ও র কথা একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক। জড়িত সকলের প্রতি মতলববাসির পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। বদলে যাবে মতলব, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর। ঢাকা চট্টগ্রাম হাইওয়ের এটি হবে অন্যতম বিকল্প রুট। ২০২৮ এর মধ্যে এই ব্রিজ শেষ হবে। আমার সুযোগ থাকা পর্যন্ত আমি বাস্তবায়ন মনিটরিং করে যাব ইনশাআল্লাহ।