এম আর সুমন,সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট :
মানুষের চিকিৎসাসেবার একমাত্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির সার্বিক অবকাঠামোর সৌন্দর্য বৃদ্ধি, নিয়ম-শৃঙ্খলার উন্নতি ও সেবার মানে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। বর্তমান হাসপাতালের সেবা নিয়েও এলাকার মানুষ বেশ সন্তুষ্ট।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দেখতে বেশ ঝকঝকে, তকতকে। দীর্ঘ এক যুগ বন্ধ থাকার পর চালু হয়েছে এক্সরে ও আল্ট্রাসনোগ্রাফিসহ প্রায় ১৪টি পরীক্ষা-নিরীক্ষার কর্যক্রম। এছাড়াও বন্ধ থাকা মাতৃস্বাস্থ্য কার্যক্রমের সিজারিয়ান অপারেশন করছেন কর্মকর্তা নিজেই।
জানা যায়, ২০০৬ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নতি হয়েছে হাসপাতালটি। হয়েছে আধুনিক নতুন ভবন। তবে জনবল একই রয়ে গেছে। ৩১ শয্যার জনবল দিয়ে ৫০ শয্যা হাসপাতাল চালাতে হচ্ছে। তবু পাল্টে গেছে আগের চেয়ে অনেক বেশি সেবার মান। গত এক বছরে হাসপাতালের প্রতিটি ক্ষেত্রেই এসেছে আমুল পরিবর্তন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বাহারুল আলম অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে নানা সংকট মোকাবিলার মাধ্যমে রায়পুরে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে আসছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ, আন্তঃবিভাগ এবং বহির্বিভাগের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্যবর্ধন কার্যক্রম এবং সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বিক কার্যক্রম তদারকির করায় সুন্দর সফলতা বলে আখ্যা দিচ্ছে স্থানীয়রা।
গত দু’দিন সরেজমিনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে প্রতিদিন প্রায় কমবেশি ৪৫০ থেকে ৫০০ জন রোগী সেবা নিতে আসে। প্রতিদিন জরুরি বিভাগে প্রায় ৭০ থেকে ১০০ জন রোগী সেবা নিচ্ছে। প্রতিমাসে কমবেশি ৫০ থেকে ৬০ জন গর্ভবতী মায়ের নরমাল ডেলিভারি করা হয়। দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর মাতৃস্বাস্থ্য কার্যক্রমের আওয়ায় সিজারিয়ান অপারেশন করেন ডা. বাহারুল আলম নিজেই।
রোগীদের কোনো প্রকার হয়রানি শিকার হতে হয় না। চিকিৎসরা রোগীদের সামনা-সামনি নিয়ে বেশ গুরুত্বের সহিত সেবা দিচ্ছে। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় সেবার মান বৃদ্ধি পেয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে প্রতিদিন প্রায় কমবেশি ৩০০ থেকে ৩৫০ জন রোগী সেবা নিতে আসে।উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে প্রতিদিন প্রায় কমবেশি ৩০০ থেকে ৩৫০ জন রোগী সেবা নিতে আসে।
পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও স্থানীয় কমিশনার আইনুল কবির মনির বলেন, গত এক বছরে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দৃশ্যপট একেবারে পাল্টে দিয়েছেন বর্তমান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। তিনি এখানে যোগদানের পর থেকে হাসপাতালে রোগীদের খাবার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, ফুল-ফলাদির বাগান সৃজনের মাধ্যমে পরিবেশের উন্নয়নসহ নানামুখী সৃজনশীল কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তাছাড়া রাত অবধি এই কর্মকর্তাকে হাসপাতালে কর্মব্যস্ত সময় পার করতেও দেখা গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বাহারুল আলম বলেন, সেবা গ্রহণকারী ও সেবা প্রদানকারী সকলের সদিচ্ছা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই সেবার মান পরিবর্তন এসেছে। দীর্ঘ বছর বন্ধ থাকার পর নতুন এক্সরে মেশিন ও আল্ট্রাসনোগ্রাফিসহ সিজার অপারেশন চালু করা হয়েছে। আরো সুযোগ-সুবিধার জন্য বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের পরিচালকদের চিঠি দেয়া হয়েছে। আশা করছি, অচিরেই আরো উন্নত সেবা পাবে উপজেলার মানুষ। এই ধারা অব্যাহত রাখতে সকলের সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রয়োজন।