ঢাকা ০২:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাহিদার তুলনীয় অপর্যাপ্ত বিদ্যূৎ সরবারহ,তাপদাহ – লোডশেডিংয়ে ভোগান্তি চরমে।

লক্ষ্মীপুর জেলা জুড়ে চলমান তাপদাহ আর দিনে-রাতের মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জেলার পাঁচ উপজেলার মানুষ। গরমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদাও বেড়ে গেছে। তবে সে তুলনায় সরবারহ নেই। ফলে দৈনিক গড়ে ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছাড়াই থাকছেন এখানকার পল্লী বিদ্যুতের প্রায় পাঁচ লাখ গ্রাহক।

এ অবস্থায় পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ পড়েছে বেকায়দায়। পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ চেয়ে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ গত শনিবার পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে। তবে কত দিন বিদ্যুতের এই দুরবস্থা থাকবে, তা কেউই জানাতে পারেননি বিদ্যূৎ সংশ্লিষ্ট কেউই।

লক্ষ্মীপুর জেলার এমবিএম ব্রিক ফিল্ড এর কর্নধর মোঃওসমান পাটোওয়ারী বলেন মাস শেষে বিদ্যূৎ বিল কয়েক লাখ টাকা আসে অথচ এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকলে, ২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। তাঁদের এলাকাগুলোতে দিনে-রাতে ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টা লোডশেডিং থাকে। এমন অবস্থার কারণে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা-বাণিজ্য বিঘ্নিত হচ্ছে। জেনারেটর চালিয়ে তেলও কিনতে হচ্ছে আবার বিলও দিতে হচ্ছে ।

পল্লী বিদ্যুৎ এজিএম লক্ষ্মীপুর , চাহিদা ও সরবরাহের ঘাটতি সমন্বয় করতে নিয়মিত লোডশেডিং করতে হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে এলাকাভিত্তিক এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ দিয়ে, এক ঘণ্টা লোডশেডিং করা হচ্ছে।

লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার পাঁচ উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের প্রায় পাঁচ লাখ গ্রাহক আছেন। রামগঞ্জ ও নোয়াখালীর চৌমুহনী গ্রিড থেকে এসব উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের জন্য রাতে সরবরাহ চাহিদা থাকে ১৩৪ মেগাওয়াট। আর দিনের জন্য ৯০ থেকে ১০০ মেগাওয়াট প্রয়োজন। কিন্তু গ্রিড থেকে পাওয়া যাচ্ছে রাতে মাত্র ৫০ থেকে ৫৫ এবং দিনে ৪৫ মেগাওয়াট। অর্থাৎ, চাহিদার তুলনায় অর্ধেকেরও কম বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। গত শনিবার পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি খারাপ ছিল। চাহিদার মাত্র ৩৮ শতাংশ বিদ্যুৎ পাওয়া যায় ওই দিন। এক মাস ধরেই লোডশেডিং চলছে লক্ষ্মীপুরে। তবে অবস্থা সবচেয়ে বেশি খারাপ গত বুধবার থেকে।

বিদ্যূৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রকৌঃ হোসেন মাহমুদ শামীম ফরহাদ বলেন ,সব মিলিয়ে চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে।

লক্ষ্মীপুর ও রায়পুর পৌরসভার পানি সরবরাহ শাখার কাউছার আলম বলেন, ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে পৌরসভার ট্যাংকে পানি ওঠানোয় সমস্যা হচ্ছে। ফলে গ্রাহকদের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে পানি সরবরাহ করা যাচ্ছে না।এর সঙ্গে দিনে-রাতে সমানে লোডশেডিং চলছে।

রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাঃনাহিদা আক্তার মিতু বলেন ,
প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লোডশেডিং শুরু হওয়ায় চিকিৎসা কার্যক্রম দূরুহ হয়ে দাড়িয়েছে , বিশেষ করে প্রবীণ ও শিশুদের কষ্ট-দুর্ভোগ চরমে। অস্বাভাবিক লোডশেডিংয়ের কারণে তাঁদের ভোগান্তি হচ্ছে ।

জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক জাকির হোসেন বলেন, সব মিলিয়ে চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। পরিস্থিতি এখন সব জায়গায় একই, আগামী মাসে বিদ্যূৎ পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

লক্ষ্মীপুরের উত্তরচরবংশী ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কমিটির বিলুপ্ত  

