ঢাকাসোমবার , ২৩ অক্টোবর ২০২৩
  1. International
  2. অপরাধ
  3. আত্মহত্যা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আবহাওয়া
  6. আমাদের সম্পর্কে
  7. ইসলাম
  8. খেলাধুলা
  9. গণমাধ্যম
  10. চিকিৎসা
  11. জাতীয়
  12. ত্রাণ
  13. ত্রাণ বিতরণ
  14. দিনলিপি
  15. দেশজুড়ে
আজকের সর্বশেষ সবখবর

চিকিৎসা সেবা নিতে দুই শিক্ষক নেদারল্যান্ডে,বহাল তবিয়তে স্কুলে।

নিজস্ব প্রতিবেদক
অক্টোবর ২৩, ২০২৩ ৯:১৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ছুটি না নিয়ে বিদেশে (নেদারল্যান্ড) চলে গেছেন লক্ষ্মীপুরের রায়পুর সরকারি স্কুলের দুই শিক্ষক। অফিসিয়াল ছুটি না নেয়ায় দুই শিক্ষককে স্ব-শরীরে হাজির হয়ে জবাব দেওয়ার নির্দেশনা (শোকজ) দিয়েছেন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা।

শিক্ষকরা হলেন, উপজেলায় উত্তর চরবংশি ইউনিয়ন খাশের হাট বাজার (ক্রমিক নং-২১, বিদ্যালয় গ্রেট -(এ), EMIS কোড-(১৩৭০৭), চরবংশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইকরাম হোসেন ও প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তফা কামাল। তারা দুই মাসের চিকিৎসা ছুটিতে যান এবং কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই কোনো NOC না নিয়ে বিদেশে চাকরির উদ্দেশে চলে যান।

চরবংশী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, স্কুলের ১১ জন শিক্ষকদের মধ্যে ৩ জনই ছুটিতে রয়েছেন। তাদের মধ্যে সাবিনা নামের একজন সহকারী শিক্ষক ৬ জুন থেকে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছেন। সহকারী শিক্ষক ইকরাম ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত এবং প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামালও ৫ অক্টোবর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের মধ্যে চিকিৎসা জনিত ছুটিতে থাকবেন বলে দরখাস্তে লেখা রয়েছে।

কয়েকজন শিক্ষক জানান, স্কুলটি ১৯৩৬ সালের পর টিনের ও ১৯৭৩ সালে আধাপাকা হলেও ২০০৪ সালে একতলা ভবন কর দেন সরকার। উপজেলার মধ্যে (এ) গ্রেটের স্কুলটিতে ৪০৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে (বালক ১৭৫ ও বালিকা ২২৯ জন)। ৩ জন শিক্ষক ছুটিতে থাকায় উপস্থিতি শিক্ষকদের উপর পড়েছে অতিরিক্ত মানসিক চাপ। নিজেদের নির্ধারিত ক্লাস নেওয়ার পরেও নিতে হচ্ছে ছুটিতে থাকা তিন শিক্ষকদের পক্সি ক্লাস।

স্কুলের শিক্ষকদের হাজিরা খাতা দেখতে চাইলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া দেখানো যাবে না বলে সাংবাদিকদের তথ্য নিতে শিক্ষা অফিসের অনুমতি লাগবে বলে জানান সহকারী শিক্ষক মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, সহকারী শিক্ষক ইকরাম ও প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল চিকিৎসাজনিত ছুটিতে আছেন। এখন কোথায় আছেন তা আমাদের জানা নেই।

তবে স্থানীয় সূত্রে বলছে, ওই দুই শিক্ষক বিদেশে মিথ্যা চিকিৎসা ছুটি নিয়ে বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে সহকারী শিক্ষক মাহমুদুর রহমান মুরাদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সহযোগিতা রয়েছে।

সহকারী শিক্ষক ইকরাম হোসেনের বাবা বলেন, ইকরাম চিকিৎসার জন্য নেদারল্যান্ডে গিয়েছেন। আমার ছোট ছেলে ডাক্তার সে এবং আমার মেয়ে নেদারল্যান্ডে বসবাস করেন। ইকরাম তাদের কাছে চিকিৎসার জন্য গেছেন আবার সে তার কর্মস্থলে চলে আসবেন।

প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামালের স্ত্রী রোকসানা বলেন, আমার স্বামী বর্তমানে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মোস্তফা কামালের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে ফোন দেওয়া হলে তার ব্যবহৃত সিমটি বন্ধ পাওয়া যায়। মেডিকেলের কত নম্বর বেডে চিকিৎসা নিচ্ছেন তাও জানেন না তার স্ত্রী।

তবে তার এক প্রতিবেশী জানান, মোস্তাফা কামাল কয়েক দিন পূর্বে নেদারল্যান্ডে চাকরির উদ্দেশে গেছেন। এর আগেও মোস্তাফা কামাল ৩ মাস নেদারল্যান্ডে গিয়ে চাকরি করে আবার দেশে এসে স্কুলের চাকরি করেন। এখন আবারও চলে গেছেন।

স্থানীয়দের মধ্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও কয়েকজন বলেন, দুজন শিক্ষক দেশের মধ্যে চিকিৎসা ছুটির নামে কর্তৃপক্ষকে ফাঁকি দিয়ে চাকরির উদ্দেশে বিদেশে গিয়েছেন।

এ ব্যাপারে সহকারী শিক্ষক মাহমুদুর রহমান মুরাদ সরাসরি সহযোগিতা করেছেন বলেই হয়তো সহকারী শিক্ষক মাহমুদুর রহমান মুরাদ শিক্ষকদের হাজিরা রেজিস্ট্রার খাতা দেখাতে বাঁধা দিয়েছেন। কারণ যেদিন তারা বিদেশে গিয়েছে সেদিনও সহকারী শিক্ষক মাহমুদুর রহমান এলাকায় ছিলেন না।

স্থানীয় সূত্রে আরও জানায়, মাহমুদুর রহমান মুরাদ ঠিক মতো নিয়মিত ক্লাস করেন না। তিনি প্রতিদিন স্কুলে এসে হাজিরা দিয়ে তার ব্যবসায়ীক কাজে চলে যান। ঊর্ধতন কোনো কর্মকর্তা বা কোনো সাংবাদিক আসলে তাকে ফোন দিলে কিছু সময় পরে তিনি এসে যেকোনো একটা অজুহাত দেখান।

দুজন শিক্ষক দেশের বাইরে যাওয়ার বিষয়ে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, আমি জানি তারা চিকিৎসাজনিত ছুটিতে আছেন। কিন্তু কোথায় আছেন তা জানা নেই।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও চরবংশী ইউনিয়ন ক্লাস্টার মো. টিপু সুলতান বলেন, সহকারী শিক্ষক ইকরাম ও প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল তারা দুজন দেশের মধ্যে ৬০ কর্মদিবসের জন্য চিকিৎসাজনিত ছুটিতে রয়েছে। তাদের বিদেশে যাওয়ার অনুমতি নেই। প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল চাকুরির শুরুতেও অনুমতি ছাড়া তিন মাস অনুপস্থিত ছিলেন। তিন মাসের অনুপস্থিত থাকায় তার উপর দুই বছরের ইনক্রিমেন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেই শাস্তি এখনো চলমান। এরই মধ্যে তিনি বিদেশে গিয়েছে সেটা জানা নেই। বিষয়টি জানতে পেরে আবারও শোকজ করা হয়েছে। তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
error: Content is protected !!