ঢাকা ০৯:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আক্কেল দাঁত কেন মানুষকে উঠতে কষ্ট দেয়? আক্কেল দাঁতের চিকিৎসার প্রয়োজন কেন?

মানুষের মুখগহ্বরের উপরের ও নিচের চোয়ালের সবচেয়ে পেছনে বা শেষে উভয় দিকে একটি করে মোট চারটি দাঁত ওঠে আর এই দাঁতগুলোকে আক্কেল দাঁত বা উইজডম টিথ বলে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ১৭ থেকে ২১ বছর বয়সের মধ্যে এই দাঁত উঠে থাকে। তখন আমাদের মাড়ির টিস্যু একটু পুরু ও শক্ত হয়ে যায়। দাঁতটি আসতে হলে তো মাড়িকে একটু চিরে উঠতে হবে। ফলে ওঠার সময় চাপ হয় এবং মাড়িকে একটু চিরে সে বের হয়। সে জন্য ব্যথা হয়ে থাকে।

আক্কেল দাঁত উঠার ক্ষেত্রে সৃষ্ট সমস্যাঃ

সাধারণত আক্কেল দাঁতের অবস্থান অনেক সময় ঠিক থাকে না। পর্যাপ্ত যায়গা না থাকার কারণে বেশিরভাগ সময় বিভিন্নভাবে বাঁকা হয়ে উঠে। ফলে সঠিকভাবে মাড়িতে উঠতে পারে না। দাঁত উঠার সময় ব্যথা হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রেই আক্কেল দাঁত ঠিকভাবে উঠে। আবার অনেকের ঠিক ভাবে উঠে না অথবা আংশিকভাবে উঠে। গালের দিকে, জিহ্বার দিকে, উপরের মাড়ি থেকে তালুর দিকে দাঁতটা উঠতে পারে। আবার অনেক সময় দাঁতটি একেবারেই মাড়ির ভেতরে থেকে যায়। অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় দাঁত বাঁকা হয়ে ওঠার কারনে চিক বাইট করে। এর মানে হচ্ছে আমাদের গালের দুই পাশে দাঁতের পাশে যে নরম টিস্যু আছে খাবার সময় ওই টিস্যুতে কামড় লাগে। দীর্ঘদিন এরকম হওয়ার ফলে ওই যায়গাটাতে ইনফেকশন হয়।
আক্কেল দাঁত ওঠার সঙ্গে সঙ্গে প্রথমত প্রচণ্ড ব্যথা হয়। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে ব্যাথা হয় না। মাড়িটা ফুলে যায়। এই ফোলাটা এত মারাত্মক হতে পারে যে শুধু মুখের ভেতরে ফোলাটা থাকে না, গালের দিকে ফুলে ওঠে, গলার দিকে ফুলে ওঠে। রোগী হয়তো অনেক সময় দ্বিধায় পড়ে যেতে পারেন। ভাবতে পারেন, টনসিলের ব্যথা হয়েছে। কারণ, আক্কেল দাঁতের জন্য যে গলা, মুখ ফুলে যেতে পারে এ বিষয়ে ধারণা কম থাকে। তাই রোগী দ্বিধায় পড়ে যান।
দাঁতটি উঠার জন্য যতটুকু জায়গা দরকার ততটুকু জায়গা না পেলে তখন একটি প্রদাহ হয়। তখন হা করতে কষ্ট হয়। কারো কারো ঢোক গিলতে কষ্ট হয়।
অনেক ক্ষেত্রে আক্কেল দাঁত বাঁকা হয়র পাশের দাঁতকে ধাক্কা দেয়। তখন পাশের ভাল দাঁতেও সমস্যা সৃষ্টি হয়।
অনেকের মাড়ির প্রদাহ হয়ে থাকে। এটি থেকে ইনফেকশন হয়ে থাকে। ধীরে ধীরে পুঁজ জমে যায়।তখন রোগীর খাওয়ায় সমস্যা হয়, ব্যথা হয়, মাড়ি ফুলে যায়। এই সমস্যাকে পেরিকরোনাইটিস বলে। আর এই ইনফেকশান ওরাল ক্যাভিটি থেকে ছড়িয়ে যেতে পারে অন্যান্য টিস্যুতে।

চিকিৎসাঃ

স্বাভাবিক কাজের সমস্যা সৃষ্টি হলে আক্কেল দাঁত ফেলে দেয়া উচিত। আমাদের প্রধান যে খাবারের দাঁত, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় মোলার টিথ বলি, আক্কেল দাঁত সেই মোলার তিনটি দাঁতের মধ্যে একটি। তবে এগুলো আসলে আমাদের খাবার চিবানোতে খুব বেশি কাজে লাগে না। তাই সমস্যা সৃষ্টিকারী আক্কেল দাঁত ফেলে দিলে খাওয়াতে কোন অসুবিধা হয় না। এছাড়াও বিশেষজ্ঞ ডেন্টিষ্টরা আরো বিভিন্ন চিকিৎসার মাধ্যমে আক্কেল দাঁতের সমস্যা সমাধান করে থাকেন।

ডেন্টিষ্ট মো:ওয়াহিদুর রহমান মুরাদ
ডিএমডিটি (সাইক মেডিকেল)
এফটি :ঢাকা ডেন্টাল কলেজ এন্ড হাসপাতাল
দাঁত ও মুখের যেকোন সমস্যায়ঃ
ম্যাক্স ডেন্টিষ্ট পয়েন্ট, মুড়ি হাটা রোড, ২য়তলা, রায়পুর
মোবাইল :01711122829

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

লক্ষ্মীপুরের উত্তরচরবংশী ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কমিটির বিলুপ্ত  

আক্কেল দাঁত কেন মানুষকে উঠতে কষ্ট দেয়? আক্কেল দাঁতের চিকিৎসার প্রয়োজন কেন?

আপডেট : ০২:১৮:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর ২০২২

মানুষের মুখগহ্বরের উপরের ও নিচের চোয়ালের সবচেয়ে পেছনে বা শেষে উভয় দিকে একটি করে মোট চারটি দাঁত ওঠে আর এই দাঁতগুলোকে আক্কেল দাঁত বা উইজডম টিথ বলে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ১৭ থেকে ২১ বছর বয়সের মধ্যে এই দাঁত উঠে থাকে। তখন আমাদের মাড়ির টিস্যু একটু পুরু ও শক্ত হয়ে যায়। দাঁতটি আসতে হলে তো মাড়িকে একটু চিরে উঠতে হবে। ফলে ওঠার সময় চাপ হয় এবং মাড়িকে একটু চিরে সে বের হয়। সে জন্য ব্যথা হয়ে থাকে।

আক্কেল দাঁত উঠার ক্ষেত্রে সৃষ্ট সমস্যাঃ

সাধারণত আক্কেল দাঁতের অবস্থান অনেক সময় ঠিক থাকে না। পর্যাপ্ত যায়গা না থাকার কারণে বেশিরভাগ সময় বিভিন্নভাবে বাঁকা হয়ে উঠে। ফলে সঠিকভাবে মাড়িতে উঠতে পারে না। দাঁত উঠার সময় ব্যথা হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রেই আক্কেল দাঁত ঠিকভাবে উঠে। আবার অনেকের ঠিক ভাবে উঠে না অথবা আংশিকভাবে উঠে। গালের দিকে, জিহ্বার দিকে, উপরের মাড়ি থেকে তালুর দিকে দাঁতটা উঠতে পারে। আবার অনেক সময় দাঁতটি একেবারেই মাড়ির ভেতরে থেকে যায়। অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় দাঁত বাঁকা হয়ে ওঠার কারনে চিক বাইট করে। এর মানে হচ্ছে আমাদের গালের দুই পাশে দাঁতের পাশে যে নরম টিস্যু আছে খাবার সময় ওই টিস্যুতে কামড় লাগে। দীর্ঘদিন এরকম হওয়ার ফলে ওই যায়গাটাতে ইনফেকশন হয়।
আক্কেল দাঁত ওঠার সঙ্গে সঙ্গে প্রথমত প্রচণ্ড ব্যথা হয়। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে ব্যাথা হয় না। মাড়িটা ফুলে যায়। এই ফোলাটা এত মারাত্মক হতে পারে যে শুধু মুখের ভেতরে ফোলাটা থাকে না, গালের দিকে ফুলে ওঠে, গলার দিকে ফুলে ওঠে। রোগী হয়তো অনেক সময় দ্বিধায় পড়ে যেতে পারেন। ভাবতে পারেন, টনসিলের ব্যথা হয়েছে। কারণ, আক্কেল দাঁতের জন্য যে গলা, মুখ ফুলে যেতে পারে এ বিষয়ে ধারণা কম থাকে। তাই রোগী দ্বিধায় পড়ে যান।
দাঁতটি উঠার জন্য যতটুকু জায়গা দরকার ততটুকু জায়গা না পেলে তখন একটি প্রদাহ হয়। তখন হা করতে কষ্ট হয়। কারো কারো ঢোক গিলতে কষ্ট হয়।
অনেক ক্ষেত্রে আক্কেল দাঁত বাঁকা হয়র পাশের দাঁতকে ধাক্কা দেয়। তখন পাশের ভাল দাঁতেও সমস্যা সৃষ্টি হয়।
অনেকের মাড়ির প্রদাহ হয়ে থাকে। এটি থেকে ইনফেকশন হয়ে থাকে। ধীরে ধীরে পুঁজ জমে যায়।তখন রোগীর খাওয়ায় সমস্যা হয়, ব্যথা হয়, মাড়ি ফুলে যায়। এই সমস্যাকে পেরিকরোনাইটিস বলে। আর এই ইনফেকশান ওরাল ক্যাভিটি থেকে ছড়িয়ে যেতে পারে অন্যান্য টিস্যুতে।

চিকিৎসাঃ

স্বাভাবিক কাজের সমস্যা সৃষ্টি হলে আক্কেল দাঁত ফেলে দেয়া উচিত। আমাদের প্রধান যে খাবারের দাঁত, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় মোলার টিথ বলি, আক্কেল দাঁত সেই মোলার তিনটি দাঁতের মধ্যে একটি। তবে এগুলো আসলে আমাদের খাবার চিবানোতে খুব বেশি কাজে লাগে না। তাই সমস্যা সৃষ্টিকারী আক্কেল দাঁত ফেলে দিলে খাওয়াতে কোন অসুবিধা হয় না। এছাড়াও বিশেষজ্ঞ ডেন্টিষ্টরা আরো বিভিন্ন চিকিৎসার মাধ্যমে আক্কেল দাঁতের সমস্যা সমাধান করে থাকেন।

ডেন্টিষ্ট মো:ওয়াহিদুর রহমান মুরাদ
ডিএমডিটি (সাইক মেডিকেল)
এফটি :ঢাকা ডেন্টাল কলেজ এন্ড হাসপাতাল
দাঁত ও মুখের যেকোন সমস্যায়ঃ
ম্যাক্স ডেন্টিষ্ট পয়েন্ট, মুড়ি হাটা রোড, ২য়তলা, রায়পুর
মোবাইল :01711122829