চাহিদার তুলনীয় অপর্যাপ্ত বিদ্যূৎ সরবারহ,তাপদাহ – লোডশেডিংয়ে ভোগান্তি চরমে।

আপডেট : ০৪:৪৪:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ জুন ২০২৩

লক্ষ্মীপুর জেলা জুড়ে চলমান তাপদাহ আর দিনে-রাতের মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জেলার পাঁচ উপজেলার মানুষ। গরমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদাও বেড়ে গেছে। তবে সে তুলনায় সরবারহ নেই। ফলে দৈনিক গড়ে ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছাড়াই থাকছেন এখানকার পল্লী বিদ্যুতের প্রায় পাঁচ লাখ গ্রাহক।

এ অবস্থায় পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ পড়েছে বেকায়দায়। পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ চেয়ে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ গত শনিবার পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে। তবে কত দিন বিদ্যুতের এই দুরবস্থা থাকবে, তা কেউই জানাতে পারেননি বিদ্যূৎ সংশ্লিষ্ট কেউই।

লক্ষ্মীপুর জেলার এমবিএম ব্রিক ফিল্ড এর কর্নধর মোঃওসমান পাটোওয়ারী বলেন মাস শেষে বিদ্যূৎ বিল কয়েক লাখ টাকা আসে অথচ এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকলে, ২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। তাঁদের এলাকাগুলোতে দিনে-রাতে ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টা লোডশেডিং থাকে। এমন অবস্থার কারণে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা-বাণিজ্য বিঘ্নিত হচ্ছে। জেনারেটর চালিয়ে তেলও কিনতে হচ্ছে আবার বিলও দিতে হচ্ছে ।

পল্লী বিদ্যুৎ এজিএম লক্ষ্মীপুর , চাহিদা ও সরবরাহের ঘাটতি সমন্বয় করতে নিয়মিত লোডশেডিং করতে হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে এলাকাভিত্তিক এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ দিয়ে, এক ঘণ্টা লোডশেডিং করা হচ্ছে।

লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার পাঁচ উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের প্রায় পাঁচ লাখ গ্রাহক আছেন। রামগঞ্জ ও নোয়াখালীর চৌমুহনী গ্রিড থেকে এসব উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের জন্য রাতে সরবরাহ চাহিদা থাকে ১৩৪ মেগাওয়াট। আর দিনের জন্য ৯০ থেকে ১০০ মেগাওয়াট প্রয়োজন। কিন্তু গ্রিড থেকে পাওয়া যাচ্ছে রাতে মাত্র ৫০ থেকে ৫৫ এবং দিনে ৪৫ মেগাওয়াট। অর্থাৎ, চাহিদার তুলনায় অর্ধেকেরও কম বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। গত শনিবার পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি খারাপ ছিল। চাহিদার মাত্র ৩৮ শতাংশ বিদ্যুৎ পাওয়া যায় ওই দিন। এক মাস ধরেই লোডশেডিং চলছে লক্ষ্মীপুরে। তবে অবস্থা সবচেয়ে বেশি খারাপ গত বুধবার থেকে।

বিদ্যূৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রকৌঃ হোসেন মাহমুদ শামীম ফরহাদ বলেন ,সব মিলিয়ে চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে।

লক্ষ্মীপুর ও রায়পুর পৌরসভার পানি সরবরাহ শাখার কাউছার আলম বলেন, ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে পৌরসভার ট্যাংকে পানি ওঠানোয় সমস্যা হচ্ছে। ফলে গ্রাহকদের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে পানি সরবরাহ করা যাচ্ছে না।এর সঙ্গে দিনে-রাতে সমানে লোডশেডিং চলছে।

রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাঃনাহিদা আক্তার মিতু বলেন ,
প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লোডশেডিং শুরু হওয়ায় চিকিৎসা কার্যক্রম দূরুহ হয়ে দাড়িয়েছে , বিশেষ করে প্রবীণ ও শিশুদের কষ্ট-দুর্ভোগ চরমে। অস্বাভাবিক লোডশেডিংয়ের কারণে তাঁদের ভোগান্তি হচ্ছে ।

জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক জাকির হোসেন বলেন, সব মিলিয়ে চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। পরিস্থিতি এখন সব জায়গায় একই, আগামী মাসে বিদ্যূৎ পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান।