বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশে ১৪ মাস পরে যে নির্বাচন, সে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনেক চক্রান্তের খেলা চলছে। তিনি বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে চোখ কচলাতে কচলাতে নালিশ পার্টি গুলশান ও বারিধারায় যায়, নালিশ জানাতে।’
সোমবার (৩ অক্টোবর) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে দুর্গাপূজার অষ্টমীতে সন্ধিপূজা শেষে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘দেবী দুর্গার আগমন ভক্তরা উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপন করছে। সর্বজনীন এ উৎসবে হিন্দু-মুসলমান কোনও কথা নয়, সব মানুষ এই পূজায় আসছে। আপনাদের নিরাপত্তা আমাদের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব এবং কর্তব্য। সারা বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সনাতন ধর্মালম্বীদের পাশে আছেন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। আপনাদের ভয়ের কোনও কারণ নেই। আমরা খোঁজ নিয়েছি, এখনও পর্যন্ত সারা দেশে দুর্গোৎসব উৎসবের মতোই উদযাপন হচ্ছে। আমি নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে বলবো ‘
তিনি বলেন, ‘এ দেশে ১৪ মাস পরে যে নির্বাচন, সে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনেক চক্রান্তের খেলা চলছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে উসকানিমূলক তৎপরতা চলছে।’
নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়ে ওবায়দুল বলেন, ‘আমাদের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসবের দিনগুলো অনেক স্পর্শকাতর। এখানে দুর্বৃত্ত দল ঘটনা ঘটিয়ে আওয়ামী লীগের ঘাড়েও দোষ চাপায়। যেটা আমরা অনেকবার দেখেছি। কাজেই আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে। দুর্গা দেবীর কাছে আমাদের কামনা থাকবে— এই অপশক্তির বিনাশ হোক, সাম্প্রদায়িকতার বিনাশ হোক, সহিংসতার বিনাশ হোক।’
আওয়ামী লীগের শাসনামলে মাত্র একটি পূজায় সাম্প্রদায়িক হামলা সংঘটিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলে, ‘আমাদের ১৩ বছরে মাত্র একবার সারা দেশে কয়েক জায়গায় কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু ১২টি পূজা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সারা দেশে ৩২-৩৪ হাজার পূজামণ্ডপ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কারও ঘুম নেই, তারা সতর্ক অবস্থায় আছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘পূজামণ্ডপে আপনারা বিরোধীদের পাবেন না। তারা কান পেতে আছে, কখন গত বছরের মতো একটি ঘটনা ঘটে। রূপরেখা তৈরি করছে, রূপও নেই রেখাও নেই। আন্দোলনের রূপরেখা খালি হচ্ছে, কী হচ্ছে? কবে হচ্ছে? কেউই জানে না। সকালে ঘুম থেকে ওঠে চোখ কচলাতে কচলাতে নালিশ পার্টি গুলশান ও বারিধারায় যায়, নালিশ জানাতে। যাদের কাছে নালিশ করে, তাদের কাছে সবিনয়ে জানতে চাই— পৃথিবীর কোন দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়? একটা দেশ দেখান। বাংলাদেশে কেন হবে? তত্ত্বাবধায়কের পঁচা গলিত লাশ মিউজিয়ামে পাঠিয়েছি, সেটি আবার কেন টেনে নিয়ে আসছেন? যারা তত্ত্বাবধায়কের নালিশ শুনেন তারা জানেন না, ইদানীং যত নির্বাচন হয়েছে, কোথায় তত্ত্বাবধায়ক?’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যারা এসব কথা শুনেন, তাদের বলি— গণতন্ত্রের গল্প শুনুন, বলুন। কিন্তু আজকে বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে আপনাদের এত মাথা ব্যথা কেন? নিজেদের দেশের আয়নায়, নিজেদের গণতন্ত্রের চেহারা দেখুন। তার আগে বাংলাদেশ নিয়ে মন্তব্য করতে আসবেন না। আমরা সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত— একথা আমরা বলবো না। আমরা ইম্প্রুভ করছি, সামনের দিকে আরও ইম্প্রুভ করবো। আমাদের বিষয় নিয়ে নাক গলানোর কোনও প্রয়োজন মনে করছি না। এসব না করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামান। যুদ্ধ করছে বড় দেশগুলো, আর ভোগান্তি পোহাতে হয় আমাদের মতো ছোট দেশগুলোকে।’