৪৪ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো লক্ষ্মীপুরে একসাথে ৫টি ব্রীজ অনুমোদন- নয়ন এমপি।
লক্ষ্মীপুর বুলেটিন ডেস্ক:
লক্ষ্মীপুরে নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপির হাত ধরে সদরে ২টি ও রায়পুরে ৪টি দীর্ঘ দৈর্ঘের সেতুর জন্য গ্রামবাসীর ৪৪ বছরের অপেক্ষার অবসান হচ্ছে আসন্ন একনেক মিটিংয়ে।
লক্ষ্মীপুুর এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, সেতু নির্মাণের জন্য ১০টি প্রস্তাবনা দেয়া হয়। এগুলো হলো যথাক্রমে – আব্দুল মতিন চৌধুরী বাড়ি সড়কের ৬০মি: ,রায়পুর উপজেলাধীন কালু বেপারী সড়কের ৩০মি: ,চরমোহনা হইতে চররুহিতা ইউনিয়ন ও চরবংশী জমাদার বাড়ি সড়কে ১০০মি, ব্রীজ নির্মাণ ,চরবংশী জমিদার বাড়ি সড়কে ৩৫ মিটার ব্রীজ নির্মাণ এবং সদরে
রসুলগঞ্জ ইউপি অফিস-কাঞ্চনী বাজার চর রুহিতা বাজার রোড এ ওয়াপদা খালের উপর ২৭মি , টুমচর-জনতাবাজার-কালিরচর মাদ্রাসা-চর মতিন রোড ৩০০ মিটার সেতু,টুমচর-আবাসন সেন্টার রোডের রহমত খালি খালের উপর দিয়ে ২৮০মিটার ,মজু চৌধুরী বাজার-কালিরচর দাখিল মাদ্রাসা- ভবানীগঞ্জ বাজার রোড ৪৫মিটার , কালির চর তালপট্টি রোডে রহমত খালের ওপর দিয়ে ২০০মি. ব্রীজের প্রস্থাবনা পাঠান লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য এড.নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপি। তবে ১০টি ব্রীজের মধ্যে ৫টি বড় ব্রীজ অনুমোদন করেছে মন্ত্রনালয় । দীর্ঘ ৪৪ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিগত মন্ত্রী ও এমপিদের ছাড়িয়ে বর্তমান সংসদ সদস্য এড.নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপির হাত ধরে ব্রীজ গুলো অনুমোদিত হয় ।
অনুমোদনকৃত রায়পুরের গাজীনগর – আশ্রাফগঞ্জ দুই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের ডাকাতিয়া নদীর উপর ১টি ব্রীজ , সায়েস্তানগর – চরমোহনা ইউনিয়নের আব্দুল মতিন চৌধুরী বাড়ির সন্মুখে ১টি ব্রীজ, চরমোহনা-চররুহিতা সংযোগ সড়ক ভায়া কালুবেপারী হাট সংলগ্ন ডাকাতিয়া নদীর উপর ১টি এবং সদরের টুমচরে ২ ব্রীজ নির্মাণের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত স্থান পরিদর্শন করেন এলজিইডি প্রকল্প পরিচালক এবাদত হোসেন এর নেতৃত্ব একটি পরিদর্শন টিম। এই সময়ে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ, উপজেলা প্রকৌশলী সুমন মুন্সী , চরপাতা ইউপি চেয়ারম্যান সুলতান মামুনুর রশিদ, রায়পুর ইউনিয়নের শফিউল আজম চৌধুরী সুমন চেয়ারম্যান,দক্ষিন চরবংশী ইউপি চেয়ারম্যান আবু সালেহ মিন্টু ফরায়েজী, জামাল হোসেন মেম্বারসহ এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।
রায়পুর ইউনিয়নে সরেজমিনে যেয়ে জানা যায় ,প্রায় ১শ মিটার খালে ৪০ বছর আগে এলাকাবাসী চাঁদা উত্তোলন করে ডাকাতিয়া নদীর উপর বাঁশের সাঁকোটি তৈরি। সে থেকে প্রতি বছরই চাঁদার টাকায় প্রয়োজনে চলে সংস্কার। কিন্তু ৪৪ বছর পরও বাশেঁর সাঁকোটি পরিবতর্ন সম্ভব হয়ে ওঠেনি। রায়পুর ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামের ডাকাতিয়া নদীর ওপর নির্মিত সে সাঁকোটি। ফলে সাঁকোটি দিয়ে সহস্রাধিক মানুষ ও শিক্ষার্থীদের পারাপারের পাশাপাশি কৃষকরা তাদের ফসল নিয়ে বাড়তি প্রায় পাঁচ মাইল পথ ঘুরে চলাচল করতে হয়। এতে মানুষের সময় নষ্ট হচ্ছে। সঙ্গে চরম দুর্ভোগও পোহাতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের বার বার বলেও কোনো লাভ হচ্ছে না।ব্রীজের স্থান সরেজমিনে পরিদর্শন করছেন এবাদত হোসেন।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের চরমোহনা, দেবীপুর, শায়েস্তানগর, উত্তর রায়পুর, গাইয়ারচর, আলোনিয়াসহ পাঁচটি গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে গেছে ডাকাতিয়া নদী। নদীটি পারাপারের জন্য একটি সাঁকো বা ব্রিজের প্রয়োজন। কিন্তু ব্রিজের জন্য ৪৪ বছর ধরে থেকেই ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও এলাকার সাংসদদের কাছে বারবার গেলেও তা কর্ণপাত করেননি। তাই এলাকাবাসীর চাঁদায় নদীর উপর নির্মান করা হয় বাশেঁর সাঁকো।সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদফতর লক্ষ্মীপুরের আওতায় ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাজেট হলেও পরিমাণ মত না হওয়ায় নদীর উপরে ব্রীজটি আর নির্মান হয়নি। কর্মকর্তারা বলছেন নদীর উপরে ব্রীজ করতে হলে পর্যাপ্ত বাজেট ছাড়া সম্ভব নয়। দেবীপুর গ্রামের ইউপি সদস্য জামাল হোসেন মিয়াজী জানান, ডাকাতিয়া নদীর উপর গ্রামবাসীর ঝুঁকিপূর্ণ বাশেঁর সাঁকোটির উপর দিয়ে হাজার হাজার মানুষ ও শিক্ষার্থী জনকল্যান বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, শায়েস্তনগর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা, দেবীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যারয়েল শিক্ষার্থীসহ রায়পুর শহরে গ্রামবাসীরা আতংক নিয়ে পারাপার হতে হয়। এছাড়াও সাঁকোটির চারপাশ বিশাল এলাকাজুড়ে আবাদি জমি রয়েছে। কিন্তু ব্রিজ না থাকায় কৃষি যন্ত্রপাতি নিয়ে কৃষকরা এপার থেকে ওপারে যেতে পারেন না।
রায়পুর ও সদর (অঃদা) উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী সুমন মুন্সী জানান, আমি এখানে আসার অনেক আগেই ডাকাতিয়া নদীর উপর বাশেঁর তৈরি ঝুঁকিপূর্ণ শুনেছি। বহু বছর যাবৎ সাঁকোটি ব্যবহার হচ্ছে। গ্রামবাসীর উপকার্থে দ্রুত প্রয়োজনীয় সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সেই লক্ষ্যে স্থান সমূহ পরিদর্শন করছেন।
রায়পুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে জানান, আমি দায়িত্ব নেয়ার পর এলাকাবাসীর দাবী ছিলো এই তিনটি ব্রীজ নির্মাণ। আমি সেই দাবী গুলো আমাদের সংসদ সদস্য নয়ন এমপির সহযোগিতায় এগুলো এলজিইডির মাধ্যমে অধিদপ্তর ও মন্ত্রনালয়ে থেকে অনুমোদন প্রাপ্ত হয়। সেই আলোকে জনগুরুত্বপূর্ণ সেতু বিবেচনা করে এটি আগামী একনেক মিটিংয়ে উপস্থাপন হবে প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দে। তাতেই অবসান হতে পারে জনদূর্ভোগ এলাকাবাসীর।
লক্ষ্মীপুর জেলা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃশাহআলম পাটোওয়ারী বলেন , রায়পুর উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন এর লাখ লাখ জনগনের ভোগান্তি লাগবে ৩টি সেতু ও সদরে ২টি সেতু স্থাপনে আমাদের একজন প্রজেক্ট ডিরেক্টর এবাদত হোসেন তিনি সরেজমিনে ফিজিভিলিটি পরিদর্শনে আসেন। তিনি প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন আসন্ন একনেক মিটিংয়ে মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে।
লক্ষ্মীপুর দুই আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন জানান , লক্ষ্মীপুরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একজন সংসদস্যের হাত ধরে দশটি ব্রিজের মধ্যে পাঁচটি বড় সেতু নির্মিত হচ্ছে । খুব শীঘ্রই অনুমোদিত পাঁচটি সেতু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একনেকে অনুমোদন দিবেন এবং অর্থ ছাড় দেওয়ার ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিবেন। আমি নিজে এই সেতু গুলো জনগনের ভোগান্তি লাগবে সংসদ সদস্য দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে অদ্যবধি সেতুগুলো নির্মাণের লক্ষ্যে দিনরাত তদবির করেছি ।লক্ষ্মীপুরের সকল ইউনিয়নের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন , কৃষি খাতে উন্নয়ন , কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে এবং স্মার্ট যোগাযোগ ব্যবস্থায় এই সেতুগুলো স্থাপিত হলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন ।
ট্যাগ :